চিত্ত পরিতোষ
এক
ওই এলাকায় আমি যেদিন যাই সেইদিনই কানাই লাল ও তার চিত্ত পরিতোষ হোটেলের সাথে পরিচয় হয়। বাস থেকে নেমে ডানদিকের সরু রাস্তা ধরে হেঁটে, বিভিন্ন মুদি দোকান, মসলার দোকান, সেলুন ইত্যাদি পার হয়ে একেবারে কোনায় পাওয়া যায় চিত্ত পরিতোষ।
সেদিন আমার ক্ষুধায় মাথা খারাপ অবস্থা ছিল। আমি তাই গন্ধে গন্ধে সোজা ঢুকে পড়ি হোটেলে। হোটেলের অবস্থা ভালো না, ঝুপড়ির মতো, অনেকদিন আগের আসবাব পত্র।
গিয়ে একটি কাঠের টেবিলে বসি।
একজন ছোকরা ছেলে এসে জিজ্ঞেস করে, কী খাবেন স্যার? পরোটা, রুটি, রোস্ট, রেজালা, ঝোল ঝোল?
আমি কিছু বলতে যাব এর আগেই ছেলেটিকে পাশে ঠেলে দিয়ে কুচকুচে কালো চেহারার একজন লোক এগিয়ে আসল। মধ্যবয়স্ক, মোটা খাটো শরীরের গড়ন। দাঁত ধবধবে সাদা।
লোকটি হাসি মুখে বলল, ভাই কি মুসলিম?
আমি বললাম, হ্যা।
লোকটি পাশে থাকা ছেলেটির মাথায় হালকা চড় দিয়ে বলল, হারামী আগে জিগাবি না!
এরপর আমাকে বলল, ভাই আপনে উঠেন। আমাদের বড় ভুল হইয়া গেছে। আসলে এই হোটেল হিন্দুদের জন্য আর যারা শুওর খান তাদের জন্য। এখানে সকল মাংসের অপশনই শুওরের।
লোকটি খুবই আন্তরিকতার সাথে কথাগুলি বলছিল। আমার তাই বিরক্ত লাগল না।
আমি বললাম, ঠিক আছে। কোন সমস্যা নেই। এখানে ভালো খাবারের দোকান তো আছে?
লোকটি বলল, অবশ্যই স্যার। মবারক ভাইয়ের রেস্টুরেন্ট পাবেন এই গলি দিয়া বের হইয়া ডাইনে গেলে, সুরমা ক্লিনিকের সামনে। আমি উনারে ফোন দিয়া দিতেছি, আপনারে খাতির করবে।
আমি বললাম, থ্যাংক ইউ।
লোকটি হেসে হেসে বলল, অধমের নাম কানাই লাল। এই এলাকার সবাই আমারে চিনে। বলা যায় কু খ্যাতি আছে আমার শুওর খামারের কারণে। আপনি সম্ভবত এলাকায় নতুন আসছেন?
