রবার্ট কিওসাকির মতে রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড বইটি হচ্ছে সাধারণকে “অর্থনৈতিকভাবে শিক্ষিত” করে তোলার জন্য। প্রথমে লেখক নিজেই প্রকাশ করেছিলেন বইটি ১৯৯৭ সালে। এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে প্রায় ২৬ মিলিয়ন কপি। এই বইয়ে কিওসাকি ব্যবসা, ইনভেস্টিং, এসেট লায়াবিলিটি ইত্যাদি বিষয়ে তার মত উপস্থাপন করেছেন যাতে এগুলির মাধ্যমে লোকেরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন অর্থাৎ সহজ ভাষায় ধনী হতে পারেন। সরাসরি বলতে গেলে এটি একটি “কীভাবে ধনী হওয়া যায়” টাইপের বই। এইরকম অধিকাংশ বইয়ের মত এই বইটিও ফালতু এমন মনে হতে পারে কোন কোন অর্থনীতি গবেষকের। তা মনে হতেই পারে। কিন্তু এর থেকে ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন যারা, ব্যবসা বিষয়ে শিক্ষিত হচ্ছেন যারা; তারা অনেক কিছু জানতে পারেন। এবং ভিন্ন ধরনের চিন্তার নানা উপকরণ পেতে পারেন।
বইয়ের আলোচনায় প্রথমেই দেখা যাক “অর্থনৈতিকভাবে শিক্ষিত” হওয়া কেন দরকার ?
এর ব্যাখ্যায় কিওসাকি বললেন একজন এথলেটের কথা যে খুব কম বয়েসে দারুণ সাফল্য পেয়ে প্রভূত অর্থের মালিক বনে যায়। তার কিছু বছর পর পত্রিকায় নিউজ হয় সেই এথলেট ২৯ বছর বয়সে গাড়ি পরিষ্কার করে জীবিকা নির্বাহ করছে কারণ সে তার চ্যাম্পিয়নশীপ রিং বিক্রি করতে চায় না। লেখকের কথা হল, এরকম আরো অনেক অনেক গল্প আছে, যেগুলিতে দেখা যায় লটারীতে অনেক টাকা পেয়ে গেছে কেউ। রাতারাতি ধনী হয়ে যায়। আবার শীঘ্রই হয়ে যায় গরীব। এটাকে লেখক বলেছেন, অর্থনৈতিক শিক্ষার অভাব। তার রীচ ড্যাডের ভাষ্য মতে- ইফ ইউ ওয়ান্ট টু বি রীচ, ইউ হ্যাভ টু বি ফাইনান্সিয়ালি লিটারেট। আপনাকে ধনী হতে হলে অর্থনৈতিকভাবে শিক্ষিত হতে হবে।
কেন অর্থনৈতিক শিক্ষার দরকার এ সম্পর্কে রিচ ড্যাড পুওর ড্যাডে কিওসাকি বলেন, ১৯২৩ সালে পৃথিবীর ক্ষমতাবান এবং ধনী কয়েকজন ব্যক্তি শিকাগোর এজওয়াটার বীচ হোটেলে একটি মিটিং এ মিলিত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন চার্লস শোয়াব – সবচেতে বড় ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টীল কোম্পানির প্রধান, স্যামুয়েল ইন্সটিল, প্রেসিডেন্ট অব লার্জেস্ট ইউটিলিটি, হাওয়ার্ড হপসন, হেড অব লার্জেস্ট গ্যাস কোম্পানি, ইভার ক্রোগার, প্রেসিডেন্ট অব ওয়ান অব দ্য লার্জেস্ট ম্যাচ কোম্পানি, লিয়ন ফ্রেজার, প্রেসিডেন্ট অব ব্যাংক অব ইন্টারন্যাশনাল সেটলম্যান্ট, রিচার্ড হুইটনি, প্রেসিডেন্ট অব নিউইয়র্ক স্টক এক্সেঞ্জ, কটন এবং জেসি লিভমোর, বড় দুই স্টক স্পেকুলেটর, এবং আলবার্ট ফল, প্রেসিডেন্ট হার্ডিং এর ক্যাবিনেট মেম্বার।
