সুলতানে বিউপনিবেশায়ন ভাবনা আছে কি?

সৈয়দ নিজার এর লেখা "ভারতশিল্পের উপনিবেশায়ন ও সুলতানের বিউপনিবেশায়ন ভাবনা" বই নিয়ে আলোচনা। 
এটি প্রকাশ করেছে চৈতন্য প্রকাশন, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারীতে।
 পৃষ্ঠা ১৪৭, দাম ৩৮০।

সুলতানে প্রতিবয়ান

সৈয়দ নিজার তার বই “ভারতশিল্পের উপনিবেশায়ন ও সুলতানের বিউপনিবেশায়ন ভাবনা”তে যে আলোচনাটা উপস্থাপন করেছেন তার ভিত্তি হলো এই ধারণা যে, “আমাদের সভ্যতার ভিত্তি উৎপাদন ব্যবস্থা, গ্রামের প্রান্তিক নর-নারীর উৎপাদনমুখর জীবন।” এক্ষেত্রে বইয়ের প্রথমদিকে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে পশ্চিমারা ভারতশিল্পকে আধ্যাত্মিক নাম দিয়ে ক্রাফট হিসেবে দেখেছিল। দ্বিতীয়ত তিনি দেখিয়েছেন বঙ্গীয় পুনর্জাগরণবাদীরা (যেমন অবন ঠাকুর) যখন জাতীয় পরিচয়ের অনুসন্ধান করেন তখন তারা পশ্চিমা বয়ানের ভিতরেই আবদ্ধ থাকেন। পশ্চিম আমাদের দুর্বল, অলস, কর্মবিমুখ, নারীসুলভ জাতিগোষ্ঠী হিসেবে উপস্থাপন করেছে এবং নিজেদের শাসনের নৈতিক ভিত্তি দানের জন্য প্রমাণ করতে চেয়েছে আমাদের নিজেদের রক্ষা ও শাসনের ক্ষমতা নেই। নিজারের মতে, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন ভারতমাতা ছবি আঁকেন, তখন সেই নারীরূপ করুণাময়ী ও রক্ষণশীল, তাতে আধ্যাত্মিকতা বিদ্যমান, তিনি ‘মেমসাহেব’ নন এবং সক্ষমও নন। তিনি কোমল, প্রতিকূলতায় নিজেকে রক্ষা করে চলেছেন এমন।

ছবিঃ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভারতমাতা (১৯০৫)

এরপরে লেখক বলেন, কিন্তু সুলতানের কৃষাণ-কৃষাণী পেশীবহুল। এই পেশীর মাধ্যমে তিনি প্রকাশ করেন তাদের হাজার বছর ধরে টিকে থাকার মনোবল। এ পেশী তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষমতাকে নির্দেশ করে।

লেখকের মত হলো, সুলতান এই যে বয়ান হাজির করেন, তা পশ্চিম যে আমাদের আধ্যাত্মবাদী ও দুর্বল হিসেবে উপস্থাপন করে, তার প্রতিবয়ান।

কিন্তু, সুলতানের এইসব ছবি লক্ষ করে কেউ যদি এটা মনে করেন, এই ছবিগুলি হচ্ছে পশ্চিম আমাদের কৃষকদের যেভাবে দেখত, তারই বয়ান, তাও ভাবার বিষয় হতে  পারে। কৃষকদের এই অতি পেশীবহুলতা তাদের উৎপাদনের মেশিনের মত উপস্থাপন করে; যেরকম প্ল্যান্টেশনে কাজ করা কৃষক-শ্রমিকদের ব্যাপারে ছিল ইউরোপীয়দের মনোভাব। সুতরাং, প্রতি বয়ান হাজির করতে গিয়ে সুলতান, আরেক পশ্চিমা বয়ানের ভেতরেই আটকে গেলেন নাকী? সুলতানের ছবির এই দিক নিয়ে কবি ও চিত্রশিল্পী ব্রাত্য রাইসু বলেনঃ

সুলতান ছিলেন একটা আইডিয়ায় নিবদ্ধ শিল্পী। কৃষকদের অনেক পেশী ব্যাপারটা কৃষকদেরকে ছোটই করে। কৃষকদেরকে এই বহু-পেশির দ্বারা স্রেফ পশুতে পরিণত করা হইছিল। যেন কৃষকরা হইল উৎপাদনের মেশিন বা টুলস। সেই পেশি-টুলসের মহত্তই আঁকতে গেছেন সুলতানইতর বস্তুবাদীদের শ্রমের উল্লাস!