হ্যা, আপনাদের এখানে একটি নামী পত্রিকা আছে, তরঙ্গায়িত লুব্ধক। শ্যামল সাহেব সম্পাদক। আমি এর সহকারী সম্পাদক হিসেবে জয়েন করেছি।
কানাই লাল হেসে বলল, শ্যামল বাবুরে তো আমি চিনি ভাই। আপনি কোন চিন্তা করবেন না। এলাকায় কোন অসুবিধা হলে, ইলেক্ট্রিকের মিস্ত্রি দরকার, বাথরুমের কাজে লোক দরকার, জিনিসপত্র কেনার লোক দরকার, যাইহোক, আমারে স্মরণ করবেন।
কানাই লালের মোবাইল নাম্বার নিলাম। আমারটা তাকে দিলাম।
এইভাবে প্রথম কানাই লালের সাথে ও তার চিত্ত পরিতোষ নামের হোটেলের সাথে আমার পরিচয়। পরবর্তীতে ওখানে থাকার সময় দেখেছি কানাই লাল সকল কাজের কাজী। রাস্তায় বেরোলেই তাকে দেখা যায়। এলাকায় সে কেবল শুওরের খামারের জন্যই পরিচিত এটা বললে ভুল হবে।
শুওরের খামারটি তার হোটেলের ঠিক লাগালাগি পেছনের দিকে। খামারের লাগোয়া জায়গাতেই কানাই লালের ঘর।
দুই
আমার বাসার পাশের বাড়িতেই থাকতেন লেখক মণিলাল রায়। আমি সকালের দিকে এলাকার পার্কে হাঁটতে যেতাম। সেখানেই এই লেখকের সাথে আমার সরাসরি পরিচয় হয়। এর আগে নামে চিনতাম। ভদ্রলোকের বয়স ষাটের দিকে বলে আমার মনে হলো। মাথায় অল্প সাদা চুল, মুখে খোঁচা খোঁচা সাদা দাঁড়ি এবং চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা। পার্কে এসে খুবই অল্প হাঁটাহাঁটি করার পরেই তিনি বেঞ্চে বসে সিগারেট ধরিয়ে ফেলতেন।
পার্কে সিগারেট খাওয়া নিষেধ। বড় সাইনবোর্ড লাগিয়ে লিখে রাখা হয়েছে সেই নিষেধের কথা।
কিন্তু দেখতাম মণিলাল রায় একটার পর একটা সিগারেট খেয়ে যেতেন, কেউ তাকে কিছু বলতো না। কেউ তার সাথে কথাও বলতে আসতো না, বা তার দিকে দেখলে মনে হতো তিনিই সবাইকে অবজ্ঞা করে চলেছেন।
আমি তাকে চিনতাম না। তাই প্রথমদিন সিগারেট খেতে দেখে গিয়ে বললাম, পার্কের ভেতরে সিগারেট খাওয়া নিষেধ তা কি আপনি জানেন না?
ভদ্রলোক কী একটা ভাবনায় ডুবে ছিলেন। আমার কথা শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে ভালো করে তাকালেন। তারপর আবার সামনের দিকে তাকিয়ে ধোঁয়া ছেড়ে এক শব্দে উত্তর দিলেন, জানি।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, তাহলে খাচ্ছেন কেন?
আবার এক শব্দে উত্তর দিলেন, ইচ্ছা।
আমি বুঝে গেলাম এই লোকের সাথে আর কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। বেঞ্চ থেকে উঠে নিজের পথে হাঁটা দেবার জন্য যখন দাঁড়িয়েছি তখন ভদ্রলোক বলে উঠলেন, বসুন!
হ্যা, বলুন?
গুনে দেখলাম আজ আটারো মাস তেরোদিন পরে কেউ একজন আবার আমার পার্কে সিগারেট খাওয়া নিয়ে আপত্তি তুললো। আপনি কি এলাকায় নতুন এসেছেন?
হ্যা, কয়েকদিন হলো এসেছি। এখানকার পত্রিকা তরঙ্গায়িত লুব্ধকে আমি কাজ করি।
শ্যামল বাবুর পত্রিকা।
হ্যা।
ভালো পত্রিকা। তা উঠেছেন কোথায়?
তিন নম্বর রোডের মাথায়, চৌধুরীর বাড়ির পাশে।
তাহলে তো আমার বাড়ির পাশেই। প্রতিবেশি আপনি আমার। আমি মণিলাল রায়।
লেখক মণিলাল রায়?