এর পঁচিশ বছর পর শোয়াব পাঁচ বছর ঋণের উপর বেঁচে থেকে কপর্দকহীন হয়ে মারা যান, ইন্সটিল বিদেশের মাটিতে মারা যান সর্বশান্ত হয়ে, ক্রোগার ও কটনের হয় একই পরিণতি, হপসন পাগল হয়ে যান, হুইটনি ও আলবার্ট ফল জেল থেকে ছাড়া পান, ফ্রেজার ও লিভমোর আত্মহত্যা করেন।
আমার মনে হয় এই ভদ্রলোকদের ক্ষেত্রে কী ঘটেছিল তা কেউ বলতে পারবেন না। তারিখটার দিকে যদি দেখেন, এটা ছিল ১৯২৩ অর্থাৎ ১৯২৯ এর মার্কেট ক্র্যাশ এবং গ্রেট ডিপ্রেশনের কিছুকাল আগে। আমার মনে হয় এই মার্কেট ক্র্যাশ তাদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। কিন্তু এখানে আমার পয়েন্ট হচ্ছে, বর্তমান সময়ে জীবন এই ভদ্রলোকদের সময়কাল থেকে বহুগুণে বেশি গতিশীল। ধারণা করি, আগামী ২৫ বছরের মধ্যে বাজারের আরো বেশি উত্থান পতন হবে। আমার জানা আছে, অধিকাংশ মানুষই তাদের প্রধান সম্পদ শিক্ষার চাইতে টাকার দিকে বেশি লক্ষ দেন। কিন্তু তারা যদি মনে করেন টাকাতেই সব সমস্যার সমাধান সম্ভব তাহলে আশংকা করি, তাদের মারাত্মক সময়ের মধ্যে পড়তে হবে। অর্থনৈতিক বুদ্ধিমত্তা ছাড়া টাকা হল ‘অচিরেই হাত থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে’ এমন কিছু।
আরেক জায়গায় কিওসাকির বক্তব্য, জীবন সবচাইতে বড় শিক্ষক। বেশিরভাগ সময় সে আপনার সাথে সরাসরি কথা বলবে না। কিন্তু আপনাকে বিভিন্ন দিক থেকে ধাক্কা দিবে। এই একেকটা ধাক্কাই হল তার একেকটা কথা, “জাগো বৎস, আমি তোমারে কিছু শিখাতে চাই”
আপনি জীবন হতে শিক্ষা গ্রহণ করলে ভাল করবেন। শিক্ষা গ্রহণ না করলে সে আপনাকে ধাক্কাতেই থাকবে। লোকেরা দুইরকম কাজ করে। কেউ জীবনকে ধাক্কাতে দেয়। আর কেউ কেউ রেগে যায়। উলটা ধাক্কানো শুরু করে। সেই ধাক্কা হয় তার চাকরি, জামাই বা বউ, বস ইত্যাদির বিরুদ্ধে। তারা বুঝতে পারে না, এটা জীবন যে তাকে ধাক্কা দিচ্ছে।
আমাদের সবাইকে জীবন ধাক্কায়। কেউ আশা ছেড়ে দেয়, কেউ যুদ্ধ লাগায়। শুধু সামান্য কিছু লোক এই ধাক্কা থেকে শিক্ষা নিয়া সামনে এগিয়ে যায়। তারা জীবনের ধাক্কাকে স্বাগত জানায়।
বইয়ের রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড অর্থাৎ ধনী পিতা গরীব পিতা কেন? তা বুঝতে হলে বইয়ের শুরুর দিকটা পড়তে হবে। সে অংশ তুলে ধরছি এখানে বাংলা ভাষান্তরে,
আমার পিতা ছিলেন দুজন। একজন ধনী আর একজন গরীব। একজন উচ্চশিক্ষিত, বুদ্ধিমান। তার পিএইচডি ডিগ্রী ছিল। তিনি তার চার বছরের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শেষ করেছিলেন মাত্র দুই বছরে। তিনি পড়েছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে। তাদের সবগুলি পূর্ন স্কলারশীপ পেয়ে। আর আমার দ্বিতীয় পিতা তার এইটথ গ্রেডও শেষ করেন নি।
