গিয়ান যখন হয়ে গেল পাওয়ার, মানে নলেজ ইজ পাওয়ার, বাংলায় যারে বলা হইল, জ্ঞানই শক্তি বা ক্ষেমতা, তখনই গিয়ান হয়ে গেল অস্ত্র।
গিয়ান বলতে আমরা যে গিয়ান সাধনা, সত্যের প্রতি আকাঙ্ক্ষা, সত্য খুঁজতে থাকার জার্নি ইত্যাদি মহান জিনিশ বুঝে থাকে, তার মৃত্যু হয় গিয়ানই পাওয়ার প্রতিষ্ঠিত হবার সাথে সাথে।
কারণ তখন এটা জাস্ট ক্ষমতার টুল, বন্দুক।
এই কারণে ক্ষমতায় থাকতে আপনার যেমন বন্দুক ও পেশিশক্তি লাগবে, তেমনি লাগবে গিয়ান। এই গিয়ান আবার ট্রুথের প্রতি লাভ কিংবা সাধনা না, আপনে তখন গিয়ান তৈরি করবেন, ও আপনার গিয়ানরে প্রতিষ্ঠিত করবেন গিয়ান হিশাবে।
যেরকম এলাকায় আপনি আপনার দলের পাণ্ডারে প্রতিষ্ঠিত করে রাখেন।
ধরা যাক, আপনে একটা ভেড়া, আপনারা ভেড়ার দল এখন ক্ষমতায়। আপনাদের প্রতিপক্ষ ছাগলেরা।
এইসময়ে স্কুলে পরীক্ষার প্রশ্নে আসল সেরা প্রাণী কে, ভেড়া না ছাগল।
এই পরীক্ষায় ছাত্ররা কোন গিয়ান লেখবে? সেরা প্রাণী ছাগল লেখলে আপনারা তাদের পাশ দিবেন?
দিবেন না। কারণ সেরা প্রাণী ছাগল হইলে আপনারা আর সেরা থাকেন না। সবাই এই জিনিশ বিশ্বাস করলে তো আপনাদের ক্ষমতাই আর থাকবে না। ছাগলেরা ক্ষমতা নিয়া যাবে।
অতএব, আপনারা নিয়মিত ভাবে গিয়ান তৈরি আর প্রতিষ্ঠিত করে যেতে থাকবেন।
ছাত্রছাত্রীরাও জানে জ্ঞানই ক্ষেমতা। তাদেরও ক্ষেমতা দরকার।
তারা পরীক্ষায় বড় বড় পাশ দিয়া মা বাপের মুখ উজ্জ্বল করবে। ভালো চাকরি তারা চায় স্বাভাবিক ভাবেই। এর জন্য তাদের দরকার গিয়ান, এই ক্ষেমতা লাভের জন্য।
ফলে, গিয়ান তাদের কাছেও স্ট্র্যাটেজি। আপনাদের কাছেও ট্র্যাটেজি।
পাওয়ারের টুল সে।
খালি আপনেরা না, ছাগলেরাও এমন করবে। আপনার বিরুদ্ধ দলেরা। তাদের কাছেও আছে পালটা গিয়ান। তারা জানে আপনাদের গিয়ানরে তাদের নির্মিত গিয়ান দিয়া হটাইতে হবে।
ফলে, আপনারা যেমন আপনাদের গিয়ানের পক্ষের লেখক বুদ্ধিজীবী পালবেন, তাদেরকে মহান সাধক হিশাবে পুরস্কার দিবেন, তেমনি তারাও তাদের পক্ষের লেখক বুদ্ধিজীবী পালবে।
পেশি শক্তি বন্দুকধারী বাহিনীর মত, এরাও আপনাদের আরেক বাহিনী। এরা মাথা দিয়া খেলেন, মগজাস্ত্র ব্যবহার করেন, আপনাদের পক্ষে গিয়ান তৈরি এবং প্রতিষ্ঠা করে যান, পরস্পর গিয়ানের যুদ্ধ করেন। সমাজে গিয়ানিরূপে অধিষ্ঠিত থাকেন।
আর ওই যে গিয়ান ছিল একসময়, সত্যের প্রতি সাধনা, লাভ, ওইটা আর কোথাও থাকবে না।
যদি কেউ থাকে এমন, তারেও আপনারা দমন করবেন। ছাগলেরা ক্ষমতায় থাকলে তারাও দমন করবে।
কারণ তার কথা আপনাদের উভয়ের নির্মিত গিয়ানরেই চ্যালেঞ্জ করবে।
তারে রাখা যাবে না।
“Knowledge is power.” This is the sentence that dug the grave of philosophy in the nineteenth century. … This sentence brings to an end the tradition of a knowledge that, as its name indicates, was an erotic theory—the love of truth and the truth through love (Liebeswahrheit). … Those who utter the sentence reveal the truth. However, with the utterance they want to achieve more than truth: They want to intervene in the game of power.
- Peter Sloterdijk,(Critique of Cynical Reason 1983), German philosopher and cultural theorist