মুরাদুল ইসলাম » অবশ্যপাঠ্য » করোনা ভাইরাসের কালে রিস্ক ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা

করোনা ভাইরাসের কালে রিস্ক ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা

রিস্ক বিষয়ে মানুষের বুঝ অনেক কম। এর কারণ রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে কোন প্রকারের শিক্ষাই তাকে দেয়া হয় না। কিন্তু যেহেতু মানুষের লাইফ অনিশ্চিত, মানে প্রায় যেকোন কিছু যেকোন সময়ে ঘটে যেতে পারে তাই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটি রিস্ক ম্যানেজমেন্ট হবার কথা।

স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের যে গণিত শেখানো হয় তা নিশ্চিতির গণিত। যেমন, জ্যামিতি-ত্রিকোণমিতি। কিন্তু অনিশ্চয়তা বা সম্ভাব্যতার গণিত শেখানো হয় না, যেটি হলো স্ট্যাটিসটিক্স। ফলত, এক্সপার্টেরাও রিস্ক বিষয়ে কথা বলতে হিমশিম খান। পাবলিকরে তারা বুঝাতে পারেন না কোন জিনিস কতোটা রিস্কি ও মানুষের কী করা দরকার।

কোবিড-১৯ ক্রাইসিসে আমরা এটি দেখতে পাচ্ছি। উন্নত দেশের এক্সপার্টেরাও ব্যর্থ হয়েছেন।

আমি যে ১০৯ টি মেন্টাল মডেলের লেখা তৈরি করছি সেখানে রিস্ক নিয়ে কয়েকটি মডেল আছে। সেগুলি দিয়ে, এবং অন্যান্য কিছু জিনিসের সাপেক্ষে রিস্ক নিয়ে বলব এই লেখায়।

আমাদের বর্তমান ক্রাইসিসে বলা হচ্ছে সোশ্যাল গেদারিং ঠিক না। বাইরে অনেক মানুষের সাথে আপাতত মেশা ঠিক না। কারন একজনের কাছ থেকে ভাইরাস আরেকজনের কাছে, এভাবে অতি দ্রুত ছড়িয়ে যাবে।

মানুষের রিস্ক ম্যানেজমেন্ট

তো, মানুষ প্রথমে দেখবে, কতজন লোক প্রতিদিন কাজে গেছে বা বাইরে গেছে, এবং কতজনের করোনা হয়েছে। এই বেইজ রেইট সে মনে মনে  হিসাব করে আনুমানিক ধারণা নিবে। সে দেখতে পাবে প্রায় প্রতিদিনই মানুষ কাজে যাচ্ছে। কারোই করোনা হচ্ছে না। অর্থাৎ সে ধরে নিবে এখানে রিস্ক কম।

মানুষ মনে করবে এতে মৃত্যুর হার কম। ফলে এখানে রিস্ক কম।

মানুষ মনে করবে বা করছে, আল্লায় বাঁচাইবা। এটাকে বলে পেইন এভয়ডিং সাইকোলজিক্যাল ডিনায়াল বা উঠপাখি সিন্ড্রোম। উঠপাখি খারাপ অবস্থায় বালির নিচে যেমন মাথা ডুবিয়ে ভাবে ওই জিনিস আর নাই।

রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এখানে কেমন হওয়া উচিত

রিস্ক ম্যানেজমেন্টের প্রথম ধাপ আপনাকে দেখতে হবে আপনার লাভ কি এই কাজ করলে, এবং এর বিপরীতে ঝুঁকি বা ক্ষতি কী হতে পারে।

লাভ হলো কিছু টাকা পাবেন কাজ করে। একদিন বা সাতদিন কাজের টাকা।

লস বা ঝুঁকি, আপনার করোনা হতে পারে। মৃত্যুর সম্ভাবনা আছে। তারো বেশি আপনি আপনার বয়স্কদের কাছে ছড়াতে পারেন বাসায়। তাদের মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেক বেশি। আপনি তাদের হারাতে পারেন।

একদিন বা সাতদিন কাজ করে আপনি টাকা কেন চান। আলটিমেটলি নিজের জিনকে ছড়িয়ে দিতে সন্তান সন্ততির মাধ্যমে, তাদের টিকে থাকা নিশ্চিত করতে ইন ফিউচারে। কিন্তু এখানে ঝুঁকিটা হলো, আপনার জেনেটিক লাইনই কেটে যেতে পারে, অর্থাৎ ডেথ।