হ্যা। লেখক মণিলাল রায়।
এইভাবে মণিলাল রায়ের সাথে আমার পরিচয় হলো। এরপর থেকে প্রতিদিন সকালে পার্কের বেঞ্চিতে বসে আমাদের আলাপ হতো। মণিলাল রায় লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। কথাবার্তার বৈচিত্রের দিক দিয়ে বিচার করলে তিনি চমৎকার। অদ্ভুত অদ্ভুত বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেন। নানা বিষয়ে তার পর্যবেক্ষণের কথা বলেন। তাই মণিলাল রায়ের কথাবার্তা আমার ভালো লাগতে শুরু করে।
একেকবার একেক বিষয় নিয়ে তিনি মগ্ন হয়ে যেতেন।
একবার মৌমাছি নিয়ে লাগলেন। তখন তিনি মৌমাছি পালন করা শুরু করেছেন তার বাসায়। পার্কে বসলে একের পর এক মৌমাছি বিষয়ক অজানা তথ্য জানা হতো। আবার দেখা যেত একসাথে ফিরছি বাসায়, তখন হঠাত তিনি মৌমাছির কথা বাদ দিয়ে শিবের তান্ডব নৃত্য আর পার্বতীর লাস্য নৃত্য নিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন।
মৌমাছি পালন করে মধু উৎপন্ন করার পরে একদিন তার বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন আমাকে মধু দিতে। সেদিন তার স্ত্রীকে দেখি। বয়সে তার চাইতে বেশ ছোটই হবেন। ভদ্রমহিলা আন্তরিকতার সাথে আমাকে মধুর কৌটা দিয়েছিলেন।
গত এক মাস আগে, এই মণিলাল রায় এবং আমি বসেছিলাম পার্কে। একদিন সকাল বেলা। নানা কথার পর আমরা যখন পার্ক থেকে বের হচ্ছি তখন দেখলাম কানাই লাল হেঁটে যাচ্ছে। আমাদের দেখে তার উজ্জ্বল দাঁত বের করে হাসলো।
মণিলাল রায় তখন আচমকা আমাকে প্রশ্ন করে বসলেন, জানেন এই অঞ্চলে সবচাইতে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি কে?
আমি সাংবাদিকতার খাতিরে এখানকার রাজনৈতিক নেতাদের সম্পর্কে জানতাম। তাদের একজনের নাম বললাম, যাকে আমার মনে হয়েছিল ক্ষমতাবান।
আমার উত্তর শুনে মণিলাল রায় অদ্ভুতভাবে হাসলেন। তিনি বললেন, ভুল! এই অঞ্চলে সবচাইতে ক্ষমতাবান এই কানাই লাল।
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কীভাবে?
মণিলাল রায় বললেন, তার শুওরের খামার আছে। হৃষ্ট পোষ্ট শুওরগুলা ঘোত ঘোত করে, ওখানে গেলেই দেখবেন।
তাকে কী হয়েছে? আমার অবাক হওয়া কাটে না।
মণিলাল রায় আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, একটা মানুষ যদি হয় ১৬০ পাউন্ডের, ২০ টা শুওরে খেতে কতক্ষণ লাগতে পারে বলে ভাবেন? কিছু হাড্ডি থাকতে পারে, ওগুলি যাবে চুল্লিতে। ফলে, ডেডবডি কি থাকলো?
ভদ্রলোক রসিকতা করছেন কি না আমি বুঝতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু দেখলাম তিনি চোয়াল শক্ত করে কথাগুলি বলছেন। রসিকতার কোন আভাস নেই কথায়।
তাও আমি হেসে বললাম, আপনি নিশ্চয়ই মজা করছেন?
মণিলাল রায় তখন সামনের দিকে হাঁটতে হাঁটতে সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে বললেন, মজা ভাবলে মজা।
ভদ্রলোকের এই কথার টোনটি আমার মাথার মধ্যে গেঁথে গেল। যেন একটা অস্বস্থির তীর।
তিন
আমি যে পত্রিকায় কাজ করতাম তার সম্পাদক ছিলেন শ্যামল ইসলাম বাবু। তাকে সবাই ডাকে শ্যামল বাবু নামে। পেট মোটা, মাথায় টাক, বড় গোঁফওয়ালা হাসিখুশি আমুদে লোক।
মণিলাল রায়ের সাথে যেদিন আমার শুওর নিয়ে কথা হয়, ঐদিনই বাবু ভাই আমাকে একটি কাজ দেন আমাদের পত্রিকার পুরনো সংখ্যাগুলি থেকে ক্রাইম নিউজ সংগ্রহ করে একটা অপরাধ তথ্য লাইব্রেরী বানানোর জন্য।
সেখানে কাজ করতে গিয়ে, প্রায় বিশ বছর আগের এক সংখ্যায় একটি নিঁখোজ সংবাদ আমার নজরে আসে।
মণি চৌধুরীর স্ত্রী নিঁখোজ।
ঐ নিউজের পাশে এক যুবকের ছবি, যার সাথে মণিলাল রায়ের চেহারার খুব মিল আছে বলে আমার মনে হলো।
আমি পরদিন অফিসে গিয়ে বাবু ভাইকে নিউজটি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই এই নিউজের মণি চৌধুরীই কি মণিলাল রায়?
বাবু ভাই নিউজটি দেখতে দেখতে বললেন, হ্যা, উনিই এইটা। উনার প্রথম স্ত্রী নিঁখোজ হওয়ার নিউজ।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, উনার স্ত্রীকে আর পাওয়া যায় নি?
বাবু ভাই বললেন, না, যায় নাই।
আমার মুখ থেকে বেরিয়ে গেল, কী আশ্চর্য!
বাবু ভাই তার উড়িয়ে দেয়া ভঙ্গিতে বললেন, ধুর আশ্চর্যের কী! অন্য জায়গায় লাইন আছিল। মণিদা নিজেই আমারে বলছে। নারীর মন আর পুরুষের ধোনের কোন ঠিক নাই মিয়া। কোন দিকে কখন জায়গা। তুমি আবার এইগুলা নিয়া ভাইবো না।
আমি সেদিন থেকে হিসাব মেলাতে বসে গেলাম। আমার ঘুম হচ্ছিল না অস্বস্থিতে। দেখলাম যে এটা খুবই সম্ভব। মণিলাল রায় স্ত্রীকে খুন করে কানাই লালের শুওরগুলা দিয়ে খাইয়ে দিতেই পারেন। নিজের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণে আমাকে বলে ফেলেছেন।
আমি মণিলাল রায়কে এড়িয়ে চলার জন্য পার্কে আর যাচ্ছিলাম না।
এর মধ্যে মণিলাল একদিন আমার বাসায় আসলেন। সেদিন সকালে আমি বারান্দায় একটি বেতের চেয়ারে বসে চা খাচ্ছিলাম। শীতের রোদ এসে লাগছিল গায়।
মণিলাল তার কালো লাঠি হাতে নিয়ে আসলেন। হাসিমুখে আমাকে বললেন, আপনার কি তবিয়ত খারাপ আছে?
আমি বললাম, না, সুস্থই আছি। আপনি কী মনে করে?
চেয়ারে বসতে বসতে মণিলাল বললেন, আপনার সাথে কিছুদিন দেখা হয় না, পার্কে যান না, তাই দেখা করতে আসলাম।
এরপর মণিলাল বেতের চেয়ার নিয়ে কথা বললেন কিছুক্ষন।
ঠিক উঠার আগে আগে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি নাকী পুরনো ক্রাইম নিউজ নিয়ে কাজ করছেন? এবং খুব ইন্টারেস্টিং জিনিস নাকি পেয়ে গেছেন?