উভয়েই ছিলেন তাদের কেরিয়ারে সফল। সারাজীবন ধরে কাজ করেছেন। দুজনেই যথেষ্ট উপার্জন করেছিলেন। কিন্তু একজন সারাজীবন অর্থনৈতিকভাবে স্ট্রাগল করেছেন। আরেকজন হয়েছেন হাওয়াইয়ের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। একজন মারা গেছেন তার পরিবার, চার্চ ও চ্যারিটির জন্য দশ মিলিয়ন ডলার রেখে। আরেকজন মারা গেছেন কিছু বকেয়া বিল রেখে।
এভাবে শুরু হওয়ার পর ভিন্ন দুই পিতার টাকা এবং জীবন সম্পর্কে ভিন্ন ধরনের উপদেশ বা দৃষ্টভঙ্গীর ব্যাপারে লিখেছেন লেখক।
যেমন একজন বলেন, “ঠিকমতো পড়াশোনা করো, তাতে ভালো কোম্পানিতে চাকরী করতে পারবে।”
আরেকজন বলেন, “ঠিকমতো পড়াশোনা করো, তাহলে ভালো কোম্পানি কিনতে পারবে।”
একজন বলেন, “আমাদের বাড়িটাই হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ।”
আরেকজন বলেন, “আমার বাড়ি হচ্ছে লায়াবিলিটি। বাড়ি যদি তোমার সবচেয়ে বড় ইনভেস্টমেন্ট হয় তাহলে তুমি গুরুতর সমস্যায় আছো।”
এই প্রায় পরস্পর বিপরীতধর্মী উপদেশের মধ্যে কোনটা গ্রহণ করতে হবে তা নিয়ে দ্বিধান্বিত ছিলেন লেখক, তখন তার বয়স নয়। তার ইউনিভার্সিটির শিক্ষক পিতা তখন ভালো চাকরী করেন। আর অন্য পিতা নতুন নতুন ছোটখাট ব্যবসা করে যাচ্ছেন।
শেষ পর্যন্ত তিনি তার উচ্চশিক্ষিত পিতার উপদেশ বর্জন করে এইটথ গ্রেড শেষ করতে না পারা পিতার উপদেশাবলী গ্রহণ শুরু করেন। সেই পিতা তাকে শিক্ষা দেন ত্রিশ বছর। সেই পিতাই পরবর্তীতে হয়ে যান হাওয়াইয়ের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। এই পিতার শিক্ষাই ছয়টি লেসনে ভাগ করে দেয়া আছে, রীচ ড্যাড, পুওর ড্যাড বইয়ে। এছাড়া আছে আরো কিছু কথাবার্তা।
রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড বা রবার্ট কিওসাকির প্রধান আইডিয়াগুলিকে এভাবে বর্ননা করা যায়ঃ
১। অভিজ্ঞতা জরুরী। অভিজ্ঞতাই আপনাকে আরো বেশী স্মার্ট করে তোলে ব্যবসার ক্ষেত্রে।
২। আপনাকে লসের ভয়ে থাকলে চলবে না। কিওসাকি বলেন আমি এত টাকা করতে পেরেছি কারণ আমি অনেক লস করেছি। যত বেশী আপনি লস করবেন, তত বেশী আপনি আয় করতে পারবেন। স্কুলে ভুল করলে মার্ক কাটা যায়, এমনকী শাস্তিও দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তব জীবন এমন নয় বলে মনে করেন কিওসাকি। তার মত হলো তার পুওর ড্যাড যিনি অধ্যাপক ছিলেন তিনি ধনী হতে পারেন নি কারণ তার দৃষ্টিভঙ্গী ছিল স্কুলের মত। বেশীরভাগ মানুষই লস ভয় পায়। কিন্তু সফলতার পথ মসৃণ নয়। শিশু যেমন হোঁচট খেতে খেতে হাঁটতে শিখে, বাস্তবে মানুষ এভাবেই সফল হয়। তাই লস এবং ব্যর্থতাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
