সিলেটে আমার বারো বছর – রবার্ট লিন্ডসে

সিলেট  সম্ভবত কোন সমুদ্রের পাড়ে ছিল। ৬৪০ সালে কামরূপ ভ্রমণ করেন বিখ্যাত পর্যটক হিউয়েন সাঙ। তিনি শীলি চা তোল নামক এক জায়গায় এসেছিলেন জাহাজ যোগে। জেনারেল কানিংহাম এনসিয়েন্ট জিওগ্রাফি অব ইন্ডিয়া বইতে জায়গাটির নাম সিলেট বলেছেন।

সিলেটে ইংরাজ কোম্পানির রেসিডেন্ট বা হর্তাকর্তা হয়ে এসেছিলে রবার্ট লিন্ডসে। ১৭৭৮ সালে। সিলেটে তার বারো বছর থাকার কাহিনী তিনি লেইখা গেছেন। শ্রুতিলিখন হয়েছিল মূলত, তিনি বলেছেন আর তার মেয়েরা লিখেছে। এই বইটি অনুবাদ করছেন আব্দুল হামিদ মানিক ।

রবার্ট লিন্ডসে

আত্মজীবনী ইন্টারেস্টিং জিনিস। লিন্ডসের লেখা পড়তে পড়তে জানা যায় স্পেনের ষাড়ের লড়াই তার কাছে নিষ্ঠুর মনে হয়। ইংলিশ বক্সিং তার কাছে নিষ্ঠুর মনে হয়। আবার এই লিন্ডসেই শত শত হাতি ধরেছেন, গন্ডার মেরেছেন, হরিণ শিকার করেছেন; সিলেটে আসার পরে। ইংরাজ কোম্পানির রেসিডেন্ট হইয়া সিলেটে আসার জন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রতিযোগীতা থাকত। লিন্ডসে কিছু চালাকি কইরা, বড়কর্তাদের ম্যানেজ কইরা সিলেটে আসতে পারছিলেন কিছু সিনিয়ররে ডিঙ্গাইয়া।

সিলেটে আসার এই আগ্রহের পিছনে ছিল এইখানকার সম্পদের প্রতি লোভ। প্রাকৃতিক সম্পদ। লিন্ডসে আইসা কোম্পানির কাজ তো যা করার করলেনই, সাথে চুনের ব্যবসা, হাতি ধরার ব্যবসা ইত্যাদি নানা কিছু করছেন। তার যে একখানা উদ্যোক্তা মন ছিল তার প্রমান আছে তার জীবনকাহিনীতে।

রবার্ট লিন্ডসে কামাইছিলেনও প্রচুর। একখানা জমিদারী কিনছেন নিজের দেশে।

শাহজালাল (র) এর মাজারের পাওয়ার সেই সময়েও ছিল। ইংরাজ নয়া হর্তাকর্তা যিনি আইতেন তারে প্রথমে দরগা থেকে দোয়া নিয়া আইতে হইত। লিন্ডসে এটারে ব্যঙ্গাত্মক ভাবে লেখছেন পবিত্র হইয়া আসা।