আগামীর রাজনৈতিক ইশতেহার

বাংলাদেশে পুরানা রাজনৈতিক সিস্টেম যেটা আছে সেটা আর চলবে না, চলতে থাকলে বাংলাদেশ আফ্রিকার অনুন্নত কোন এক দেশের মত হয়ে যাবে। এইটা কোন বিদেশী শক্তির দাবী না, কোন দলের মতাদর্শগত দাবীও না, এটা সময়ের দাবী। সময় বদলাইয়া গেছে ও যাইতেছে। তথ্য, প্রযুক্তি এবং জ্ঞানের যুগ এখন। আগামীর দুনিয়া চ্যালেঞ্জ নিয়া আসছে সব ফ্রন্টেই। এগুলার সাথে ফাইট করে, টিকে থাকতে ও আগাইয়া যাইতে প্রধান বাঁধা হইল ওই পুরানা সিস্টেম, যেটারে এক্সপ্লয়েট করছে জাতি বিভক্তির রাজনীতি করা ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ।

বর্তমান সব রাজনৈতিক দলরে এই ‘রিয়েলিটি মাইনে’ নিতে হবে। তাদের ইভলভ হইতে হবে। প্রধান ফাইট কালচারাল না। আর কেবল এক কেন্দ্রিক কালচারাল ফাইট বলেও কিছু হয় না। কালচার আসে জীবন যাপনের অনুষঙ্গ হিশেবে।

একসময় গরু দিয়া ধান মাড়া দেয়া কালচারের অংশ আছিল, এখন কালচারের অংশ হইতে যাইতেছে চ্যাট জিপিটি, এই বিশাল, বিপুল পরিবর্তনরে ইগ্নোর করবেন না।

রাজনৈতিক দলেরা যদি ইয়াং, বুদ্ধিমান মানুষদের দলে টানতে না পারেন, সৎ ও নীতিবান লোকদের নেতৃত্বে নিতে না পারেন, নিজেদের লোকদের সৎ, স্কিলড, কর্মঠ হিশেবে গড়ে তোলার চেষ্টা না করে টুল হিশেবে ইউজ করতে থাকেন, যেমন আওয়ামিলীগ বানাইছিল টোকাই লীগ তাদের ডার্টি কাজগুলা হ্যান্ডেল করার জন্য, তাহলে এটা নিজেদের লোকদের সাথেই চরম বেইমানী করা হয়। যেটা আওয়ামীলীগ করছে তার ইয়াং কর্মীদের সাথে, তাদের নিজেদের কর্মীগুলাই তাদের প্রথম ভিক্টিম।

উন্নতি মানুষের মধ্যে আশা জাগায়, সে বেটার কিছুর স্বপ্ন দেখে, উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়। নতুন সময়ের এই টেকনোলজিক্যাল পরিবর্তনগুলা বাংলায় ইয়াংদের মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষার তৈরি করছে। যত সময় যাবে এটা বাড়বে। তারা বুঝতে পারবে ও বিশ্বাস করতে পারবে তাদের পক্ষে অনেক কিছু এচিভ করা সম্ভব। তখন তারা এইসব অপরচুনিটি চাইবে। সেই অপরচুনিটি যদি তাদের দিতে না পারেন, তাহলে যে কোন দল ও শক্তির বিরুদ্ধে এরা দাঁড়িয়ে যাবে।

যেটা এইবার হইছে। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসছিল একটা গ্লোবাল চেইঞ্জের সময়ে। ওই সময়ে নতুন কিছু টেকনোলজি আসলো, সোশ্যাল, একনোমিক চেইঞ্জ আসলো। আওয়ামীলীগের মন্ত্রীরা বলতো না যে, এই ফোন কে দিয়েছে, ইন্টারনেট কে দিয়েছে ইত্যাদি? এই গ্লোবাল টেকনোলজিক্যাল পরিবর্তনের স্রোতের পিঠে তারা চড়তে পারছিল। কিন্তু পুরান সিস্টেম বদলাইতে পারে নাই, পুরান ধ্যান ধারণা চেইঞ্জ করতে পারে নাই, ছিল অযোগ্য ও উদ্দেশ্যের দিক থেকে ছিল অসৎ। সোহেল তাজ সাহেব বললেন, হাসিনা বলছিলেন তার মন্ত্রীদের দুই হাতে টাকা বানাইতে বলছিলেন। তারা দুই হাত, এবং আরো কিছু আর্টিফিশিয়াল হাত বানাইয়া টাকা বানাইছে। এইদিকে, মানুষের আশা অনেক বেড়ে গেছে, কারণ স্মার্ট ফোন ইউজ করতেছে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্লোবাল স্রোতে কানেক্টেড হইয়া গেছে, দেশ বিদেশের নানা কিছু দেখতেছে, তথ্য পাইতেছে। যেই প্রমিজ করছিল সোশ্যাল টেকনোলজিক্যাল চেইঞ্জ, ওই প্রমিজ অনুসারে মানুষের লাইফে পজেটিভ চেইঞ্জ আসলো না। কারণ সরকারের লোকজন টাকা মাইরা গেছে, হাসিনা ভোট চুরি করতে থাকতে গিয়া প্রশাসনসহ নানা “কী” পিপলদের খুশি করছে। মধ্যস্বত্বভোগী রেন্ট সিকারদের বাম্পার ফলন হইছে, তারা নিজেরা কোন ভ্যালু এড না করে, মানুষের টাকা মাইরা নিয়া গেছে সিস্টেম থেকে। ফলে আশাভঙ্গের ক্ষোভের কারণেই মানুষ একসময় অভ্যুত্থানের দিকে গেছে, ছাত্র আন্দোলনে হিংস্র মানুষ হত্যা চালানোর ফলে ওইটা টিপিং পয়েন্টে যায়। এইরকমই হয়, এটা আমার বানানো কথা না, সমাজবিজ্ঞানী জেমস সি ডেভিসের কথা। একই জিনিশ ফ্রেঞ্চ রেভলুশনেও হইছিল। রাশান রেভলুশনে হইছে, আরব স্প্রিং এ হইছে।

বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি জামাতের উচিৎ এই বিষয়টারে আমলে নেয়া, এবং স্মার্টলি তাদের কর্ম পরিকল্পণা সাজানো। বাংলাদেশরে ওই জায়গায় নিয়া যাইতে হবে যেই জায়গায় সে তার সর্বোচ্চ পটেনশিয়ালরে এক্সপ্লোর করতে পারবে। প্রাচীনকাল থেকে, আধুনিক ব্রিটিশ শাসনে নব জাতীয়তাবাদের উত্থান, কোন কালেই বাংলার সাধারণ লোকজনের ভাগ্যের তেমন কোন পরিবর্তন হয় নাই। শাসকেরা নিজের স্বার্থ দেখছে, আশরাফ মুসলমান, উচ্চ শ্রেণীর স্থানীয় আশরাফ, এবং উচ্চ শ্রেণীর হিন্দু, পরবর্তীতে ব্রিটিশদের বানানো ভদ্রলোক ক্লাস, এই শ্রেণীগুলার রাজনৈতিক স্বার্থ, নিজেদের শ্রেণী দ্বন্দ্ব, ইগো সর্বস্ব মতাদর্শিক ফাইটের বলি বাংলার সাধারণ লোকজন। এই সাধারণ লোকজন এখন আর একশো বছর আগের সমাজে নাই, ওই ইনফরমেশন এসিমেট্রি নাই।

তারেক জিয়া, ইলেকশন তো হবেই, কিন্তু ইয়াংদের জন্য কীভাবে অপরচুনিটি তৈরি করবেন, কীভাবে দেশ বিদেশে তাদের স্কিলফুল কাজের সুযোগ করে দিবেন, কীভাবে ট্রান্সপারেন্সি নিশ্চিত করবেন, কীভাবে মধ্যস্বত্ত্বভোগী রেন্ট সিকারদের করাপশন করার পথ বন্ধ করবেন, কীভাবে চাটার দল তথা চাটুকারদের বাড়তে দিবেন না এগুলা বলেন। ইয়াংদের আশা দেখান, দলে যোগ দিতে বলেন, যোগ্যদের কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি করে দেন। প্র্যাক্টিক্যাল আলাপে আসেন। এম্বিশাস প্র্যাগমেটিজম হইল বাংলার নতুন পথ।

সোনার বাংলার ভাওতা একটা ধান্দাবাজি। জিন্দেগীতে কখনো সোনার বাংলা ছিল না, যখন সো কোল্ড প্রাচূর্য ছিল, তখনো সাধারণ মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন হয় নাই। টাকায় আট মণ চালের রোমান্টিক গল্প বলা হয়, কিন্তু ওই সময় যে খুব কম লোকের কাছেই এক টাকা থাকত, ফসল ভালো হইলে দুইবেলা খাইতে পারত, না হইলে আম পাবলিক উপোষ করতো এটা বলা হয় না। ইতিহাসের সবচাইতে ভালো অবস্থায় আছে সাধারণ মানুষ এখন, অর্থাৎ আধুনিক এই কালে, কারণ সাধারণ লোকদের পাওয়ার বাড়তেছে, তাদের বোকা বানাইয়া রাখা যাইতেছে না, এবং সোনার বাংলার অতীত নয়, বাংলার সমৃদ্ধি আছে ভবিষ্যতে। যেইটা সাধারণ মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটাবে।