‘সবচাইতে র‍্যাডিক্যাল ও বিদ্রোহী যে চয়েজ আপনে পারেন তা হইল আশাবাদী হওয়া’ – গুলিয়ার্মো দেল তরো

এটি অস্কার বিজয়ী ফিল্ম নির্মাতা, পরিচালক, প্রযোজক  গুলিয়ার্মো দেল তরোর একটি লেখা। প্রকাশিত হইছে টাইম ম্যাগাজিনে। এখানে আমি বঙ্গানুবাদ করলাম। কভার ফটো টাইম ম্যাগাজিন থেকে, কাং হি কিম এর আর্টিস্ট।

 

ছবিঃ গুলিয়ার্মো দেল তরো

আশাবাদ হইল র‍্যাডিক্যাল একটা ব্যাপার। এইটা চয়েজ করা কঠিন, কিন্তু চয়েজ হিশাবে তা সাহসী চয়েজ। আমার মনে হয় এখন এইটা সবচাইতে বেশি দরকার। এই হতাশার আবহের দিনগুলিতে। যেমন একটা গাড়ি এমনিতে গ্যারাজে থাকলে হুদাই পইড়া থাকা একটা বড় জিনিশ, কিন্তু রাস্তায়, দূরত্ব পাড়ি দিয়া কোথাও যাইতে হইলে আপনার,  এটাই সবচাইতে বেশি কাজে লাগে।

এখনকার দিনে কেউ যদি নিজেরে বুদ্ধিমান দেখাইতে চায় তাইলে সবচাইতে নিরাপদ পন্থা হইল সন্দেহবাতিকগ্রস্থ হওয়া, মানে সব কিছুরে সন্দেহ করা। যখন আমরা বলি ‘অমুক জিনিশ আমরা বিশ্বাস করি না’ তখন আমাদের জ্ঞানী শোনায়, আবার যখন বলি আমরা ‘অমুক জিনিশ বিশ্বাস করি’ তখন মনে হয় যেন আমরা হইলাম কিছুটা অসৎ।

ইতিহাস আর রূপকথার গল্পগুলি প্রমাণ করছে যে কিছুই আসলে হারাইয়া যায় না। ডেভিড হারাইতে পারে গোলিয়াথরে।  নরম্যান্ডির একটা বিচ বদলাইয়া দিতে পারে যুদ্ধের প্রবাহ। সাহস উলটে দিতে পারে ক্ষমতার মসনদ। এইসব ঘটনাগুলি প্রায়ই দেখা হয় এক্সেপশনাল ঘটনা হিশাবে, কিন্তু আসলে এগুলি এমন নয়। প্রতিদিন আমরা আমাদের চয়েজের দাঁড়িপাল্লায় তৈরি হই- ভালোবাসা এবং ভয়ের মধ্যে কোনটা চয়েজ করবেন, বিশ্বাস না হতাশা, ইত্যাদি। কোন আশাই কখনো খুব ক্ষুদ্র হয় না।

যখন আমাদের দম বন্ধ হইতে থাকে তখন আমরা আশাবাদ নিঃশ্বাসের মত নেই, এটা আমাদের মানব প্রকৃতিতে আছে। ‘যা আছে’ তার মুখের উপর গিয়ে  “কী হওয়া দরকারি” ঘোষণা দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব। আশাবাদ আসলে আনকুল বা আনস্মার্ট না, বরং বিদ্রোহী, সাহসী এবং খুবই গুরুত্বপূর্ন।

আমেরিকান লেখক থিয়োডর স্টারজিওন একবার বলেছিলেন, “যেকোন কিছুর নব্বই ভাগ হচ্ছে আবর্জনা।” এবং আমি বিশ্বাস করি তিনি ঠিক ছিলেন। কিন্তু এই কথা নিশ্চিতভাবে এটা বলে যে, বাকী দশ ভাগের সবই অসাধারণ, এগুলির জন্য আপনি কষ্ট করলেও ভুল হবে না।

তো, এইটা সময় থেকে সময়ান্তরে চলে, চয়েজের পরে চয়েজ, যা আমরা একটি এপিটাফ  অথবা বায়োগ্রাফিতে রাইখা যাবার সিদ্ধান্ত নেই। আপনার চারপাশে দেখেন এখন, এবং সিদ্ধান্ত নেন কোনটাতে রাখবেন।

নিশ্বাস নেন অথবা মরে যান।