৩। কিওসাকি বলেন যখন তার টাকা ছিল না তখন বিলের জন্য যখন পাওনাদারের ফোন আসত তখন তিনি সেটাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিতেন যে বাইরে যেতে হবে এবং প্রচুর টাকা বানাতে হবে। তিনি মুষড়ে যান নি। মাইন্ডসেট তাই গুরুত্বপূর্ন। প্রাচীন গ্রীসের স্টোয়িক দর্শন একই রকম কথা বলে। স্টোয়িক দর্শনের একটি প্রধান বিষয় হলো, কোন ব্যাপার নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গীই ঐ বিষয় নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া তৈরী করে। তাই দৃষ্টিভঙ্গী গুরুত্বপূর্ন।
৪। ফোকাস ঠিক রাখতে হবে। যে জিনিস আপনি করছেন সফলতা না পাওয়া পর্যন্ত ওটাই করে যান। এতে ঐ ব্যবসা সম্পর্কে আপনার দক্ষতা বাড়বে। সফলতা পাওয়া সহজ হবে। অন্যথায় আপনি নানাবিদ ব্যবসায় জড়াবেন, সেক্ষেত্রে কোন এক বিষয়ে আপনার এক্সপার্ট হবার সুযোগ নষ্ট হয়।
৫। কঠিন সময় নতুন নতুন সুযোগ নিয়ে আসে। কঠিন সময়ে হতাশ না হয়ে সেই সুযোগগুলি দেখতে চোখ কান খোলা রাখুন আর তৈরী থাকুন।
৬। ব্যবসা ডিজাইন করুন ভালোভাবে
ব্যবসার ক্ষেত্রে পরিকল্পনার গুরুত্বের কথা আছে সান জু’র আর্ট অব ওয়ারে। কিওসাকিও একইভাবে ব্যবসার জন্য ভালো ডিজাইনের পরামর্শ দেন। তিনি বিআই ইনডেক্সের কথা বলেন।
এই ইনডেক্সে প্রোডাক্ট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন নয়। আপনাকে সবচেয়ে সেরা প্রোডাক্ট বানাতে হবে না। কিওসাকির রিচ ড্যাডের কথা হলো, একটি ব্যবসা মূল্যায়নের সময় প্রোডাক্ট হচ্ছে সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ন।
এর মানে এই না প্রোডাক্ট একেবারে খারাপ হবে। খারাপ হবে না অবশ্যই। কিন্তু পুরো বিজনেস কাঠামোতে তার চাইতে গুরুত্বপূর্ন আরো কিছু জিনিস আছে। নিচের ছবিতে আছে সেই জিনসগুলির একটা পিরামিড চিত্রঃ
এই পিরামিডের ভেতরের যেকোন একটা জিনিস যদি দূর্বল হয়, এবং ম্যানেজমেন্ট যদি তাকে শক্ত করতে পারদর্শী না হয়; তাহলে সে ব্যবসায় ইনভেস্ট না করতে পরামর্শ দেন কিওসাকি।
এই পিরামিডের আটটি জিনিসের (প্রোডাক্ট, আইনগত অবস্থান, সিস্টেম, যোগাযোগ, ক্যাশ ফ্লো বা অর্থ যোগান, টিম, নেতৃত্ব, লক্ষ্য বা মিশন) কোন একটি যদি না থাকে তাহলে সে বিজনেস উঠতে পারবে না বলেই কিওসাকির মন্তব্য।
৭। জানুন কীসের জন্য পরিশ্রম করছেন
কিওসাকি বলেন তিন ধরনের উপার্জন আছে। এক হচ্ছে কাজ করা এবং বেতন পাওয়া। এতে ট্যাক্সের পরিমাণ বেশী (আমেরিকার ক্ষেত্রে তা ৫০%।) কিওসাকির মতে এটা সবচেয়ে খারাপ ইনকাম।