 

উৎপাদমুখরতা

সৈয়দ নিজার সুলতানের “আমাদের সভ্যতার ভিত্তি উৎপাদন ব্যবস্থা, গ্রামের প্রান্তিক নর-নারীর উৎপাদনমুখর জীবন”কে যদি বি-উপনিবেশায়ন ভাবনা হিসেবে ধরেছেন। কিন্তু এরকম উৎপাদনমুখরতা উপনিবেশীয় উপস্থাপনেও দেখা যায় যেমন ১৮৬৬ সালে প্রকাশিত Rural Life in Bengal: Illustrative of Anglo-Indian Suburban Life বইয়ের ছবিগুলিতে পাওয়া যাবে।

উপরের ছবিটির পরে সুলতানের আঁকা নিচের ছবিটি দেখা যেতে পারে।

 

বই থেকে আরো কয়েকটি ছবি দেখা যায়।

 

এবং সুলতানের ছবিতে একই রকম উৎপাদনমুখরতা উঠে এসেছে। নিচের ছবিগুলি দেখা যাক।

 

সুলতানের কৃষক ভাবনা কি উপনিবেশীয় জ্ঞানাবহের বাইরে ছিল?

সুলতান নিজে কৃষকদের নিয়ে যে ধারণা পোষন করতেন তাও উপনিবেশীয় ধারণা থেকে বের হতে পারল কতটুকু তা ভাবা যেতে পারে। আমিনুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎকারে সুলতান বলেনঃ

…কৃষককে আমি এইভাবে দেখি যে, সে এই সয়েল এর মালিক। সে পরের আশ্রিত হতে পারে না, পরের পদানত হতে জানেনা। তবু কোনদিন প্রতিবাদও করতে জানেনা। আপনি দেখেন এত রাজনীতি রিভোল্ট হয়েছে, কৃষকদের কোন প্রতিবাদ আসেনি।”

সুলতানের এই ধারণা সত্য নয়। অন্তত বঙ্কিমচন্দ্রের বঙ্গদেশের কৃষক প্রবন্ধে আমরা যে কৃষকের ইতিহাসের চিত্র পাই, তাতে তাদের জমিদার ও তার কর্মচারীদের কাছে পদানতই দেখি।

আবার ফকির সন্ন্যাসী নামে যে বিখ্যাত আন্দোলনটি হয়, সেই ফকির সন্ন্যাসীরা কৃষকও ছিলেন। ফলে কৃষকেরা প্রতিবাদ বা বিদ্রোহ করে নি তা নয়। বাস্তবের কৃষকেরা করেছে, কিন্তু সুলতানের শিল্পের কৃষকেরা নয়, ঐ রূপে সুলতান কৃষকদের দেখতে নারাজ।

এছাড়া সুলতানের আইডিয়া নিবদ্ধতার ব্যাপারটা আরো দেখা পাওয়া যায় যখন তিনি ট্রাক্টর বা প্রযুক্তি, বিদেশী জাতের ধান ইত্যাদির বিরোধীতা করেছেন। মানব ইতিহাসের দিক থেকে দেখলে কৃষি শুরুই হয়েছিল পাথুরে মাটি খোঁড়ার হাতিয়ার ইত্যাদি প্রযুক্তি দিয়ে। উপরন্তু, আধুনিক প্রযুক্তি কৃষকদের শ্রম লাঘব করে। কিন্তু এটা সুলতান চান না, তিনি এর তীব্র বিরোধী।

শাহাদুজ্জামানের সাথে সাক্ষাৎকারে সুলতান বলেন,

“হ্যাঁ, দেখতে আসে। ওরা কিন্তু ইনজয় করে। নানা রকম প্রশ্ন করে। বলে, আমরা তো এরকম না, এ রকম আঁকেন কেন? আমি বলি, আমি তোমাদের এ রকম দেখতে চাই তাই এ রকম আঁকি। আমি যে ওদের ভালোবাসি, ওদের কাজের ফোর্সটাকে দেখতে চাই সেটা বুঝতে পারে। বলে হ্যাঁ, এ রকম হলে তো বেশ ভালো হতো। বিশেষ করে দামড়া দুটো দেখে খুব খুশি হয়, বলে, এ রকম দুটো পাওয়া গেলে খুব কষে চষা যেত (সুলতান হাসলেন কিছুক্ষণ) ওদের এই খুশি, এই আশাটা আমার কাছে ইম্পরটেন্ট।”

