এটা হলো আমার এই স্ট্যাটাসের বিস্তারিত রূপ।
এক
ইন্টারনেট প্রযুক্তি ভিত্তিক মিডিয়ার বিরুদ্ধে প্রিন্ট মিডিয়ার একটা আক্রোশ নিয়মিত দেখা যায়। আমি মনে করি এখানে যেহেতু কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের জায়গা আছে তাই এইসব কথাবার্তার অধিকাংশই ভুয়া। যেমন, মানুষের এটেনশন স্প্যান কমে যাচ্ছে, মানুষ পড়ছে না, ইত্যাদি। সব কিছুরই কিছু নেগেটিভ প্রভাব থাকে। কিন্তু যেভাবে প্রিন্টে বা টিভি মিডিয়ায় বা মূলধারার মিডিয়ায় ইন্টারনেট প্রযুক্তি বেইজড মিডিয়াকে খারাপভাবে উপস্থাপনের চল ছিল, এই নতুন মাধ্যম এতো খারাপ কখনোই ছিল না।
মিডিয়া বলতে কিছুদিন আগ পর্যন্ত, বা এখনো প্রিন্ট বা টিভি, তাই এটিকেই মূলধারার ধরে নিচ্ছি।
এই মূল মিডিয়ার ইন্টারনেট প্রযুক্তি বেইজড মাধ্যমের বিরুদ্ধে বলার দুইটি প্রধান কারণ ছিল মনে করি,
১। তাদের কনজিউমার বা পাঠক সংখ্যা কমে যাচ্ছে, এই ভয়।
২। এই মাধ্যম সম্পর্কে না বুঝা, এবং মনে করা যে তারা এর চরিত্র বুঝতে পারেন।
ইন্টারনেট-প্রযুক্তি বেইজড মাধ্যমে যেসব কন্টেন্ট সাইট ( আর্টিকেল বিশেষত, এবং অন্যান্য) হয়েছে এগুলি মূলত প্রিন্টের মডেলই ফলো করেছে। প্রিন্টের মডেলটা হলো,
কন্টেন্ট ফ্রি থাকবে।
বিজ্ঞাপন দাতাদের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে টাকা কামানো হবে।
এই মডেল অনুসরন করতে গিয়ে মেজর কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে।
বেশি ভিউ মানে বেশি বিজ্ঞাপন দাতাদের আকর্ষণ করা যাবে, এটাকে মেলানো হয়েছে প্রিন্টের অধিক সাবস্ক্রাইবারদের সাথে। সুতরাং, বেশি ভিউয়ের জন্য স্বস্তা ও মানহীন কন্টেন্ট তৈরি হয়েছে।
এটা চেইন রিয়েকশনের মতো। এবং এই মডেল ভয়াবহ রকমের খারাপ। কারণ, যেখানে ভুল পদ্বতিতেই আর্থিক প্রণোদনা আছে সেখানে এন্ড রেজাল্ট হিসেবে আপনি ফলাফল হিসেবে পাচ্ছেন অজস্র ফেইক নিউজ, ক্লিক বাইট কন্টেন্ট এবং এ সংশ্লিষ্ট নানা কিছু।
কিন্তু লজিক্যালি এটি সারভাইভ করতে পারে না।
কারণ ইভেন আপনি প্রিন্টে দেখেন, সেখানেও ক্লিকবাইটগুলাই কেবল সর্বাধিক জনপ্রিয় নয়। ভালো কন্টেন্টযুক্ত পাবলিশিংগুলাই বিখ্যাত এবং তাদের খ্যাতি, প্রভাব অনেক শক্ত।
মানুষ পড়ে না এই ধারণাটি ভুল। মানুষ পড়ে না মনে হয় কারণ স্যাম্পল সাইজ এখন অনেক বেশি।
একটা উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বঙ্কিমচন্দ্রের বই তখন কত কপি বিক্রি হতো, বা তখন ঐ বই পড়ার মত ক্ষমতা কত সংখ্যক বাঙালীর ছিল?
আর এখন কতো?
স্বাভাবিক ভাবেই শিক্ষার হার বাড়ার কারণে এখন অনেক সম্ভাব্য পাঠক বেড়েছে। সুতরাং, আগে হয়ত শিক্ষিতদের মধ্যে পড়ার হার বেশি ছিল, অর্থাৎ ১০০ জনের ৯০ জনই বা ১০০ জনই কিনেছে বা পড়েছে। এখন, শিক্ষিত হয়ে গেছে অনেকগুণ বেশি। পার্সেন্টেজ কমে ধরা যাক ৩০ পার্সেন্ট হয়েছে। ১০০ জনের ৩০ জন পড়ে, কিন্তু এই পার্সেন্টেও মোট পাঠক আগেকার চাইতে অনেক বেশি হবে।
একই লজিকে, ইন্টারনেটের কারণে পাঠক সংখ্যার সাইজ বেড়েছে।
মোট সাইজ ১০০০ হলে তার ৮০ ভাগ হলো ৮০০ জন।
মোট সাইজ ১০০০০০ হলে তার ২০ ভাগ হলো ২০০০০ জন।
যেকোন সময়েই ইন ডেপথ, গুড আর্টিকেল পড়ার মতো লোক থাকবে। অবশ্যই ক্লিক বাইট এবং বাজে কন্টেন্ট পড়ার মত লোকের সংখ্যা বেশি হবে। কিন্তু এটা কোন সমস্যা না। বরং ভালো দিক। কারণ এর দ্বারা তুলনা করার সুযোগ তৈরি হয়।
দুই
সাবস্ক্রিপশন বেইজড কন্টেন্ট বিজনেসে কেউ যেতে চাইলে তাকে বিজনেস হিসেবেই যেতে হবে। লোকের একটা ধারণা আছে লেখা হয়ত সহজ। আমি অনেক লোক দেখেছি যারা আসলেই মনে করে জাস্ট ব্যস্ততার কারণে লেখাটা ছাড়তে হয়েছে, কলেজের ম্যাগাজিনে কবিতা লিখেছিল, এবং ইচ্ছা করলেই সে লিখে অনেক কিছু করে ফেলতে পারতো।
এই রকম ধারণা নিয়ে কন্টেন্ট বেইজড বিজনেস ধার করানো যাবে না।
আপনি এই সেক্টরে ন্যাচারালি প্রতিভাবান হলে এটাতে আপনার ভালো করার সম্ভাবনা আছে।
এটা অবশ্যই হার্ড। আপনাকে ইউনিক কন্টেন্ট দিতে হবে, এবং এমন কন্টেন্ট দিতে হবে যা আর কেউ দেয় না, এবং যেগুলি মানুষের লাইফে ভ্যালু এড করে।
আমি একটা সিম্পল রুল ফলো করি আমার সাইটে।
এটা হলো, দুইটা পদ্বতি আছে কোন প্রবলেম সলভ করার।
এক, ইনফরমেশন দেয়া। ঐ প্রবলেম সলভ করে দেয়া বা দেবার মালমশলা দেয়ার ট্রাই করা। এটাকে বলা যায় ইনফরমেটিভ লেখালেখি।
দুই, মানুষের ভিউ বা চিন্তা বদলে দেয়া। তাকে ঐ প্রবলেম ও ঐ জাতীয় প্রবলেম কীভাবে ট্যাকল দিতে হয় তা শেখানোর পথে ধাবিত করা।
প্রবলেম সলভিং এর দ্বিতীয় পদ্বতি আমার পছন্দের। আমি দ্বিতীয়টাই করি এই সাইটে।
একইভাবে, আপনি কন্টেন্ট ভিত্তিক বিজনেস করতে হলে, যে নিশ বা টপিক ধরে কাজ করেন না কেন, কনজিউমারদের লাইফে ভ্যালু এড করার একটা জায়গা বের করতে হবে, এবং সেখানে সত্যিকার ভ্যালু এড করে যেতে হবে।
ইভেন, সবচাইতে প্রতিযোগিতামূলক নিশ, নিউজ কন্টেন্টও মূলত গার্বেজ হচ্ছে। ফলে এখানেও অনেক জায়গা আছে ইন- ডেপথ ও ভালো কন্টেন্টের।
এই একটা কথা রুল হিসেবে ধরা যায়, অনলাইনে লেখে আসলে খুবই অল্পসংখ্যক মানুষ। বাকিরা সেগুলিকেই উলটা পালটা করে বা হুবহু ব্যবহার করে। আর যারা অনলাইনে আসলেই লেখে তাদের মধ্যে খুবই অল্পেরই ইউনিক কিছু লেখার ক্ষমতা আছে।
তিন
আপনি যখন আপনার রাইটারদের দিনে দুই চাইরটা আর্টিকেল লিখতে বলবেন, তার কাছ থেকে ভালো লেখা আশা করা যায় না। কিন্তু যদি বলেন দুই সপ্তাহ নিয়ে একটা ৫ হাজার শব্দের আর্টিকেল লিখতে যেখানে অপ্রয়োজনীয় একটাও প্যারাও থাকবে না, সেটি খুব সম্ভব। কারণ তার কাছে তখন রিসার্চ করার অনেক সময় রয়েছে।
দি এথলেটিক স্পোর্ট জার্নালিজমে সাবস্ক্রিপশন মডেলে একটা সাকসেস স্টোরি। তাদের লক্ষ্য ছিল, সেরা কন্টেন্ট দিয়ে ঐ খেলার ডাই হার্ড ফ্যানকে টার্গেট করা।
কারণ, ডাই হার্ড ফ্যানই এসব কন্টেন্ট খুঁজে, এবং সে এর জন্য পে করতে প্রস্তুত।
চার
কী অন্যে দেয় না, ভাবেও না, তাই দিতে হবে। এটি সহজ নয়।
খেলার ক্ষেত্রে বলা যায়, সারা দেশে যে কতো খেলা হয় তার ইন ডেপথ ম্যাচ রিপোর্ট বা এনালাইসিস কী আমরা পাই?
জাতীয় লিগের নিউজগুলাও খেলার পাতায় সামান্যভাবে থাকে।
জাতীয় লীগ ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামে গঞ্জে লীগ হয়। দেশের বাইরে অঞ্চলভেদেও হয়। যেমন আমেরিকায় অনেক স্টেইটে আছে। যারা এসব ক্লাবের সাথে যুক্ত এরা ডাই হার্ড খেলার লাভার। তাদের লীগ, তাদের খেলার নিউজ কোনদিন মূলধারার মিডিয়ায় হয়ত যাবে না। আপনি তাদের নিয়ে ইন ডেপথ আর্টিকেল লিখলে তাদের কম্যুনিটি থেকেই তো সাপোর্ট পাবেন।
আর খেলার উন্নতির জন্য এর চাইতে ভালো জিনিস আর কী হতে পারে!
একটা বিজনেসকে শুধুমাত্র টাকা কেন্দ্রিক হলে হয় না। প্রথমত এর একটা মিনিংফুল অবস্থান থাকতে হয়, যেটাই আসলে তাকে সারভাইভ করতে ও বিস্তারিত হতে ফুয়েল জোগায়।
আমি একটা জিনিস ভাবি, আমাদের এলাকায় যে ক্রিকেট এসোসিয়েশন ছিল, প্রতি বছর ৭ থেকে ১০ টা টিম মিলে প্রতিযোগিতা হতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্টাইলে। একটা ক্রিকেট লীগ মানে জাস্ট খেলা আর প্রতিযোগিতা না। প্রতিটা ম্যাচ, এটার আগে পরে অনেক গল্প ও উত্তেজনা। এই সমগ্রতাকে কোন মিডিয়া তো পাত্তাই দেয় নি, তাদের যে ভ্যালু প্রিন্ট মিডিয়ার, সে অনুসারে দেবার কথাও ছিল না।
কিন্তু যদি এমন হতো, যে এইসব লীগও অনেক হাইলাইটেড হতো, তাহলে নিশ্চয়ই অনেক অনেক ভালো ক্রিকেটার আমরা পেতাম।
একটা জিনিস চিন্তা করেন, এমন একটা কন্টেন্ট মাধ্যম, যেখানে জগন্নাথপুর ক্রিকেট এসোসিয়েশনের লীগ নিয়ে ভালো ভালো কন্টেন্ট হচ্ছে, ঐ লীগের সাথে যুক্ত দলগুলির অন্তত ৪০ জন কি সাবস্ক্রাইব করবে না?
এরপর ভাবেন, ফুটবল ক্রিকেট মিলিয়ে এমন লীগ কয়টা আছে সারা দেশে? বিদেশের বাঙালী কম্যুনিটিতে?
পাঁচ
বিজনেস করতে হয় হিউম্যান মাইন্ড ও সাইকোলজির কোর জিনিস ধরে। এটা সিম্পল, কিন্তু এটা ধরে আগানোর জন্য সাহস দরকার হয়।
যেমন জেফ বেজোসের একটা কথা আছে, বেজোস যেখানে বলছেন সবাই বলে আগামীতে কী পরিবর্তন হবে। কিন্তু আমি ভাবি না আগামীতে কি বদলাবে না। যেমন মানুষ কম দামে জিনিস কিনতে চাইবে রিটেইল বিজনেসে। তারা চাইবে তাড়াতাড়ি ডেলিভারি। ১০ বছর পরেও এটা বদলাবে না।
I very frequently get the question: ‘What’s going to change in the next 10 years?’ And that is a very interesting question; it’s a very common one. I almost never get the question: ‘What’s not going to change in the next 10 years?’
And I submit to you that that second question is actually the more important of the two — because you can build a business strategy around the things that are stable in time. … [I]n our retail business, we know that customers want low prices, and I know that’s going to be true 10 years from now. They want fast delivery; they want vast selection. It’s impossible to imagine a future 10 years from now where a customer comes up and says, ‘Jeff I love Amazon; I just wish the prices were a little higher,’ [or] ‘I love Amazon; I just wish you’d deliver a little more slowly.’ Impossible.
And so the effort we put into those things, spinning those things up, we know the energy we put into it today will still be paying off dividends for our customers 10 years from now. When you have something that you know is true, even over the long term, you can afford to put a lot of energy into it.
-
Jeff Bezos
এমাজন এই চিন্তাতেই বিজনেস দাঁড় করিয়েছে।
ফেইসবুককে দেখেন। মানুষের কিছু কোর জিনিস, যেমন, লোককে তার লাইফ দেখানোর প্রবণতা, অন্যের এপ্রিসিয়েশন পাবার তীব্র ইচ্ছা, এগুলিকে কাজে লাগিয়ে বিজনেস করছে।
তেমনি, আগামী ১০ বছরেও মানুষ তার সম্পর্কে আপনি লিখলে, বা তার কাজ নিয়ে লিখলে, বা তার লাইফে ভ্যালু এড করে সাহায্য করলে আপনারে ডিজলাইক করবে না। এটা সিম্পল হিউম্যান সাইকোলজি।
হকি নিয়ে ইন ডেপথ আর্টিকেলের কোন সাইট আছে?
মার্শাল আর্টস নিয়ে?
বাস্কেটবল নিয়ে?
