নায়ক বা নায়িকার উপরে ক্রাশ

অনেক সময় দেখা যায় কেউ কেউ বলে যে তারা অমুক নায়ক বা নায়িকার উপর ক্রাশ খাইছে। এই ক্রাশ খাওয়ার বঙ্গানুবাদ করলে দাঁড়ায় অমুক নায়ক বা নায়িকারে তার যৌনভাবে ভালো লাগছে। অথবা সরাসরি বললে সে তারে ভোগ করতে চায়। শুনতে খারাপ লাগে। ভোগ শব্দটা কেমন জানি।

মনিকা বেল্লুচ্চি

যাইহোক, কিন্তু ট্র্যাজিডা হইল যে, যেই দর্শক সেই সুন্দর নায়ক বা নায়িকার উপর ক্রাশ খাইল সে কিন্তু তারে পাবে না। অথবা সে যারে পাইবে সে ফিল্মের ঐ নায়ক বা নায়িকার মত হবে না।

সাধারণ হিসাবে না হওয়ার এই সম্ভাবনাটা বেশি।

কিন্তু সেই দর্শকের মনে এই বাস্তব সত্য যদি তীব্রভাবে উপস্থিত থাকে তাহলে ঐ নায়ক বা নায়িকা ঘটিত উচ্ছাসের পরিমান কমে যাবে। সে তখন একে ক্রাশ বলবে না সচেতনে বা অবচেতনে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই বাস্তবতা তার মনে উপস্থিত থাকলেও তার আকাঙ্খা এতই বেশি থাকে যে সে এই বাস্তবতারে উপেক্ষা করে। তখন তার সেই ক্রাশ ঘটিত ভালো লাগা বাড়তে থাকে। এবং বাড়তেই থাকে।

বাড়তে থাকার কারণ হল দুইটা।

এক উল্লিখিত নায়ক বা নায়িকার শারিরিক সৌন্দর্য যার প্রতি সেই দর্শক আকৃষ্ট হয়েছে।

দুই, সেই দর্শকের মনে সেই নায়ক বা নায়িকার আলাদা চরিত্র তৈরী হয়। তার মন যেভাবে চায় সেভাবেই তাকে তৈরী করে নিবে। ফলে সে যে জিনিসগুলো পছন্দ করে ঐসব জিনিসই ঐ ব্যক্তির উপর আরোপ করে। ফলশ্রুতিতে তার ভালোলাগা আরো বাড়তে থাকে।

এখানে অবস্থাটা সিরিয়াস পর্যায়ে চলে যেতে পারে। যদি যায় তাহলে সেই দর্শক যখন তার বাস্তব জীবনের পার্টনার খুঁজে পাবে তখন পার্টনারের ভেতরে থাকা অসম্পূর্নতা সে সহ্য নাও করতে পারে।

দীর্ঘদিনের মানসিক চর্চার ফলে সে অবচেতনে যে ক্যারেক্টার তৈয়ার করছে এর সাথে পার্থক্য এবং পার্টনারের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য তাকে মানসিক যাতনায় ফেলতে পারে।

কবি টি এস এলিয়ট বলেছেন, “Go, go, go, said the bird: human kind cannot bear very much reality.”

যাইহোক, জিজেকের এই ভিডিও দেখা যাইতে পারে, এতে সামান্য আলোকপাত আছে অসম্পূর্নতা নিয়ে।