কিন্তু আয়রনি হলো, বিজ্ঞান যখন প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষকদের কাছে তার ছবি’র ঐ বড় দামড়ার মত শক্তিশালী ট্রাক্টর তুলে দেয়, তখন  সুলতান নাখোশ হন। তিনি তখন এর বিরোধীতা করেন ও বলেন ট্রাক্টরের চাল তিনি খান না। এখানে মূলত তার চিন্তার রোমান্টিকতা অর্থাৎ ভাববাদীতা ধরা পড়ে।

তিনি কৃষকদের নিজ হাতে এভাবেই কাজ করতে দেখতে চান, যেভাবে তার ছবিতে তিনি এঁকেছেন। কৃষকদের উপর শোষনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সুলতান আসলে তিনি যে শৈল্পিক জীবন-পরিবেশ চান, তাই এঁকেছেন। তিনি যদিও বলেছেন, “কৃষককে ভালো রাখতে গিয়েই তো ছবির ধারা বদলে গেল আমার” কিন্তু, তার কাছে যা অশৈল্পিক (যেমন ট্রাক্টর) তার দ্বারা কৃষকের ভালো হলেও তিনি এর বিরোধী। ফলে সুলতানের কৃষক প্রেমের চাইতে নিজের আইডিয়া প্রেমই বড় হয়ে উঠেছে।

সুলতান স্মৃতিকাতর হয়ে এঁকেছেন এসব ছবি, আগেকার কোন এক কালে ছিল গোলা ভরা ধান আর গোয়াল ভরা গরু সেই কল্পিত অতীত সুখস্মৃতি, তিনি বলেন, “কৃষক জেলে ইংরেজ পিরিয়ডে আমরা দেখেছি খুব স্বাস্থ্যবান”; অর্থাৎ, তার আগেকার সময়ে দেখা স্বাস্থ্যবান কৃষক ও জেলেদের ছবি তিনি এঁকেছেন আরো বর্ধিত করে; এবং সেইখানেই তিনি আটকা পড়েছিলেন, নিজের প্রিয় অতীতসুখ-আইডিয়া বা চিন্তাজগতে।

বই

 

সুলতানে ত্রি-বিচ্ছেদায়ন?

আধুনিক সমাজের উৎপাদন ব্যবস্থায় শ্রমিক যে পণ্য উৎপাদন করে  সেই পণ্যের সাথে তার বিচ্ছেদ ঘটে, পন্যটি সে হয়ত দেখতেই পায় না। এছাড়া, পন্য উৎপাদন ব্যবস্থায় কেউ তৈরী করছে এক অংশ, কেউ আরেক অংশ; আগে এই রকম ব্যাপার ছিল না। সম্ভবত রুশো বলেছিলেন পন্য আসলে যে তৈরী করে তার আত্মসত্তার বর্ধিত এক অংশ, ফলে তাদের এই বিচ্ছেদায়ন হলো আত্মসত্তার বিচ্ছেদায়ন।

যখন পশ্চিমারা ভারতশিল্পকে বলল আধ্যাত্মিক, তখন যে জ্ঞানকাঠামো তৈরি হলো সে আবহে আমাদের আত্মসত্তার প্রথম বিচ্ছেদ হলো। দ্বিতীয়ত পুনর্জাগরনবাদীরা যখন পশ্চিমা জ্ঞানাবহ থেকে বের হতে জাতিসত্তার পরিচয় খুঁজলেন, তখন তারা আধ্যাত্মিকতার আরেক ফর্মে তাদের পরিচয় খুঁজলেন, আবার বিচ্ছেদ হলো আত্মসত্তার, লেখকের মতে এটি আত্মসত্তার দ্বিতীয়বার বিচ্ছেদ বা দ্বি-বিচ্ছেদায়ন। লেখক বলেন, সুলতানের আর্টে এই দ্বি-বিচ্ছেদায়ন থেকে বের হবার প্রয়াস দেখা যায়। যদিও সুলতানও ভাবনির্ভর তথাপি আধ্যাত্মিক নন।

কিন্তু দ্বি-বিচ্ছেদায়ন থেকে বের হতে গিয়ে সুলতান আবার পশ্চিমা আরেক ধারণার আবহে গিয়ে পড়লেন বলেই মনে হয়। ফলে প্রথম বিচ্ছেদ, দ্বিতীয় বিচ্ছেদের সাথে এক সুতায় রাখলে, একে কি ত্রি-বিচ্ছেদায়ন বলা যায়?

