২০১৬ পড়ার বছর হিসেবে ভালো ছিল। এই বছর আশানুরূপ পড়া হয়েছে। বছরের বিভিন্ন সময়ে পঠিত বই নিয়ে এই ব্লগে লেখা প্রকাশ করেছি। প্রতিদিন ন্যুনতম ২৫ পৃষ্ঠা পড়ার যে নিয়ম, যা ওয়ারেন বাফেটের লেখা থেকে শিখেছিলাম তা প্রয়োগ করতে পারি নি কিছুদিন। কোনদিন পঞ্চাশ পৃষ্ঠা এবং কোনদিন হচ্ছিল শূন্য পৃষ্ঠা। পরে একদিন বুঝতে পারলাম, কোন নিয়ম জানা মানেই শেষ নয়। জানার প্রয়োগটাই গুরুত্বপূর্ন। এবং এই প্রয়োগটাই কঠিন।
অতঃপর সচেতনভাবে প্রয়োগে মন দেই। এবং তাতে এই বছর সফল হওয়া সম্ভব হয়েছে মনে করি।
এই বছর অনেক বই পড়া হয়েছে, শোনা হয়েছে। কোনটা সম্পূর্ন, কোনটা আংশিক। এর মধ্য থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ন বইয়ের একটি তালিকা করেছি এখানে। বইগুলোর ক্রমানুসারে সাজানো হয়েছে তা সবচেয়ে সেরা এবং তার চেয়ে কম সেরা – এই ভিত্তিতে নয়। শুধুমাত্র তালিকার জন্য।
১। ড্যান আরিয়ালির দি অনেস্ট ট্রুথ এবাউট ডিজওনেস্টি
ড্যান আরিয়ালি একজন আমেরিকান সাইকোলজিস্ট। অনেস্ট ট্রুথ এবাউট ডিজওনেস্টি মানুষের সততা, অসততা এবং আচরন নিয়ে সম্পূর্ন নতুন দৃষ্টিভঙ্গী দিতে পেরেছে। এবং এই বিষয়ে আরো জানার আগ্রহ উসকে দিতে পেরেছে। এই বইটি নিয়ে আমি এই ব্লগে প্রকাশ করেছিলাম অসততার মুখোশ উন্মোচন।
২। ড্যানিয়েল কাহনেম্যান এর থিংকিং ফাস্ট এন্ড স্লো
ড্যানিয়েল কাহনেম্যান ও আমোস টভার্স্কি’র কাজের সাথে পরিচয় এই বছরের সবচেয়ে অসাধারন ঘটনাগুলির একটি। মানুষের চিন্তার অযৌক্তিকতা, বায়াস ইত্যাদি বুঝতে এই বইটি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছে। এটি অবশ্য পাঠ্য এবং বার বার পাঠ্য বই। ড্যানি কাহনেম্যানে এবং তার বইয়ের কথা এই ব্লগে প্রকাশিত কিছু লেখায় এসেছে – এক, দুই, ভবিষ্যতে আরো আসবে।
৩। পুওর চার্লি’জ অলমানাক
চার্লি মাঙ্গার, ওয়ারেন বাফেটের বন্ধু ও পার্টনার। বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট। বিলিনিয়ার এবং একজন অসাধারন জ্ঞানী ব্যক্তি। তাঁকে নিয়ে বই পুওর চার্লি’জ অলমানাক। এই বইটি নিয়ে এবং চার্লি মাঙ্গার নিয়ে ভবিষ্যতে এই ব্লগে আরো অনেক লেখা প্রকাশ করার ইচ্ছা রাখি। বই পড়ার প্রতি বা জানার প্রতি আমার বর্তমান আগ্রহ উসকে দেবার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা পালন করেছে চার্লি মাঙ্গারের বক্তব্য/লেখা। পুওর চার্লি’জ অলমানাক জীবন দৃষ্টি বদলে দেবার মত বই। জানা বলতে মাঙ্গার বলেন নিজে জানা ও অন্যকে জানার সুযোগ করে দেয়া। অন্যকে জানার সুযোগ করে দেয়াই তার প্রতি সর্বোচ্চ সাহায্য একজন মানুষ করতে পারে। এই কথা আমার অন্যকে জানানোর উদ্দেশ্যে লেখার অনুপ্রেরনা হিসেবে কাজ করে। এই ব্লগের আরেক মটো, ঘুম থেকে যেরকম হয়ে জেগেছিলেন তার চেয়ে স্মার্ট হয়ে ঘুমোতে যান। এটি চার্লি মাঙ্গারের উক্তি।
৪। গ্যারী ক্লেইনের “সিয়িং হোয়াট আদার’স ডোন্ট”
সাইকোলজিস্ট গ্যারী ক্লেইন ইনসাইট বা অন্তর্দৃষ্টি নিয়ে বইটি লিখেছেন। মানুষ কীভাবে অন্তর্দৃষ্টি অর্জন করে। সাধারণ সাইকোলজিস্টেরা ল্যাবে পরীক্ষার মাধ্যমে একটি ফলাফল পান। কিন্তু গ্যারী ক্লেইন বাস্তব জীবনের ঘটনা, সেসব ঘটনার সাথে যুক্ত মানুষদের সাক্ষাৎকার ইত্যাদির মাধ্যমে তার বইটি লিখেছেন। এই বই নিয়ে আমি এই ব্লগে প্রকাশ করেছিলাম অন্যে যা দেখে না তা দেখার উপায়।
৫। জ্যারেড ডায়মন্ড এর থার্ড শিম্পাঞ্জি
জ্যারেড ডায়মন্ড এর অসাধারণ বই থার্ড শিম্পাঞ্জি। মানুষ ও মানব সভ্যতার ইতিহাস এত অসাধারনভাবে আমি আর পড়ি নি। এটি দৃষ্টিভঙ্গী বদলে দেবার মত বই। এটি মহৎ একটি বই। আমি একে অবশ্যপাঠ্য মনে করি। এটি বুঝতে শেখায় যে পৃথিবীতে আমরা বসবাস করছি তার প্রকৃতি সম্পর্কে, এবং আমাদের নিজেদের প্রজাতি সম্পর্কে। এই বইয়ের একটি ধারনার উপর ভিত্তি করে এই ব্লগে আমি প্রকাশ করেছি আমাদের সিগারেট খাওয়ার কারণ কী? লেখাটি।
৬। নাসিম তালেবের ব্ল্যাক সোয়ান
নাসিম তালেবের ব্ল্যাক সোয়ান আরেকটি দারুণ বই। সেখানে তিনি ন্যারেটিভ ফ্যালাসি নামে একধরনের বিভ্রান্তির প্রসঙ্গ এনেছেন। এনেছেন মেদিওক্রিস্তান ও এক্সট্রিমিস্তানের কথা। যে অনিশ্চিত পৃথিবীতে আমরা বসবাস করি, তার অনিশ্চয়তা নিয়ে এর চেয়ে ভালো বই সম্ভবত আর হয় নি। অভারকনফিডেন্স বা অতি আত্মবিশ্বাস এবং ট্র্যাডিশনাল প্রফেসারী জ্ঞান চর্চার বিরুদ্ধে তালেব অভারকনফিডেন্ট স্টাইলেই লিখেছেন। নাসিম তালেবের এই বই দৃষ্টিভঙ্গী বদলে দেবার মত।
৭। পিটার থিয়েলের জিরো টু ওয়ান
পিটার থিয়েলের জিরো টু ওয়ান স্টার্ট আপ নিয়ে একটি দারুণ বই। বইটি সুখপাঠ্য ও চমৎকার। এর প্রসঙ্গ কয়েকবার এসেছে এই ব্লগে প্রকাশিত নানা লেখায়। যেমন, পিটার থিয়েলের জিরো টু ওয়ান ও টেক উদ্যোক্তাবাজি। এবং ভবিষ্যতেও আসবে। আগামীর দুনিয়াতে টেক তথা ইন্টারনেট প্রযুক্তির গুরুত্ব বাড়বে। যারা ব্যবসা করতে চান, উদ্যোক্তা হতে চান তাদের জন্য অবশ্যপাঠ্য একটি বই পিটার থিয়েলের জিরো টু ওয়ান।
৮। লি কুয়ান ইউঃ দ্য গ্র্যান্ড মাস্টার’স ইনসাইট
এই বইটি যখন আমি পড়েছিলাম, লি কুয়ানের চিন্তায় অভিভূত হয়ে পড়ি। কিছুদিন তার ব্যাপারে মোহাবিষ্টতা কাটে নি। বইটি লি কুয়ানের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার নিয়ে। তিনি নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। এটি আমার পড়তে দারুণ লেগেছে এবং দীর্ঘ একটি লেখা আমি প্রকাশ করি বইটি নিয়েঃ লি কুয়ান ইউঃ দ্য গ্র্যান্ড মাস্টার’স ইনসাইট। এই বইটিকে আমি অবশ্যপাঠ্য মনে করি তাদের জন্য যাদের আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে আগ্রহ আছে এবং যারা উদ্যোক্তা হতে চান।
৯। ম্যান্ডেলা’জ ওয়ে
রিচার্ড স্টেংগেল এর লেখা নেলসন ম্যান্ডেলা বিষয়ক বই। এখানে নেলসন ম্যান্ডেলার অসাধারন কিছু বৈশিষ্ঠ্যের কথা তিনি খুবই সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। এই বইটি পড়তে পড়তে আমার মনে হয়েছিল নেলসন ম্যান্ডেলাই সম্ভবত পৃথিবীর সবচাইতে জ্ঞানী ও বিচক্ষণ রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। লি কুয়ানকে নিয়ে যেরকম দীর্ঘ লেখা প্রকাশ করেছিলাম তেমন ইচ্ছা ছিল গ্রেট মাদিবাকে নিয়েও লেখার। কিন্তু সময়ের অভাবে তা হয় নি। আশা করি আগামী বছর এই বইয়ের উপর ভিত্তি করে ম্যান্ডেলা সম্পর্কে লেখা সম্ভব হবে।
এই বইয়ে পড়েছিলাম নেলসন ম্যান্ডেলা প্রতিদিন দুইশ’টা বুকডন দিতেন। ব্যস্ততার মধ্যে সহজে ব্যায়াম করার জন্য এর চাইতে ভালো উপায় আর কী হতে পারে?
১০। স্টিল লাইক এন আর্টিস্ট
এই বইয়ের লেখক অস্টিন ক্লেয়ন। উপরোক্ত বইগুলোর থেকে এটি তুলনামূলক সহজ এবং মজা করে লেখা। কিন্তু এতে গুরুত্বপূর্ন কিছু কথা আছে। সব আর্টিস্টই অন্যদের দ্বারা প্রভাবিত হন। প্রভাবিত হতে ভয় পাবার কিছু নেই। কেউ খুব চেষ্টা করলেও অন্য কারো মত হুবহু হতে পারবে না। সে আলাদা হবেই। অন্যের কাছ থেকে প্রভাবিত হলে তা স্বীকার করে নেয়া উচিত। এবং তার নাম উল্লেখ করেই একজন এর সাথে নিজের কাজ মিলিয়ে কেউ দাঁড় করাতে পারেন নতুন কিছু। কিন্তু নামোল্লেখ না করলে তা হবে হীনম্মন্যতা ও একধরনের চুরি। আর্টিস্টরা তা করেন না।
১১। ম্যাকায়াভেলীর দ্য প্রিন্স
নিকোলো ম্যাকায়াভেলীর দ্য প্রিন্স আগে একবার পড়া হয়েছিল। এই বছর প্রায় এক মাসের মত সময় নিয়ে আবার পড়া হলো। এটি একটি গুরুত্বপূর্ন বই। উদ্যোক্তাদের জন্য বইটা পড়া জরুরী। ম্যাকায়াভেলী এবং তার দ্য প্রিন্স প্রসঙ্গ এই ব্লগে কয়েকটা লেখায় এসেছে। সামনে হয়ত আরো আসবে। লি কুয়ান ইউ এবং নেলসন ম্যান্ডেলা, দুজনেই কিছু কিছু ব্যাপারে এই বই দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন।
১২। ভারত স্বাধীন হল
মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ভারতীয় উপমহাদেশের একজন গুরুত্বপূর্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ভারতের স্বাধীনতা অর্জনে তিনি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি তার জীবন ও রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোকপাত করেছেন এই বইতে। এখানে জওহরলাল নেহরু, মহাত্মা গান্ধী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন নেতাদের সম্পর্কে মৌলানার মুল্যায়ন আছে। ভারতের স্বাধীন হবার সময় তথা দেশভাগ হবার সময়কালীন পরিস্থিতির বর্ননা আছে। ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস জানতে এই বই পাঠ অবশ্য প্রয়োজনীয়।
১৩। উপমহাদেশের দাঙ্গার গল্প
ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা একটি বিষাক্ত জিনিস। সাম্প্রদায়িক উসকানি, এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পরিণতি কী ভয়াবহ হতে পারে তা সা’দত হাসান মান্টো’র গল্পে পাওয়া যায়। মান্টো’র গল্পের মতোই বাস্তব ঘটনা ঘটেছে দেশভাগের সময়। এই ইতিহাসগুলো আমাদের জানা থাকা প্রয়োজন। যাতে ভবিষ্যতে কখনোই আমরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামাকে প্রশ্রয় না দেই। এগুলোকে ঘৃণা করার মানবিক বোধ তৈরী করার জন্য জাফর আলমের অনুবাদে উপমহাদেশের দাঙ্গার গল্প পাঠ করা যায়। সুখপাঠ্য, অনুবাদে কাঠখোট্টা ভাব একেবারেই নেই। এখানে মান্টো’র গল্পের সাথে আরো কয়েকজন গল্পকারের গল্প উর্দু থেকে অনূদিত হয়েছে বাংলা ভাষায়।
১৪। পাখিদেরও আছে নাকী মন – ইনাম আল হক
ইনাম আল হকের “পাখিদেরও আছে নাকী মন” ভালো একটি বই। এটি সবারই পড়া উচিত। জ্যারেড ডায়মন্ড থার্ড শিম্পাঞ্জির লাস্ট চ্যাপ্টারে বলেছেন, মানবজাতির জন্য দুইটা মহাবিপদ রয়েছে। একটি নিউক্লিয়ার ওয়ার। যা সম্ভবত হবে না। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে বিভিন্ন প্রাণী প্রজাতির বিলুপ্তি। স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক অনেক বেশী হারে প্রাণী বিলুপ্তি হচ্ছে। এর মধ্যে পাখি অন্যতম। আশংকাজনক হারে পাখিরা কমে যাচ্ছে। তা আধুনিক শিল্প বিপ্লবের কারণেই নয়, সেই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে এর শুরু।
ইনাম আল হক পাখিদের নিয়ে লিখেছেন। চমৎকার ভাবে লিখেছেন। এই বই পাখির প্রতি মমতা বাড়িয়ে দেবে। এই বই নিয়ে এই ব্লগে আমি প্রকাশ করেছিলাম ও পাখি! ও কবি! লেখাটি।
১৫। আরণ্যক – বিভূতিভূষন বন্দোপাধ্যায়
আরণ্যক বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ট একটি উপন্যাস। এই উপন্যাসে আছে দারুণ প্রকৃতির বর্ননা। পড়তে পড়তে প্রকৃতির প্রতি, গাছের প্রতি, বন জঙ্গলের প্রতি মমতা বেড়ে যায়। এর মত উপন্যাস বিশ্ব সাহিত্যেও অল্প হয়েছে মনে হয়। এটি অবশ্যপাঠ্য, এবং কয়েক বছর পর পর পুনরায় পাঠ্য। প্রকৃতির প্রতি আমাদের মায়া বাড়ানো দরকার। কারণ প্রকৃতিতেই আমাদের অবস্থান। তা ধ্বংস করে মানবজাতি দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারবে না। বিভূতিভূষনের গোয়েন্দা উপন্যাস মিসমিদের কবচ পড়া হয়েছে এই বছর। এটাও ভালো লেগেছে।
১৬। লাল নীল দীপাবলী
বাংলা সাহিত্যের একটি দারুণ ইতিহাস আছে। তা সহজে জানতে হলে হুমায়ুন আজাদের লাল নীল দীপাবলী পড়া যায়। এটি ছোট একটি বই। এর ভাষা সুন্দর। হুমায়ুন আজাদ সাবলীলভাবে বাংলা সাহিত্যের একটি নাতিদীর্ঘ ইতিহাস বলে গেছেন। এই বইটি পড়ার পর আমি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত মধ্যযুগের শ্রেষ্ট বাংলা কবিতাও পড়ে ফেলি। এই বইটিও আগ্রহীরা দেখতে পারেন। মধ্যযুগের বাংলা শ্রেষ্ট বাংলা কবিতার বইটি নিয়ে এই ব্লগে প্রকাশ করেছিলাম – মধ্যযুগের শ্রেষ্ট কবিতা ও বাঙালীর সৌন্দর্যশাস্ত্র বুঝার চেষ্টা।
১৭। ইস্তাম্বুলঃ একটি শহরের স্মৃতিচারন
অরহান পামুকের লেখা আত্মজীবনীমূলক বই ইস্তাম্বুল। বইটির বাংলা অনুবাদ পড়েছি আমি। অনুবাদ করেছেন সৌরীন নাগ। অনুবাদ পড়তে ও বুঝতে কোন সমস্যা হয় নি। অরহান পামুক বইটিতে লিখেছেন তার ছোটবেলার কথা, তার যৌবনের প্রেম, তার শহর ইস্তাম্বুল, তার প্রিয় লেখক, তার চিত্রশিল্প ও সাহিত্য জীবনের কথা। বইটি গুরুত্বপূর্ন কারণ এর মধ্য দিয়ে তুরস্ক এবং ইস্তাম্বুলকে বুঝার একটি ক্ষেত্র তৈরী হয়।
১৮। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনী তাঁকে জানার জন্য একটি চমৎকার বই। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চিন্তা ও তৎপরতার একটা পরিচয় পাওয়া যায় বইটিতে। উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস জানা ও বুঝার ক্ষেত্রে এই বইটিও গুরুত্বপূর্ন।
১৯। বরণীয় মানুষ, স্মরনীয় বিচার
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা বই। এখানে সক্রেটিস, যিশু খিস্ট, জোয়ান অব আর্ক, গ্যালিলিও, দস্তয়ভস্কি ইত্যাদি বিখ্যাত কিছু মানুষের জীবনের উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটনা উঠে এসেছে। তাদের অন্যায় বিচারের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। বিচারগুলো সম্পর্কে এবং তৎকালীন সময় সম্পর্কে সহজে ধারণা পাওয়া যায় এই বই থেকে। এটি সুখপাঠ্য, সহজ ভাষায় লেখা বই।
২০। মিনিমালিস্ট
মিনিমালিজম নামে শিল্প আন্দোলন হয়েছিল। ১৯৬০ এর দশকে মিনিমালিজম এবং পপ আর্ট মুভমেন্টই ছিল শিল্পের দুই প্রধান আন্দোলন। মিনিমালিস্ট জীবন যাপন মানে একেবারে সাধারণ জীবন যাপন। স্টিভ জবসের কারণে তা বেশ জনপ্রিয়ও হয়ে উঠে। অনেক টেক উদ্যোক্তারা তা অনুসরন করার চেষ্টাও করেছিলেন। মিনিমালিস্ট বইটি একটি বাংলা থ্রিলার উপন্যাস, মাশুদুল হকের ভেন্ট্রিলোকুইস্টের পরের বই। ধর্মীয় কাল্ট থ্রিলার এই উপন্যাসে শিখদের খালিস্তান আন্দোলন, কোহিনূর, দরিয়া ই নূর, খ্রিস্টের ভারত আগমন, ভূস্বর্গ কাশ্মির, প্রাচীন গ্রীক দার্শনিকদের কিছু মতবাদ ইত্যাদি নানাবিদ উপকরণ এসেছে, তা আগ্রহীদের জানার আগ্রহ উসকে দিতে পারে। ফিকশনের মাধ্যমে জানার আগ্রহ জন্মাতে পারলে, তা এক দারুণ বিষয়।
২১। টিক টক
টিক টক জেমস প্যাটারসনের মাইকেল বেনেট সিরিজের একটি বই। হালকা, ও সহজ পাঠ্য। ভারী বই পড়ার ক্লান্তি পেয়ে বসলে এটি পড়া যেতে পারে, এজন্যই তা তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হল। নিউ ইয়র্কে এসেছে এক দুধর্ষ ঘাতক। বোমা ফাটাচ্ছে, মানুষ খুন করছে। চৌকশ ডিটেক্টিভ মাইকেল বেনেটের কাঁধে এই খুনিকে পাকড়াও করার দায়িত্ব। কাহিনী এগিয়ে চলে ছোট ছোট অধ্যায়ে।