বিশ্লেষণঃ ঘোষিত উপহার যেভাবে মোটিভেশন বাড়ায় (১৭%)

ভূমিকাঃ

আমার এই ব্লগের জন্য ফিডবার্নার ইমেইল সাবস্ক্রিপশন চালু করি কয়েকদিন আগে। উদ্দেশ্য ছিল নির্দিষ্ট এবং সত্যিকার আগ্রহী পাঠকদের সাথে যুক্ত থাকা ও ফেইসবুক নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসা। কিন্তু ইমেইল সাবস্ক্রিপশন এদেশে জনপ্রিয় নয়। তাই সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে কিছু পরীক্ষা করি। এই পরীক্ষা ও তার ফলাফল কেবল ইমেইল সাবস্ক্রাইবার নয় অন্য অনেক ক্ষেত্রেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিকে সাহায্য করতে পারে, তাদের কাস্টমারদের আচরণ বা মনস্তত্ত্ব বুঝতে, ও প্রভাবিত করতে।

 

[ মোটিভেশন যে অর্থে ব্যবহৃত হয়েছেঃ কাউকে কোন কাজ করতে সম্মত করানো। মোটিভেশন নিয়ে ড্যান আরিয়ালির পেওফ বইয়ের উপর লেখাটি পড়তে পারেন। ]

 

যেভাবে করা হলোঃ

আমি এই সাইটের ফেইসবুক গ্রুপে ও পেইজের সাবস্ক্রাইবারদের মাঝে সাইটকে ইমেল দ্বারা সাবস্ক্রাইব করার আহবান জানিয়ে পোস্ট দেই, সেই পোস্ট প্রায় ২৪ ঘন্টা থাকে। এই পোস্টের কার্যকারীতা দেখা যাক।

গ্রুপঃ

মেম্বার ১৫৬

সীন হয়েছে ৯১

লাইক কমেন্ট হয়েছে ১০+২ =১২

কতজন মানুষের সামনে গেল, সেই হার – ৯১ ভাগ ১৫৬ = ০.৫৮৩৩৩৩। এই রেইট অনেক ভালো। অর্ধেকের বেশী মানুষের সামনে গিয়েছে।

লাইক+কমেন্ট হার = ১২ ভাগ ১৫৬ = ০.০৭৬৯২৩। এই রেইট মারাত্মক বাজে।

 

পেইজঃ

মেম্বার বা লাইকসংখ্যা ৭৬৫

পোস্ট রিচ ৮৫

লাইক+ কমেন্ট ৫

 

কতজন মানুষের সামনে গেল, সেই হার – ৮৫ ভাগ ৭৫৬ = ০.১১১১১। মারাত্মক বাজে।

লাইক+কমেন্ট হার – ৫ ভাগ ৭৬৫ = ০.০০৬৫৩৫। ভয়াবহ বাজে।

গ্রুপ ও পেইজে পোস্টের প্রায় একদিনের বেশী সময় পরে সাবস্ক্রাইবার এসেছে ১০ জন। গ্রুপ ও পেইজের মোট লাইকার সংখ্যা ৭৬৫ + ১৫৬ = ৯২১।

সাবস্ক্রাইবার পাওয়ার হার ১০ ভাগ ৯২১ = ০.১১ প্রায়। এই সংখ্যা কিন্তু ফেইসবুক সাবস্ক্রাইবারদের মধ্যে থেকেই, তাই এটি মারাত্মক বাজে।

 

অর্গানিক সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং মৃতঃ

যেকোন ব্র্যান্ড পেইজের অর্গানিক পোস্টের ক্ষেত্রেও এই চিত্র দেখা যাবে। মারাত্মক কম রীচের হার, মারাত্মক কম লাইক কমেন্ট। ফলে কনভার্শনও কম।

তাই এসব দিকে নিজের শ্রম ও মেধা ব্যয় করা অপচয়। ব্র্যান্ডের অর্গানিক সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জন্য পয়সা ঢালা নিতান্তই অপচয়। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ছিল একরকম হাইপ।

এখন কেবল কাজ করবে পেইড সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। কারণ এর জন্য ইউজার টার্গেট করে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। এবং টাকা দেয়া হয় তাই ফেইসবুক লোকের সামনে নিয়ে যায়।

 

প্রোফাইল বা মূল টাইমলাইন থেকেঃ

 