কিন্তু এগুলি লাইক করা লোকও তো আছেন দেশে। তাদের এইসব খেলা সংশ্লিষ্ট ভালো কন্টেন্ট পাবার চাহিদা আছে।
বা বিনোদন ইন্ড্রাস্টিতে, কৃষিতে বা অন্য অনেক সেক্টরে এমন জায়গা আছে।
ছয়
ভিডিও, অডিও, ওয়েব টেক্সট, গ্রাফিকস এগুলা চার ভিন্ন মাধ্যম যোগাযোগের। মানুষের চিন্তার সীমাবদ্বতা হলো সরলীকরণ করে খুবই লিনিয়ারলি ভাবে। যেমন, একটা না হলে আরেকটা। একটা ডাইকোটমি করে চিন্তা করা।
(যেমন টাকা নিয়েও অনেক অনেক লোক এমন ভাবে টাকায় কি সুখ হয়? বা টাকায় সুখ হয় না। যেন টাকা আর সুখের কোন ডাইকোটমি আছে। যেন টাকা না থাকলেই সকল সুখ। সাইন্টিফিক্যালি একটা পর্যায় পর্যন্ত টাকার সাথে সুখ রিলেটেড। টাকা গুরুত্বপূর্ণ, সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ না হলেও।)
এই থট প্রসেস ভুল।
কালচারাল থিংকার মার্শাল ম্যাকলুহানের একটা কথা আছে, মিডিয়াম ইজ দ্য মেসেজ।
এই কথাটি এখানে আমি নিয়ে আসছি মিডিয়াম নিজেই যে আলাদা এক অস্তিত্ব সেই জিনিসটার দিকে ইঙ্গিত করতে।
যে মিডিয়াম আপনি ইউজ করেন, সেটা দিয়ে কমিউনিকেট করা একটু আলাদা হবে অন্যগুলার চাইতে।
এই কারণে দেখা যাচ্ছে, ভিডিওর কনজিউমারই কেবল বাড়ছে না, অডিওর বাড়ছে। ওয়েব টেক্সটের তো বাড়ছেই।
তাই, ভিডিওর দিকেই যেতে হবে এমন কোন কথা নাই।
আলাদা মিডিয়ামের আলাদা কনজিউমার বেইজ আছে।
সাত
একটা কন্টেন্ট বেইজড সাবস্ক্রিপশন স্টার্টাপের জন্য মোট কী?
মট হলো, একটা দীর্ঘস্থায়ী কম্পিটিটিভ এডভান্টেজ ফর এ বিজনেস। একটা বিজনেসের জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস বলা যায়। মট নিয়ে এখানে লিখেছি। আমার ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজি মোস্টলি মট এনালাইসিস।
কন্টেন্ট বিজনেসের জন্য মট হলো, তার লেখকেরা। এজন্য ভালো লেখকের উপর ইনভেস্ট করতে হবে, তাদের তৈরি করতে হবে।
আট
একটা সাবস্ক্রিপশন কন্টেন্ট বিজনেস সফল হবে কি না কীভাবে বুঝা যায়?
দি এথলেটিকের ইনভেস্টর এরিক স্টমবার্গের মতে প্রথমত রিটেনশন রেইট।
মানে কতজন রিটেইন করলো সাবস্ক্রিপশনে। জানুয়ারিতে ১০০ জন সাবস্ক্রাইবার ছিল, ফেব্রুয়ারিতে কেউ বাদ দিল না, সেক্ষেত্রে রিটেইন করলো ১০০ ভাগ।
দি এথলেটিকের ক্ষেত্রে এই রেইট খুব বেশি, ৯০% প্রায়।
(রিটেনশনের কথায় চার্ন রেইটের কথা মনে পড়লো। চার্ন রেইট মোস্ট ইম্পরট্যান্ট আরেক জিনিস সাবস্ক্রিপশন বিজনেসে। এর অর্থ কত পার্সেন্ট সাবস্ক্রিপশন বাদ দিল। এটা নিয়ে আগামীতে লেখব। চার্ন রেইট এনালাইসিসের কিছু সুন্দর পদ্বতি আছে। আমি লাস্ট কর্মক্ষেত্র উইডেভসের জন্য একটা করেছিলাম।)
