লেখকদের জন্য টিপসঃ এলমোর লিওনার্ড, ফেলুদা , হেলেন ডানমোর, হারুকি মুরাকামি

Elmore Leonard
এলমোর লিওনার্ড , ছবি – noorosha.com

এলমোর লিওনার্ড একজন আমেরিকান ঔপন্যাসিক। ভদ্রলোক লিখেছেন অনেক। সেসবের বিত্তান্ত আপনি তার উইকিপিডিয়া পেজে জানতে পারবেন। সুতরাং, এখানে বলা বাহুল্যতা। আর বাহুল্যতা এড়িয়ে চলা একান্ত কর্তব্য। অতএব, কাজের কথায় চলে যাওয়া যাক। [কারণ দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে লেখা হবে Precise, concise and exact] লেখালেখি নিয়ে তার কয়েকটি টিপস হলোঃ

১। বই কখনোই আবহাওয়ার বর্ননা দিয়ে শুরু করবে না।

২। প্রতিটি চরিত্রের বিস্তারিত বর্ননা দেয়া থেকে বিরত থাকবে।

[এখানে আবার একটা কথা আছে। গোলকধাম রহস্যতে ফেলুদা তোপসেকে বলেছিল – “নতুন চরিত্র যখন আসবে তখন গোড়াতেই তার একটা বর্ননা দিয়ে রাখবি। তুই না দিলে পাঠক নিজেই একটা চেহারা কল্পনা করে নেবে। তারপর হয়ত দেখবে তোর বর্ননার সাথে তার কল্পনার অনেক তফাত।”

ফেলুদা, উইকিপিডিয়া

এই ব্যাপারটাও তাই মাথায় রাখতে হবে। চরিত্রের বিস্তারিত বর্ননা না দিলে একেবারেই না দেয়া ভালো। কিন্তু শুরুতে না দিয়ে মাঝপথে হঠাৎ করে বর্ননা দেয়া শুরু করলে পাঠকের কল্পনার সাথে না মেলার সমস্যাটা থেকে যায়।]

৩। একই কথা বস্তু বা স্থানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

৪। যেসব জায়গা পাঠক “স্কিপ” করে চলে যাবে মনে হয়, সেসব জায়গা বাদ দিবে।

৫। কথ্য বা আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করবে।

 

হেলেন ডানমোর, ছবি - randomhouse.com.au
হেলেন ডানমোর, ছবি – randomhouse.com.au

হেলেন ডানমোর একজন ব্রিটিশ লেখিকা। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক এবং শিশুদের জন্যও লিখে থাকেন। ১৯৫২ সালে তার জন্ম। আমাদের ভাষা আন্দোলনের সাল। এই ভদ্রমহিলা লেখালেখি নিয়ে যা বলেছেন তার মধ্যে কিছু হলোঃ

১। তখন দিনের লেখা শেষ করে দাও, যখন মনে হয় তুমি আরো লিখতে পারবে।

মানে লেখার ইচ্ছা আরো থাকা স্বত্ত্বেও সেদিনের মত লেখা বন্ধ করে দেয়ার কথা বলেছেন তিনি। অর্থাৎ লেখার ইচ্ছা একেবারে শেষ হলেই সে দিনের মত লেখা বন্ধ করব- এমন ধারণা বাদ দেবার পক্ষপাতি তিনি। এটা আর্নেস্ট হেমিংওয়ে করতেন। হারুকী মুরাকামির “হোয়াট আই টক এবাউট হোয়েন আই টক এবাউট রানিং” এ লিখেছিলেন তিনি তার দৌড়ের ক্ষেত্রেও একই পদ্বতি অনুসরন করেন। লেখার ক্ষেত্রেও তিনি সেখানে থেমে যান, যেখানে মনে হয় তিনি সেদিন আরো লিখতে পারবেন। একটা ছন্দের মধ্যে থাকার জন্য এটি খুব দরকারী তিনি মনে করেন।

২। কবিতাকে হৃদয় দিয়ে বুঝতে হবে।

আমি এটাকে অবশ্য কর্তব্য মনে করি। প্রতিটি লেখকের জন্য। ভালো কবিতা হচ্ছে শিল্পের উৎকৃষ্ট বহিঃপ্রকাশ এবং সেসব কবিতা সত্যিকার অনুভবের মাধ্যমে উৎকৃষ্ট গদ্য লেখা সম্ভব। বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে বলা যায় শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার কথা।