 

সুলতানেও দ্বৈত চিৎ

 

দ্বৈত চিৎ হলো একইসাথে উপনিবেশীয় চিন্তা থেকে বের হবার আকাঙ্খা এবং উপনিবেশের কাঠামোর প্রভাব, এই দুই পরস্পরবিরোধী চিৎ বা সচেতন চিন্তার প্রবাহ ধারণ করা। লেখক বইতে শামসুর রাহমানের দ্বৈত চিৎ দেখিয়েছেন এবং উদাহরণের সাথে বলেছেন সুলতানের মননে দ্বৈত চিৎ লক্ষ করা যায় না। সুলতানের বৃক্ষরোপণ ছবিটি, যা বইয়েও আছে, সেখানেই সুলতানের দ্বৈত চিৎ এর আভাস মিলে। এই ছবিটিতে বৃক্ষ রোপনরত কৃষকের উপরে যে দুই ডানাওয়ালা এঞ্জেল আছে, তা উপনিবেশীয়। আবার সুলতানের বিষয়বস্তুর চয়নে ও তার শিল্পদর্শনে উপনিবেশীয় প্রভাব থেকে বের হবার প্রবণতা আছে। ফলে সুলতানে দ্বৈত চিৎ নাই তা বলা যাবে না। উপরন্তু, এই ছবিটিই হতে পারে দ্বৈত চিৎ এর দারুণ উদাহরণ।

এছাড়া এঞ্জেলদ্বয় ছবিটিতে একধরনের আধ্যাত্মিকতাও যুক্ত করেছে। যেমন যিশুর মৃত্যু নিয়ে জাত্তো দি বন্দোনে’র আঁকা দি মউর্নিং অফ দ্য ক্রাইস্ট(১৩০৫) ছবিটিতে দেখা যায় উপরে এঞ্জেলদের কান্না।

 

ম্যানারাজিম

সুলতানে পেশী বহুল কৃষক শরীর, রৈখিক পার্সপেক্টিভ না মানা ইত্যাদি ম্যানারিজম ধারার শিল্পকর্ম মনে হয়। তিনি লৌকিক উপাদান নিয়ে ম্যানারিজমের ধারায় ছবি এঁকেছেন। ম্যানারিজম সতের শতকে বিস্তৃতি পাওয়া ইতালির একটি শিল্প ধারা যা রেনেশান্সের পরে শুরু হয়। রেনেশান্স পিরিয়ডের আর্টের স্ট্যাবিলিটি, ভ্যালেন্স, রৈখিক পার্সপেক্টিভ ইত্যাদি ম্যানারিস্ট আর্টিস্টরা মেনে চলতেন না। খান একাডেমী’র লেইট রেনেশান্স এন্ড ম্যানারিজম অংশ থেকেঃ

Mannerism expressed a different kind of spirituality than the Renaissance, which was so heavily focused on naturalism. Mannerism, on the other hand, was more interested in artificiality. 

Joachim Uytewael এর আঁকা মারস এন্ড ভেনাস ডিস্কোভারড বাই দি গডস (১৬০৬-১০) উপরের ছবিটি ম্যানারিস্ট। এছাড়া আরেকটি ছবি দেখা যায়।

পারমিজিয়ানিনো’র মেডোনা উইথ দি লং নেক বা লম্বা গলার মেডোনা (১৫৩৪-১৫৪০)। এখানে তিনি মেডোনার গলা, পা, অবস্থান যা দিয়েছেন তা অস্বাভাবিক। ম্যানারিস্ট আর্টের বিখ্যাত নিদর্শন এটি। সুলতানের পেশীবহুল কৃষাণ-কৃষাণী, ষাড়, রৈখিক পার্সপেক্টিভ না মানা ইত্যাদি ম্যানারিজম দ্বারা প্রভাবিত।

