নো কান্ট্রি ফর ওল্ড ম্যান

নো কান্ট্রি ফর ওল্ড ম্যান

নো কান্ট্রি ফর ওল্ড ম্যান

নো কান্ট্রি ফর ওল্ড ম্যান সাধারণ কোন সাইকো-থ্রিলার মুভি না। এখানে আপনারে দেখতে হবে বুড়া শেরিফের দিকে। অতি ভয়ংকর খুনী চিগুরের খুনগুলা সে বুঝতে পারে না। সে পূর্বে ঘটে যাওয়া অপরাধের সাথে এগুলি মিলাইতে যায়। কিন্তু দেখতে পায় যে এইসব অপরাধ তার বুঝার সীমার বাইরে চলে গেছে। এই ফিল্মের নাম নেয়া হইছে উইলিয়াম বাটলারের সেইলিং টু বাইজেন্টিয়াম কবিতা থেকে। তিনি ৬০ বা ৬১ বছর বয়সে লিখেছিলেন কবিতাটি। এই কবিতার থিমটা হচ্ছে বৃদ্ধরা দুনিয়াবি কাজ তরুণদের হাতে দিয়ে যেন চলে যায় বাজেন্টিয়াম, অর্থাৎ, দুনিয়াতে তাদের দুনিয়াবি কাজ শেষ হইছে এখন দরকার আধ্যাত্মিকতা, আত্মার কাজ।

ফিল্মেও যেন বৃহৎ প্রেক্ষাপটে এই কথাই বলে। এটা বুড়া শেরিফের ফিল্ম। সে যে একসময় বুঝতে পারে এই দুর্বোধ্য পৃথিবী তার বুঝার সীমার বাইরে চলে গেছে। সে হঠাৎই বুঝতে পারে দুনিয়াতে তার অবস্থান। ডেভিড লিঞ্চের স্ট্রেইট স্টোরিও একজন বুড়া লোকের গল্প। তিনি ভাইয়ের সাথে দেখা করতে লোন মোয়ার চালিয়ে রওনা দেন, যে ভাইয়ের সাথে তার দেখা হয় নি, কথা হয় নি দীর্ঘদিন। পথে অনেকের সাথে তার দেখা হয়, কথা হয়। মূলত এই যাত্রাই ফিল্ম পুরাটা। এক সাইক্লিস্ট দলের সাথে বৃদ্ধের কথা হচ্ছিল। তারা তাকে জিজ্ঞেস করে একসময় বৃদ্ধ হবার সবচেয়ে বাজে জিনিস কি। বুড়া লোক উত্তর দেন, আপনি একসময় তরুণ ছিলেন সেই স্মৃতি মনে পড়া।

অর্থাৎ এই বেদনা বৃদ্ধ লোকদের থাকে। তা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী’র ওল্ড ম্যানে পাওয়া যায়, শহীদুল জহিরের গল্প তোরাব সেখ এর মধ্যেও পাবেন, প্রধান চরিত্র তোরাব সেখের ভাবনায় ও আচরনে। নো কান্ট্রি ফর ওল্ড ম্যান অবশ্য খালি বুড়াদের সাইকোলজি নিয়া কাজ করে নাই। এই ফিল্ম একটা বাস্তবতা দেখাইতে চাইছে। যে একসময় আমাদের প্রয়োজন ফুরায়, বা আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে সব।

[একই ভাবে বর্তমান আধুনিক সময়ে, আপনি যদি লার্নিং রিলার্নিং ও আনলার্নিং এর ভেতরে না থাকেন; তাইলে দেখবেন দুনিয়ার ঘটনাপ্রবাহ আপনার বুঝার ক্ষমতার অনেক বাইরে চলে গেছে।]