জীবনের উদ্দেশ্য একটা খেলায় জিতা না

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট জর্ডান পিটারসন একবার হকি খেলা দেখতে গিয়েছিলেন, তার ছেলের টিমের খেলা। ছেলের বয়স তখন ১২।

তার ছেলে ভালো খেলত কিন্তু দলে আরেকজন ছিল যে ছিল বেশি ভালো হকিতে। কিন্তু সে অন্যান্যদের সাহায্য করত না।

সেই ম্যাচে পিটারসনের ছেলের দল হারে। যদিও ওই ভালো খেলতে পারা ছেলেটি স্কোর করেছিল।

খেলা শেষে ছেলেটি হকি স্টিক দিয়ে ফিল্ডে আঘাত করতে করতে বলছিল যে রেফারিং কত বাজে হয়েছে, খেলা কত আনফেয়ার হয়েছে।

ছেলেটির বাবা এগিয়ে গেলেন। তিনি গিয়ে ছেলেটির সাথে যোগ দিলেন। বলতে থাকলেন খেলা কত আনফেয়ার হয়েছে।

পিটারসনের ভাষ্যে এর চাইতে খারাপ প্যারেন্টিং আর হয় না।

মানুষ তার ছেলেমেয়েদের ভালো করতে বলে, “তুমি জিতলে না হারলে সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হল তুমি কীভাবে খেললে।”

কিন্তু এই কথার অর্থ কি তা যেমন বাচ্চারাও বুঝে না, বাবা মাও বুঝেন না। কারণ জিতার জন্যই তো খেলে তারা।

জর্ডান পিটারসন অন্যভাবে বিষয়টাকে দেখতে বলেন, আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য একটা খেলায় জিতা না, বরং সম্ভাব্য সব খেলার সেট এ জিতা।

সম্ভাব্য সব খেলার সেটে জিততে হলে আপনাকে একটা খেলায় জিতলেই হবে না। এমনভাবে খেলতে হবে যাতে আপনি আরও বেশি বেশি খেলার সুযোগ পান, আমন্ত্রিত হন।

তাই যখন কেউ বলেন তার বাচ্চাকে, তুমি জিতলে না হারলে তা নয়, কীভাবে খেললে তা বড় কথা, এর অর্থ হল, এমনভাবে তুমি খেলবে যাতে জিতো, কিন্তু এমনভাবে জিতবে যেখানে তোমার দলের সদস্যরা তোমার সাথে আরো খেলতে চাইবে, তোমার বিরুদ্ধ দল তোমার সাথে আরও খেলতে চাইবে, আর এভাবেই তুমি আরো বেশি বেশি খেলায় আমন্ত্রিত হবে।

পিটারসনের এই চিন্তাটি জীবনের একটা সিক্রেট রুল দেখিয়ে দেয়।

মানুষের লাইফ কোন পার্টিকুলার গেইম হয় না, অনেক অনেক গেইমের সেট থাকে। একজনকে ব্যবসায় টাকা উপার্জন করলেই হয় না, তার ব্যক্তিগত হ্যাপিনেস থেকে শুরু করে আরো অনেক গেইম থাকে, টাকা উপার্জনের গেইমের সাথে। এবং বেশি গেইমে জিততে হলে সে কিভাবে খেলছে তা গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিতঃ

শিশুদের নৈতিক করে গড়ে তোলা বিষয়ে এডাম গ্র্যান্ট