আমার প্রোফাইল থেকেও একই আহবান জানিয়ে পোস্ট দেই পরদিন। এই পোস্ট ২৪ ঘন্টা থাকে। আমার প্রোফাইলে মোট সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা – ২৩৯৩ ফ্রেন্ডস + ১২২১ ফলোয়ার = মোট ৩,৬১৪।

সাবস্ক্রাইব করার আহবান জানিয়ে দেয়া পোস্টে লাইক ছিল ১৩ টি। লিংকে ক্লিক পড়েছে ১৫ টি।

এবং ফিডবার্নারে সাবস্ক্রাইবার পেয়েছি এখান থেকে ৯ জন।

সাবস্ক্রাইবার পাওয়ার হার ০.০০২৪৯০৩১৫৪। ভয়াবহ বাজে।

 

 

মোট হিসাবঃ

 

পেইজ গ্রুপ ও প্রোফাইল মিলিয়ে যদি হিসাব করি তাহলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা দাড়ায়ঃ

৩৬১৪ + ৭৬৫ + ১৫৬ = ৪৫২৬ প্রায়।

এর থেকে ফিডবার্নার সাবস্ক্রাইবার পেয়েছি আহবান জানিয়ে – ২২।

সাবস্ক্রাইবার পাওয়ার হার – ২২ ভাগ ৪৫২৬ = ০.০০৪৮৬। শোচনীয় অবস্থা।

 

কারণসমূহ ও সমাধানের হাইপোথিসিসঃ

 

এই অবস্থায় ভাবতে বসা যায় কেন এমন হলো। ওয়েব এনালিটিকস মানে ওয়েব রিপোর্টিং নয়, প্রাপ্ত তথ্য থেকে ইনসাইট বের করে আনা। আমার এখানে এই তথ্য বা রিপোর্ট এর উপর ভিত্তি করে ভাবতে হবে কেন এমন হলো ও কীভাবে এর সমাধান করা যায়।

সম্ভাব্য কারণসমূহঃ

১। সাবস্ক্রাইব করতে লিংকে গিয়ে ইমেইল দিতে হয়। মানুষ প্রকৃতিগত ভাবে অলস তাই এটা করে নি।

২। সাবস্ক্রিপশন এখানে প্রচলিত নয়, তাই অনেকে করতে চায় নি।

৩। লোকে ভাবছে যে আমি কেন করব, আমার কী লাভ। যদিও লেখা ইনবক্সে পাওয়া তার জন্য লাভ কিন্তু এটাতে হয়ত ইন্সট্যান্ট কোন লাভ নেই তার মতে। ফলে তার ইমেল বক্সে দেয়া, পরে আবার কনফার্ম করা; এসব করতে ইচ্ছে হচ্ছে না।

[একে হাইপারবোলিক ডিসকাউন্টিংও বলা যায়। মানুষ সাধারণত ভবিষ্যতের বড় লাভের চাইতে বর্তমানের ছোট লাভে আগ্রহ বোধ করে। বর্তমানের অল্প কষ্টে ভবিষ্যতের লাভ সে চায় না। মানুষের এই প্রবণতাই হাইপারবোলিক ডিসকাউন্টিং।]

৪। হয়ত সে ভাবছে সে এটা করলে আমার বিশাল কোন লাভ হয়ে যাবে। এ সংখ্যা নিতান্ত কম নয় বলে আমার ধারনা। এরা আমার টার্গেটেড অডিয়েন্স নয়।

এখানে প্রথম কারণটি বা সমস্যাটি সমাধান করার উপায় নেই। কারণ সাবস্ক্রিপশন এর চাইতে সহজে করার পদ্বতি আসে নি। সব ক্ষেত্রেই ইমেল দিতে হয় ও কনফার্ম করতে হয়।

দ্বিতীয় কারণটি বিবেচনায় নিলাম, ও তৃতীয় কারণে গুরুত্ব দিলাম। এখানে একটা ইনসেন্টিভ দিতে হবে ঠিক করলাম। সেটা হবে একটা ইবুক। যারা সাবস্ক্রাইব করবেন তাদের অনুবাদ গল্পের একটা ইন্টারেস্টিং ইবুক দেব। এইভাবে তাদের জন্য একটি দ্রুত লাভের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে তারা আগ্রহী হয়ে উঠেন এবং হাইপারবোলিক ডিসকাউন্টিং কাটানো যায়।

আর চতুর্থ কারণ বা সমস্যাটি সমাধানযোগ্য নয়। তাই একে উপেক্ষা করে যাবো। এ নিয়ে আমার এক গল্প আছে।

আমি মনে করছি যে এই ইনসেন্টিভ ফিডবার্নারে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়াবে। কিন্তু এটাও আমি দুইভাবে করতে চাই।

প্রথমে আমি সরাসরি বলবো না কী উপহার দেয়া হবে।

পরবর্তীতে বলে দেব কী উপহার দেয়া হবে।

এখানে দেখার ইচ্ছা ঘোষিত উপহার বেশী কাজ করে না অঘোষিত উপহার বেশী কাজ করে।

 

অঘোষিত উপহারঃ

অঘোষিত উপহার দিয়ে প্রায় ২১ ঘন্টায় সাবস্ক্রাইবার পাওয়া গেছে ১৪ টি।

হার ০.০০৩৭ এর মতো। আগের চাইতে কম। পেইজ থেকে দেই নি।

অঘোষিত উপহারের পারফর্মেন্স বেশী ভালো নয় দেখা যাচ্ছে।

এই লিংকে ক্লিক হয়েছিল ২৫ বার। ২৫ বার ক্লিক হয়ে সাবস্ক্রাইবার হয়েছে ১৪ টি, অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক, ০.৫৬।

উপহার ছাড়া মূল প্রোফাইল থেকে দেয়া আগের লিংকে ক্লিক হয়েছিল ১৫ টি এবং সাবস্ক্রাইবার এসেছিল ৯ টি। অর্থাৎ, অর্ধেকের বেশী ০.৬০ ছিল রেইট লিংকে ক্লিক ও সাবস্ক্রাইবের। ১০০ জন ক্লিক করলে ৬০ জন সাবস্ক্রাইব করবেন এমন। অঘোষিত উপহারের ক্ষেত্রে তা হলো ১০০ জন ক্লিক করলে ৫৬ জন।

 

ঘোষিত উপহারঃ

এবার ঘোষনা দিলাম যে সাবস্ক্রাইব করলে স্টিফেন কিং এর গল্প দ্য বুগিম্যানের অনুবাদ দেয়া হবে।

যেমন আশা করেছিলাম দ্রুতই সাবস্ক্রাইবার বাড়তে লাগল, এবং প্রায় ২৪ ঘন্টা পর তার মোট সংখ্যা হলো ২৯।

অর্থাৎ, হার এখানে প্রায় ০.০০৭৬। পেইজ থেকে দেই নি।

 

ফলাফলঃ

তিন ভাগে গিফট ছাড়া আহবান (A), অঘোষিত উপহার (B) ও ঘোষিত উপহারে (C) যেভাবে সাবস্ক্রাইবার পাওয়ার হার পরিবর্তীত হলোঃ

উপহারহীন অবস্থা (A) থেকে ঘোষিত উপহার সাবস্ক্রাইবার পাওয়ার হার বাড়িয়েছে ১৭% এবং অঘোষিত উপহার কমিয়েছিল ৭%

 

লিংকে ক্লিক ও সাবস্ক্রিপশনঃ

ঘোষিত উপহারের লিংকে ক্লিক হয়েছে ৬৫ বার। এর থেকে সাবস্ক্রাইবার এসেছে ২৯টি। অর্ধেকের কিছু কম, ০.৪৪। ১০০ ক্লিক হলে ৪৪ জন সাবস্ক্রাইব করেন এমন।

লিংকে ক্লিকের অনুপাতে সাবস্ক্রিপশনের হার সব সময়ই দেখা গেল ০.৪৪ থেকে ০.৬০ এর মধ্যে আছে। অর্থাৎ যারা আগ্রহী হয়ে ক্লিক করছেন তাদেরও প্রায় অর্ধেক সাবস্ক্রিপশন করেন নি। এ থেকে বুঝা যায় ব্যাপারটা কতো কঠিন ছিল।

 

ফাইন্ডিংস ও পরামর্শঃ

১। অর্গানিক সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং মৃতপ্রায়।

২। ইনসেন্টিভ দেয়া মানুষের আচরনকে প্রভাবিত করে, যা আরো অনেক রিসার্চে আগে দেখা গেছে।

৩। অঘোষিত উপহার সবচাইতে বাজে কাজ করেছে। তাই উপহার দেবার সময় (কী ইন্সেন্টিভ দেয়া হচ্ছে) সে ব্যাপারে স্পষ্ট থাকুন। স্পষ্ট উপহার পারফর্মেন্স ১৭% বাড়াতে পারে। অঘোষিত উপহার ৭%  কমাতে পারে। এটাই এই গবেষণা বা বিশ্লেষণ থেকে আলাদা ভাবে জানা যায়।