 

সুলতানে নারীরূপ

সুলতানের ছবিতে নারীর রূপ নিয়েও সৈয়দ নিজার তার বক্তব্য হাজির করেছেন বইয়ে। তিনি বলেন, ‘সুলতান নারীকে বলিষ্ট ও দৃঢ় রূপ দান করেছেন, যারা হাজার বছর ধরে নিজ পরিবারের দায়িত্ব নেবার মধ্য দিয়ে মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রেখেছে।’ সুলতান এ অঞ্চলের নারীর রূপ মনে করতেন বলিষ্ট উরু ও নিতম্ব। তার ছবিতেও তা এসেছে।

কিন্তু যেহেতু তার উদ্দেশ্য ছিল টিকে থাকা, উৎপাদনশীলতা ইত্যাদি বুঝানো, তাই তিনি নারীরূপেও পেশীবহুল ম্যানারিজম দেখিয়েছেন। ফলে তা, নারীরূপের চিত্র না হয়ে নারী’র কাজের বা এনার্জির আইডিয়া উপস্থাপন হয়েছে।

নারী’র রূপ হিসেবে মেদবহুলতা দেখানো, পশ্চিমা সৌন্দর্য জগতেও হয়েছে। যেমন, পল গাউগুইনের একটি ছবি দেখা যায়ঃ

পল গাউগুইনের উপরের ছবিতে [আহা অয়ে ফেলি বা আর ইউ জেলাস (১৮৯২)] মেদযুক্ত নারী এসেছে রূপ বা সৌন্দর্যের মাধ্যম হিসেবে।

সৈয়দ নিজার বলেছেন সুলতানের নারী পালযুগের পার্বতীর মত রূপবতী নয়, অজন্তার সেবিকাদের মত কোমল নয়, আবার অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভারতমাতার মত নিভৃতচারী রক্ষাকর্তা রূপেও নয়, বরং কর্মঠ-পরিশ্রমী-বলিষ্ঠ রূপে উপস্থিত। কিন্তু সুলতানের ছবিতে উপস্থিত নারী তো আসলে নারীই নয়, নারীরূপে নারীর এনার্জি।

 

সংযুক্তি ও কৃতজ্ঞতাঃ 

সৈয়দ নিজার বাংলাদেশে বিউপনিবেশায়ন তত্ত্বের নির্মানে কাজ করছেন, এই লেখা’র চিন্তা তার বই” ভারতশিল্পের উপনিবেশায়ন ও সুলতানের বিউপনিবেশায়ন ভাবনা” পড়ার পড়েই এসেছে, বলাবাহুল্য। বইটি নির্ঘন্টসহ প্রায় ১৪৭ পৃষ্ঠার এবং এর প্রথম ৮৭ পৃষ্ঠায় আলোচনা হয়েছে ভারতশিল্পে উপনিবেশের প্রভাব এবং তা কাটানোর তৎপরতার ইতিহাস নিয়ে। ফলে ভারত শিল্প সম্পর্কে জানার জন্য ভালো বই।

কবি ও চিত্রশিল্পী ব্রাত্য রাইসুর মন্তব্যটি নেয়া হয়েছে তার ফেইসবুক স্ট্যাটাস থেকে। শাহাদুজ্জামানের সাথে সুলতানের সাক্ষাৎকারের অংশটি নেয়া হয়েছে “কথা পরম্পরা” বই থেকে। আমিনুর রহমানের সাথে সুলতানের সাক্ষাৎকারের অংশটি নেয়া হয়েছে আমিনুর রহমানের ‘বাংলাদেশের চিত্রকলা ও চিত্রকর’ বই থেকে। এছাড়া ই এম গমব্রিচের “শিল্প কাহিনী” অনুবাদ করেছেন শামসুদ্দিন চৌধুরী, খান একাডেমী শিল্প ইতিহাস বিষয়ক ভিডিওগুলি, উম্বের্তো একো সম্পাদিত “অন বিউটি” – সাহায্য করেছে। রুরাল লাইফ ইন বেঙ্গল বইটির খোঁজ দিয়েছেন চিন্তক এস এম রেজাউল করিম, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা থাকল।