দ্বিতীয়ত, একটা পজেটিভ ফ্লাইহুইল। ফ্লাইহুইল একটা চাকা, যা চালু করতে অনেক এফোর্ট লাগে। কিন্তু চালু হয়ে গেলে চলতে থাকে নিজে নিজেই। স্বভাবতই এখানে এটা মেটাফোর।
এমাজনের ফ্লাইহুইলটা এরকম,
১। কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। তাদেরকে সেরা সার্ভিস দিতে হবে। কম দামে জিনিস দিতে হবে।
২। সেরা কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স তাই এমাজনের সাইটে ট্রাফিক আসবে।
৩। এমাজনের সাইটে ট্রাফিক বেশি তাই বিক্রেতারা তাদের পণ্য এমাজনে লিস্ট করবে।
৪। সুতরাং, কাস্টমারেরা পণ্য নির্বাচনের বেশি সুযোগ পাবে। সেক্ষেত্রে তাদের কম দামে জিনিস কেনা ও ভালো জিনিস যাচাই করে কেনা সহজ হবে। এমাজনে বেশি বিক্রি হবে। ফলত এমাজন কম দামে জিনিস দিতে পারবে।
অধ্যাপক নার্কসের দারিদ্রের দুষ্টচক্রের কথা মনে হচ্ছে? কোন দেশ দরিদ্র কারণ সে দেশ দরিদ্র। চক্রটা আসলে এরকমই। কিন্তু এখানে পজেটিভ।
বলা হয়ে থাকে জেফ বেজোস এই ফ্লাইহুইলের চক্রটি একটা ন্যাপকিনে এঁকেছিলেন।
যাইহোক, সাবস্ক্রিপশন সাইটের জন্য পজেটিভ ফ্লাই হুইল হলো,
১। ভালো লেখকদের মাধ্যমে অসাধারণ লেখা কনজিউমারদের দিতে হবে।
২। এতে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়বে।
৩। সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়লে আরো ভালো লেখকদের হায়ার করা যাবে। এবং কনজিউমারদের সেরা লেখা দেয়া যাবে।
সিম্পল এই চক্রটি একবার চলতে থাকলে বিজনেসের উন্নতি সময়ের ব্যাপার। অর্থাৎ, ইনভেস্টর হিসেবে এ ধরণের বিজনেসে ইনভেস্ট করতে হলে দেখতে হবে পজেটিভ ফ্লাইহুইল চলছে কি না।
নয়
উপসংহারে ধান্দা নিয়ে কিছু কথা। সাম্প্রতিক কালে আমি ইনভেস্টর ও বিজনেস থিংকার মনিশ পাবরাইয়ের ধান্দো ইনভেস্টর বইয়ের সাথে পরিচিত হই। এটি ইনভেস্টিং বিষয়ক, ও ব্যবসাকে বিশ্লেষণ বিষয়ক পাবরাইয়ের প্রবন্ধের বই।
বইয়ের নামের ধান্দো শব্দটি গুজরাতি শব্দ। এসে সংস্কৃত ধন শব্দ থেকে। এর অর্থ সম্পদ তৈরির আয়োজন। সহজ ভাষায় এর অর্থ ব্যবসা। তিনি সেই অর্থে ব্যবহার করেছেন।
বাংলাতে ধান্দা একটা নেগেটিভ শব্দ।
অভিধানে এর অর্থ, ধাঁধা, ধোঁকা, সংশয়, জীবিকার সন্ধান বা চিন্তা। কাজকর্মের সন্ধান বা ফিকির।
অর্থাৎ, ধন থেকে আসা এই শব্দটিকে আমরা নেগেটিভলি দেখি।
টাকা এবং টাকা জেনারেট বিষয়ক কাজকর্মকে নেগেটিভলি দেখা একটা সমস্যা। জীবিকার সন্ধান বা কাজকর্মের ফিকির বা ব্যবসা নট এ ব্যাড থিং। ইউ হ্যাভ রেসপন্সিবিলিটিজ। আমার আপনার দুনিয়াবি দায়িত্বগুলার ভার এসে আর কেউ নিবে না।
আর ধোঁকা, সেটা আপনি ব্যবসায় করলে যেমন খারাপ, সম্পর্কে করলে বা যেকোন জিনিসে করলেও খারাপ।