এই ফাইন্ডিংস উদাহরণ হিসেবে এভাবে বলা যায়, কোন ব্যবসা এমনিতে ১০০ টাকা লাভ করছে। ইন্টারেস্টিং উপহার দিলে তার লাভ ১৭ টাকা বেশী লাভ হতে পারে। আবার অঘোষিত উপহার দিলে ৭ টাকা ক্ষতি হবে, তখন লাভ হবে ৯৩ টাকা।

 

সতর্কতাঃ

যদিও প্রোফাইল থেকে বা পেইজ থেকে সব ফলোয়ার বা ফ্রেন্ডসদের সামনে পোস্ট যায় না (যা আমি প্রথমদিকেই বলেছি), তবুও সাবস্ক্রাইবার হার বের করতে মোট ফলোয়ার বা ফ্রেন্ডস সংখ্যাই বিবেচনা করা হয়েছে।

 

ওয়েব এনালিটিকস টু পয়েন্ট জিরোঃ

গুগলের ডাটা মার্কেটিং ইভানজেলিস্ট এবং বলা যায় আমার ডাটা এনালিসিস যার কাছ থেকে শেখা সেই ওয়ান্ডারফুল ম্যান অভিনাশ কৌশিকের ওয়েব এনালিটিকস টু পয়েন্ট জিরো’র ভূমিকা থেকে  কিছু পড়া যাক এবারঃ

We live in the most data-rich environment on the planet—an environment where numbers, data, math, and analysis should be the foundation of our decisions. We can use data to determine how to market effectively, how to truly connect with our audiences, how to improve the customer experience on our sites, how to invest our meager resources, and how to improve our return on investment, be it getting donations, increasing revenue, or winning elections!

অর্থাৎ, আমরা এমন এক দুনিয়ায় এখন বাস করছি যেখানে প্রচুর ডাটা আছে। এগুলি এনালাইসিস এর মাধ্যমেই আমাদের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। ফেইথ বেইজড, পেইজ ভিউ এবং হিট বেইজড এনালিটিকস এর দিন শেষ। এখন আপনি যদি এনালিস্ট হিসেবে বলেন এতো এতো হিট আছে সাইটে আমি কোম্পানির মালিক হিসেবে তখন বলবো, তাতে কী? আপনার ইনসাইট কী? কনভার্সন রেইট কেমন? মোটকথা, আমার কোম্পানির কি লাভ হচ্ছে এতে?

কপিরাইটঃ অভিনাশ কৌশিক

অভিনাশের আরেকটি কথা একই বই থেকে, If you remember nothing else, remember this: life is about taking action, and if your work is not driving action, you need to stop and reboot.

ওয়েব এনালিসিস এখন এমন হতে হবে, ডাটা ড্রিভেন। খালি রিপোর্টিং নয়।

সাইকোলজি, ইকোনমিক্স বা অন্য বড় বড় ফিল্ড থেকে ইনসাইট এনে আপনি আপনার সাইটে ক্লায়েন্টের আচরণ দেখতে পারেন, তারা কী চায়। কীভাবে আপনি তাদের আরো ভালো সেবা দিতে পারেন।

এখন আর মার্কেটিং এমন না যে আপনি কোনভাবে পণ্য গছিয়ে দেবেন। এখন হচ্ছে লং টার্ম সম্পর্ক তৈরী করা কাস্টমারদের সাথে। যে সম্পর্ক উইন-উইন সম্পর্ক। এবং এর মাধ্যমেই আপনার ইন্টারনেট কোম্পানির গ্রোথ হবে।

 

নাজের নৈতিকতাঃ 

বিহেভিওরাল ইকোনমিক্স এর ইনসাইট ব্যবহার করে যখন মানুষের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করতে চয়েজ আর্কিটেকচার করা হয় তখন তাকে নাজ বলে। উপরে আমি নাজ ব্যবহার করেছি ইনসেন্টিভ দিয়ে। নাজ ব্যবহারের নৈতিকতা হলো যখন আপনারও লাভ এবং অন্যদেরও লাভ যাতে হয়। যখন কারো ক্ষতি হচ্ছে না তখন তা নৈতিক। ড্যান আরিয়ালি বলেন এখানে নাজ হলো প্রযুক্তির নতুন নতুন উপকারী যন্ত্রের মতো, বা চেয়ার টেবিলের মত টুল। যা মানুষের উপকারে লাগে।