দ্বিতীয় হচ্ছে, পোর্টফোলিও ইনকাম বা স্টকে ইনভেস্ট করা। কোন স্টক কিনলেন ৫০০ টাকায়, বিক্রি করলেন ৬০০ টাকায়। কোন বাড়ি বিক্রি করলেন কম দামে, বিক্রি করলেন বেশী দামে। এতে ট্যাক্সের পরিমান কম। (আমেরিকার ক্ষেত্রে ২০%)। এজন্য ওয়ারেন বাফেট বলেন তার চাইতে বেশী ট্যাক্স দেয় তার সেক্রেটারী।
তৃতীয় ইনকাম হচ্ছে প্যাসিভ ইনকাম। এই ধরনের ইনকাম বার বার আসতে থাকে। মাসে মাসে বা নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে। কিওসাকি বলেন এটা হচ্ছে সেরা ইনকাম। তিনি এটার পিছনেই পরিশ্রম করেছেন। তাই তিনি এত টাকা করতে পেরেছেন বলে তার মত। তার মতে আপনি যদি এই ইনকামের কাজ ঠিকমত করতে পারেন তাহলে আইনগত ভাবেই আপনাকে কোন ট্যাক্স দিতে হবে না। (আমেরিকার প্রেক্ষাপটে।)
৮। এসেট বাড়ান, লায়াবিলিটি নয়
কিওসাকি বলেন, আপনার ব্যবসার এসেট বাড়ান। লায়াবিলিটি বাড়াবেন না। ব্যবসা এমনভাবে ডিজাইন করুন যাতে তার মনযোগ থাকে এসেট বাড়ানোর দিকে।
মধ্যবিত্তের কাছে কিছু জিনিস এসেট মনে হয়, যেমন বসবাসের জন্য বাড়িটি বা সৌখিন মোবাইল ফোন। কিন্তু এটা কি মানি জেনারেট করতে পারে? না। এটা উলটো নষ্ট হয়, ঠিক করাতে হয়। এটি এসেট নয়, লায়াবিলিটি।
আপনি ধনী হবেন যদি আপনি আপনার এসেট বাড়াতে থাকেন। যেমন, ব্যবসায় ইনভেস্ট করলেন বা এমন কিছু শুরু করলেন যাতে আপনার টাকাগুলি বাড়ে।
টাকা জমানোর বিপক্ষেও কিওসাকি। তার মতে ১৯৭১ সালে রিচার্ড নিক্সনের কালে ডলার কারেন্সিতে চলে গেছে। অর্থাৎ ডলার এখন ছাপা হচ্ছে অর্থাৎ ডলারের দাম কমছে। আবার দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে। ফলে সেইভিং বা ডলার জমানো ভালো চিন্তা নয়। তার মতে আপনি টাকা ইনভেস্ট করুন, ব্যবসায় খাটান বা এমন কিছু করুন এগুলি দিয়ে যাতে টাকাগুলি বাড়ে।
শেষ মন্তব্যঃ
কিওসাকির এই বই আমি প্রথম পড়ি ২০১৬ সালে। এর কিছু আইডিয়া আমার কাছে ভালো লেগেছে। এখানে কিওসাকির যেসব আইডিয়া তুলে ধরা হয়েছে সেগুলি তার বই, বক্তব্য থেকে নেয়া। এক্ষেত্রে ইভান কারমাইকেলের ভিডিও সাহায্য করেছে। কিওসাকির কোম্পানির নিজস্ব সাইট আছে রিচ ড্যাড ডট কম। সেখানে তিনি ব্যবসা, ইনভেস্টিং, অর্থনৈতিক শিক্ষা এসব নিয়ে তার শিক্ষা বা মত প্রচার করে থাকেন। কিওসাকি আবার আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ও ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্পের বন্ধু। ডোনাল্ড ট্রাম্প যে বই লিখেছিলেন দি আর্ট অব দ্য ডিল, তার পেছনে অনুপ্রেরণা ছিল কিওসাকির রিচ ড্যাড বই।