এই প্রশ্নটি করে তিনি মিটিমিটি হাসতে থাকলেন। অদ্ভুত সে হাসি।
অস্বস্থির সাথে আমি উত্তর দিলাম, না, আসলে সেরকম কিছু না।
মণিলাল বললেন, সকল সময় খোলা চোখে পরিবেশ দেখবেন। যদি দেখেন, আপনি যা ভাবছেন কানাই লালের খামার নিয়ে, এটা সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে কিন্তু এখানে অনেকের স্বার্থই জড়িয়ে আছে। ফলে, আপনাকে তালিকা করে দেখতে হবে কার কার এই খামারের প্রয়োজন ছিল। আরো খোলাসা করে বললে কার কার স্ত্রী হারিয়ে গেছেন।
মণিলাল একটু থামলেন। তারপর হালকা কেশে বললেন, আবার আরেকটা পয়েন্ট, যারা এটি ব্যবহার করেছেন, তাদের মধ্যে আবার মিল থাকবে। তা না হলে তো জিনিসটা তারা ব্যবহার করতে পারবেন না দীর্ঘদিন ধরে।
মণিলাল চলে গেলেন।
এরপর আমি আরো সিরিয়াসলি ভাবতে লাগলাম। মণিলালকে নিশ্চয়ই শ্যামল বাবু অর্থাৎ বাবু ভাই সব বলেছে। কিন্তু কেন সে বলবে?
যখন নিজের মনে মনে থিওরিটাকে গুছিয়ে আনলাম, তখন ঠিক করে ফেললাম থানায় গিয়ে জানাব।
এতে আমি ভুল প্রমাণ হলে কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু ঠিক প্রমাণ হলে অনেক বড় ক্রাইমের খনি বের হবে। মণিলাল রায় এটা করে থাকলে আরো অনেকেই এটা করেছে নিশ্চয়ই।
থানায় গেলাম সাহস করে। ওসির নাম উদয় শংকর। মাঝবয়েসী লোক, পাকা গোঁফ, মাথায় ছোট ছোট চুল, চ্যাপ্টা নাক।
তিনি মনযোগ দিয়ে আমার কথা শুনলেন।
আমি মণিলাল রায়ের স্ত্রীর নিঁখোজ হবার সংবাদসহ, আমাদের পত্রিকায় প্রকাশিত তিনটি পুরনো নিউজ তাকে দিলাম। একটি নিউজে আশংকা করা হয়েছিল হয়ত ভদ্রমহিলা খুন হয়েছেন।
উদয় শংকর আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, এই নিউজে তো প্রমাণ হয় না উনি খুন হয়েছেন বা মণিলাল তাকে খুন করেছেন। তাই নয় কি?
আমি বললাম, হ্যা, কিন্তু আমি আপনাকে ঐ খামার নিয়ে আমার আশংকার কথা বা সন্দেহের কথা জানাতে এলাম।
উদয় শংকর বললেন, আপনি হয়ত জানেন না আপনার পত্রিকার সম্পাদকের স্ত্রীও এইভাবে নিখোঁজ হয়েছিলেন অনেকদিন আগে। তার বেলায় আপনার কি মত?
আমি অবাক হলাম এটি শুনে। বললাম, এ সম্পর্কে আমার জানা নেই কিছু।
উদয় শংকর আমাকে চা খাওয়ালেন। আমার সাথে সুন্দর ব্যবহার করলেন। আমি কিছুটা অবাক হলাম যে তাকে বুঝাতে তেমন কোন কসরত করতে হলো না। এরপর যা বললাম, কোন প্রশ্ন না করে তিনি শুনে গেলেন, আর বললেন বিষয়টা তদন্ত করে দেখবেন।
এরপরের ঘটনাগুলি ছিল আমার জন্য অদ্ভুত।
পরদিন আমার চাকরি চলে যায়। কারণ, উপরের নির্দেশ।
বাড়িওয়ালা আমাকে একদিনের নোটিসে বাসা ছেড়ে দিতে বলে।
আমি ঐ এলাকা ছেড়ে আসতে বাধ্য হই।
যেদিন আসি, ওইদিনের পত্রিকাতে একটি বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়েছিল। পুলিশ অফিসার উদয় শংকরের স্ত্রী পার্বতী দেবীকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায় নি। কেউ খোঁজ পেলে যেন নিচের ঠিকানায় যোগাযোগ করেন।