ইতিহাসেও নাজের ব্যবহার হয়েছে, অবশ্য নাজ নামে নয়। যেমন একটা উদাহরণ দেয়া যায় ফ্রেডরিক দ্য গ্রেটের। প্রুশিয়ায় তখন চলছে দূর্ভিক্ষ। বিদেশী সৈন্য হানা দিয়ে ফসল নষ্ট করে যায়। ১৭০০ সালের ঘটনা, তখন ইউরোপে দূর্ভিক্ষ হতো নিয়মিত। প্রুশিয়ার রাজা ফ্রেডরিক দ্য গ্রেট ভাবলেন আলু হতে পারে খাদ্যাভাবের সমাধান। আলু প্রচুর জন্মে এবং আলু বাইরের সৈন্যরা নষ্ট করতে পারে না।

আঁকা ও স্বত্ত্বঃ আন্তন গ্র্যাফট।

কিন্তু তৎকালীন সমাজে আলুকে খুব বাজে হিসেবে দেখা হতো। কেউ খেত না।

ফ্রেডরিক চাইলে জোর করে লোকদের আলু খাওয়ানোর চেষ্টা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করলেন না। তার মনে হলো জোর করলে লোকে আলু খাওয়া থেকে আরো সরে যাবে। তিনি বরং আলু ক্ষেতের সামনে সৈন্য বরাদ্দ করে রাখলেন। এবং সৈন্যদের বললেন অসতর্ক ভাবে পাহাড়া দিতে যাতে লোকেরা চুরি করে নিতে পারে।

লোকেরা ভাবল সম্রাট আলু পাহাড়া দেয়াচ্ছেন। তাহলে নিশ্চয়ই আলু ভালো। তারা আলু খাওয়া শুরু করে দিল। দূর্ভিক্ষে তা অনেক সাহায্য করেছিল খাদ্যাভাব কমাতে।

এটাই নাজ, যা ফ্রেডরিক দ্য গ্রেট ব্যবহার করেছিলেন।

একইরকম করেছিলেন ক্যাপ্টেন কুক তার জাহাজে, স্কার্ভি থেকে লোকদের বাঁচাতে। তিনি দেখতে পেয়েছিলেন ডাচ জাহাজে স্কার্ভি হয় না নাবিকদের কারণ তারা বাঁধাকপির একধরনের আচার খায়।

আঁকা ও স্বত্ত্বঃ নাথানিয়েল ড্যান্স-হলেন্ড।

তিনি নিজের জাহাজে বাঁধাকপির আচার আনলেন। কিন্তু নাবিকদের খেতে বাধ্য করলেন না। হঠাৎ এরকম কোন খাবার প্রচলন করলে তারা বেঁকে বসতো। দীর্ঘ সমুদ্র যাত্রায় নাবিকরা বেঁকে বসলে আর উপায় নেই। তাই কুকের নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে কেবল অভিজাতরা খেতে লাগলেন আচার নাবিকদের দেখিয়ে। ফলে পরে যখন সাধারণ নাবিকদের বাঁধাকপির আচার দেয়া হলো, কেউ খেতে আপত্তি করলো না।

যা তাদের স্কার্ভি থেকে বাঁচিয়েছিল।

কিন্তু যখন আপনি নাজ ব্যবহার করবেন অন্যের ক্ষতি করতে তখন না অনৈতিক। এবং ক্ষতি হলে মানুষের সাথে লং টার্ম সম্পর্ক আপনার তৈরী হবে না। ফলে মার্কেটিং এর দিক থেকে দিনশেষে আপনার লসই হবে। কারণ আপনি আপনার কোম্পানি নিয়ে এসেছেন গ্রো করতে, একদিনের ব্যবসা করতে নয়।

 

শেষকথাঃ

আপনি সাবস্ক্রাইব না করে থাকলে এখন করে ফেলুন। এতে নতুন পোস্ট আপডেট পাবেন, ফেইসবুক ডিএক্টিভেট হলে যুক্ত থাকতে পারবেন এবং স্টিফেন কিং এর বুগিম্যান তো পাচ্ছেনই। এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের বই, ভিডিও, অনলাইন কোর্স ইত্যাদি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ন মনে হলে তা আমি সাবস্ক্রাইবারদের মেইল করে দেব মাঝে মাঝে। এবং আরো মজার ব্যাপার হলো, আপনার যদি এই সাইট ও এর লেখা ভালো না লাগে তাহলে যেকোন সময় মাত্র এক ক্লিকে আনসাবস্ক্রাইব করতে পারবেন।