বাংলা ব্লগ বা ইন্টারনেট লেখালেখিরে অন্য স্তরে নিয়া যাওয়ার সময় আইছে এখন। আগে যেসব কম্যুনিটি বেইজড লেখালেখি হইছে তার কেন্দ্রে ছিল সামু। সামু বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের দিকে গেছে। এখন তাতে নানাবিদ বিজ্ঞাপন শোভা পায়।
এতে সামুর শত শত বা হাজার হাজার যে ব্লগার আছেন তারা কোন টাকা পান না। অর্থাৎ রেভিন্যু শেয়ারিং নাই ওইখানে। অর্থাৎ তারা এমনিতেই লেইখা যান।
ব্লগ বা ইন্টারনেট লেখালেখির প্রথম পর্যায় হিশাবে একে দেখা যাক।
দ্বিতীয় পর্যায় হিসেবে আমি কল্পণা করতেছি ইন্টারনেটে লেখকেরা লেখবেন এবং সেই লেখার মাধ্যমে পয়সা উপার্জন করতে পারবেন। পয়সা বলতে টাকা বুঝাইতেছি। ধনী হবার জন্য যার কোন বিকল্প নাই।
বৈদেশে যারা লেখালেখি কইরা টাকা কামান এরা তাদের সাইটে যেসব পদ্বতি প্রয়োগ করেন সেগুলা হইতেছে প্রধানতঃ
১। গুগলের বিজ্ঞাপন, যার নাম গুগল এডসেন্স
২। সাইটে সরাসরি বিজ্ঞাপনের জায়গা বিক্রি
৩। এফিলিয়েট মার্কেটিং
৪। স্পনসরড পোস্ট
৫। ই বুক বিক্রি বা বিভিন্ন কোর্স বিক্রি
বাংলা সাইটের ক্ষেত্রে খালি সরাসরি বিজ্ঞাপন বিক্রিই হইতে দেখা যায়। বাংলা সাইটে গুগলের বিজ্ঞাপন দেখানো যায় না। গুগল এডসেন্স বাংলা সাপোর্ট করে না। অবশ্য কোড সামান্য বদলাইয়া আপনে বাংলা সাইটে গুগলের বিজ্ঞাপন কোড রাখতে পারেন কিন্তু তা গুগল এডসেন্সের নীতিমালা পরিপন্থী। বাংলা এইরকম কন্টেক্সটুয়াল বিজ্ঞাপন সাইট আছে কিন্তু তারা বিশেষ ভালো না।
এফিলিয়েট মার্কেটিং উঠে নাই কারণ আমাদের এখানে অনলাইন বেচাবিক্রি অত জমে নাই এখনো।
বাংলা সংবাদপত্র বা খবরের সাইটেরা সরাসরি বিজ্ঞাপন বিক্রির মাধ্যমে অনলাইন ভার্শনে টেকাটুকা আয় করে মূলত। আবার অনেকে গুগলের বিজ্ঞাপনও প্রদর্শন করে। এটা হতে পারে গুগলের কোড এডিট করে অথবা তারা এডসেন্সের বিশেষ সদস্য।
বড় কর্পোরেট পত্রিকাগুলার জন্য কর্পোরেট বিজ্ঞাপন পাওয়া ইজি। ফলে তাদের সাইট এডময় থাকে। ছোট, বড় এবং মাঝারি পত্রিকাগুলো সরাসরি বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দিকে হাটে।
এই সরাসরি বিজ্ঞাপন পাইতে হলে আপনার বিজ্ঞাপন দাতাকে আশ্বস্ত করতে হবে আপনার সাইটে ট্রাফিক বেশি। এইজন্য গুগল এনালিটিকসের ডেটাও দেখাইতে হতে পারে।
এর জন্য এইসব সাইটের টার্গেট থাকে ট্রাফিক বাড়ানো।
এইসব সাইটে যৌন সুড়সুড়িওয়ালা লেখা দেখতে পাওয়া যায়। যার মূল উদ্দেশ্য ট্রাফিক পাওয়া এবং তা বিজ্ঞাপন আনতে তারে সাহায্য করবে।
সব ধরনের সাইটই ট্রাফিক পায় মূলত দুই ধরনের।
এক – সার্চ ইঞ্জিন থেকে ট্রাফিক, যাকে আদর করে আমরা বলি অর্গানিক ট্রাফিক।
দুই – সোশ্যাল মিডিয়া ট্রাফিক অথবা রেফারেল ট্রাফিক।
আমাদের এখানে মূল টার্গেট থাকে সোশ্যাল মিডিয়া তথা ফেসবুক ট্রাফিক। ফলে ফেসবুকে জনতারে আকৃষ্ট করতে নিম্ন উপস্থাপিত ছবির মতই কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
অর্গানিক ট্রাফিক অর্থাৎ বাংলায় সার্চ দিয়া তুলনামূলক কম লোকই আসেন সাইটে। কিন্তু সেই অর্গানিক সার্চের বড় অংশ জুড়েই থাকে যৌনতার লগে যুক্ত শব্দাবলি (এটা বেশিদিন থাকবে না মনে হয়।)। ফলে বাংলা নিউজ সাইটের দুই ধরনের ট্রাফিকের বড় অংশই পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়। বাংলা সাইটগুলির এইভাবে পাওয়া ট্রাফিকের নাম দেয়া যাক যৌন ট্রাফিক।
এই অবস্থা চলতে আছে। একে পরিবর্তন করতে হলে, সরাসরি বিজ্ঞাপন এর বাইরেও অন্য পন্থায় সাইটগুলারে পয়সা অর্জনের দিকে ধাবিত হইতে হবে।
যারা লেখক আছেন, ইন্টারনেটে লেখেন এরা নিজস্ব সাইট বানাইয়া লেখতে পারেন। সেই সাইটে কিছু কন্টেন্ট রাখতে পারেন যেগুলা টাকা দিয়া দেখতে হয়। মেম্বারশীপের ব্যবস্থা রাখতে পারেন বাৎসরিক বেসিসে। ইবুক বানাইয়া বিক্রি করতে পারেন। এগুলা সবারই পেমেন্টের মাধ্যম হতে পারে বিক্যাশ।
এতে লাভ হবে এই যে, লেখকেরা পর্যাপ্ত সময় দিয়া একটা লেখা তৈরী করার অনুপ্রেরণা পাইলেন। বিভিন্ন বিষয়ে অনেক ভালো ভালো লেখা তৈরী হবে। তখন লেখকরে বা কোন সাইটরে হাজার হাজার ট্রাফিক আনার জন্য লেখতে হবে না, কয়েকশো পাঠক হইলেই হয় আপনার।
কর্পোরেট সাইটদের বিপরীতে শক্তিশালী ছোট ছোট এক লেখক বা কয়েক লেখক ভিত্তিক সাইটের উত্থান হবে।
বিষয়ভিত্তিক সাইটের উত্থান হবে। তখন মাঝারি এবং ছোট সাইজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরা এতে বিজ্ঞাপন দিয়ে তাদের টার্গেট কাস্টমারের কাছে ইজিলি পৌছাইতে পারবেন।
এক্ষেত্রে এমনও রাইটিং নেটওয়ার্ক আসতে পারে যারা পেইড কন্টেন্ট রাখবে এবং রেভিন্যু শেয়ারের মাধ্যমে রাইটারদের টাকা দিবে।
ভবিষ্যতের কথা বললাম। এই ভবিষ্যতের শুরু এখন থেকে করতে পারেন।