রিস্ক ম্যানেজমেন্টের প্রথম মডেল হলো এভয়েড রুইন। আপনাকে ধ্বংস এড়াতে হবে। কারণ ধ্বংস হয়ে গেলে আপনার বাকী কিছু কাজে লাগবে না।

সাকসেসফুল হবার প্রথম কথা হলো আগে আপনারে সারভাইব করতে হবে। এখন আপনি ২০০ টাকা উপার্জন করেন সপ্তাহে, টিকে থাকলে লজিক্যালি ৪০ বছর পরে আপনার সপ্তাহে ২০০০০ টাকা উপার্জনের সম্ভাবনা থাকতে পারে। কিন্তু এখন ৫০০ টাকা করে মরে গেলে, আর কোন সম্ভাবনাই থাকবে না। ইউ আর জাস্ট ফাকিং ডেড।

ঝুঁকি বিষয়ে বিবর্তনের শিক্ষা

অনেক কাল আগে মানুষ জঙ্গলে থাকতো। নিত্য বিপদ ছিল তাদের সঙ্গী। মূল শত্রুদের মধ্যে হিংস্র প্রাণীরা। ধরা যাক দুইজন মানুষ শিকার করতে গিয়ে মুখোমুখি হয়েছে একটা বাঘের।

এখানে বাঁচার স্ট্র্যাটেজি কী?

ঝেড়ে দৌড় দেয়া। যে দিয়েছে সে বেঁচেছে। আমরা তার বংশধর।

যে এখানে ঝুঁকি নিতে গিয়েছে সে ঐ বাঘের পেটেই চলে গিয়েছিল।

এভাবে মানুষের ইতিহাস ও বিবর্তন বার বার এক শিক্ষাই দিয়ে এসেছে, এভয়েড রুইনস।

ঝুঁকি বিষয়ক জায়গায় কনজারভেটিভ থাকা ভালো, বিশেষত যখন এটি প্যানডেমিক। এখানে দড়িকে সাপ মনে করে যে ভুল তা মারাত্মক ভুল না। আপনি হাসাহাসি করতে পারেন। কয়েকজনকে বলতে পারেন ভাই ঐ দড়িকে সাপ মনে করে ডরাইছিলাম। কিন্তু সাপকে দড়ি মনে করে কোলে তুলে নিলে যে ভুল হবে, সাপটি গোখড়া টাইপের সাপ হলে, সেই গল্পটি করার মত সুযোগ আর আপনি পাবেন না।

ঝুকি বিষয়ে এই বিবর্তনের শিক্ষা মানুষ কাজে লাগাচ্ছে না কেন?

বিবর্তনের শিক্ষা মানে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের ভেতরে প্রজন্মান্তরে এটি বহমান। তাহলে কেন মানুষ কোবিড-১৯ এর ক্ষেত্রে এই শিক্ষা কাজে লাগাচ্ছে না? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে বর্তমান বাস্তবতা দেখতে হবে।

প্রথমত মানুষের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে বেইজ রেইট এর আনুমানিক ধারণা। সে ভাবছে সবাই যাচ্ছে কারো হচ্ছে না। কিন্তু এটা পরিসংখ্যানের বেইজ রেইটের ঘটনা নয়। বরং এটি আকস্মিক ইভেন্ট, যা ফ্যাট টেইল ইভেন্ট, এবং কোন নিয়ম না মেনেই সব গ্রাস করতে সক্ষম। যেমন, কোম্পানিতে লাস্ট ৫ দিনে একজনেরো কোবিড-১৯ ছিল না। কিন্তু যেহেতু মিশিগানে কোবিডের রোগি বাড়ছে তাই ৬ তম দিনে তিনজনের কোবিড-১৯ হতে পারে। এরা কোম্পানিতে ১১৯ জনের কোবিড ছড়াতে পারে, এবং এখানে হতে পারে একটা এক্সপোনেনশিয়াল গ্রোথ।

দেখেন গত ৫ দিনে ছিল জিরো, ৬ তম দিনে এক্সপোনেনশিয়াল গ্রোথের কারণে হিউজ একটা নাম্বার পাবেন আপনি কোবিড যুক্ত। মুহুর্তেই ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যাবে।

দ্বিতীয় কারণটি হলো মানুষ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পণা করতে পারে না। মানুষ সকল সময়ে নগদ লাভে বিশ্বাস করে। বিহেভিওরাল একনোমিক্সের একটা বিখ্যাত পরীক্ষা আছে এটা নিয়ে।

কিছু মানুষকে বলা হলো, দুইটা অপশন দিলাম,  আপনি এক আজ ১০০ টাকা পাবেন, আর এক সপ্তাহ পরে ১১২ টাকা পাবেন; কোনটা নিবেন?

মানুষেরা চয়েজ করল আজকে। কারণ মাত্র বারো টাকার জন্য এক সপ্তাহ অপেক্ষা তার কাছে যৌক্তিক লাগে না।

কিন্তু এই মানুষদেরই যখন বলা হলো এক বছর পর ১০০ টাকা পাবেন, ও এক বছর সাত দিন পর ১১২ টাকা, কোনটা নিবেন?

তারা ভাবল এক বছর অপেক্ষা করতে পারছি, তাইলে আর ৭ দিন এমন কি। তারা এক বছর সাত দিন ওয়েট করতে চাইল।

এই পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হলো, মানুষ শর্ট টার্মে চিন্তা করলে বাজে সিদ্ধান্ত নেয়।

কোবিড-১৯ এর ক্ষেত্রে এখন বাইরে যাওয়া কাজে যাওয়ার সিদ্ধান্তে মানুষের নগদ লাভ আছে। এই নগদ লাভ তাকে প্রভাবিত করছে।

নিচের গ্রাফটি দেখেন। এখানে এস এস শর্ট টার্মের রেখা, এলএল লং টার্মের রেখা। (এটি প্রথম বদ অভ্যাস বা আসক্তি নিয়ে একটি লেখায় প্রকাশিত।)

মূল বিন্দু থেকে দেখলে আপনি দেখবেন এলএল দীর্ঘমেয়াদে অনেক উঁচু। কিন্তু একটা জায়গায় এসএস ও এলএল মিলিত হয়েছে। এটাকে ভাবে শর্ট টার্ম লাভ ও লং টার্ম লাভের দ্বন্দ্ব স্থল। এখান থেকে দেখলে এসএস রেখাকে উঁচু দেখা যাচ্ছে!

স্ট্রাইপ করা অংশটিকে বলা হয় ল্যাপস জোন। এই ল্যাপস জোনই হলো সেই জায়গা যেখানে মানুষ প্রভাবিত হয়ে শর্ট টার্মের লাভই বেঁচে নেয় ও দীর্ঘমেয়াদি লাভ ছেড়ে দেয়।

কোবিড-১৯ এর ক্ষেত্রে রিস্ক ম্যানেজমেন্টে মানুষ এই ল্যাপস জোনেই পতিত হয়েছে।

উঠপাখি সিন্ড্রোম বা পেইন এভয়ডিং সাইকোলজিক্যাল ডিনায়ালের সমস্যা

এই খারাপ অবস্থা দেখতে না চাওয়ার পেছনে কাজ করে এর ফল কী হবে সেটা ভাবতে চেষ্টা করা ও মানতে না চাওয়া। দেখা যাচ্ছে এখন পর্যন্ত সব এভিডেন্স মতে এই ভাইরাস মারাত্মক। ইতালির অবস্থা খুবই খারাপ। আমেরিকা ইমারজেন্সি ঘোষণা করেছে। আমেরিকান অফিশিয়ালরা দল মতের উর্ধ্বে উঠে কাজ করতে আহবান করছেন। আমেরিকান সরকার নাগরিকদের চেক পাঠানোর কথা ভাবছে।

এবং সবচাইতে মারাত্মক ভাইরাসের ওষুধ এখনো মিলে নি, এবং এর গ্রোথ এক্সপনেনশিয়াল।

এগুলি হিসাব করলে বুঝতে পারা যায় যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হতে সময় লাগবে। তখন কি আমার কাজ থাকবে? রিসেশন হলে কী অবস্থা হবে? ইত্যাদি অনিশ্চয়তা চলে আসে, নিশ্চিতির কাজ করছি খাচ্ছি’র জীবনে। মানুষ অনিশ্চয়তা নিতে পারে না। ফলে তার কাছে সলুশন জিনিসটা না দেখা।

আল্লায় বাঁচাইবা, বা আল্লাহ আছেন।

এটি ফ্রয়েডের ফেটিশিস্টের অস্বীকারের মত। কারণ সে জানে এটি মেনে নিলেই তাকে মুখোমুখি হতে হবে অস্বস্থিকর কিছু চিন্তার সাথে। অতএব সে ভাবে এটি নাই, বা আল্লাহ আছেন তারে বাঁচাইতে।

এটি ভুল চিন্তা। পৃথিবীর ইতিহাসে কোন মহামারীতেই আল্লাহ নিজে আইসা বাঁচান নাই। মসজিদ ভাঙা হইলেও আল্লা নিজে আসেন না। আল্লা এমন কোন কথাও দেন নাই। বরং আরবের প্রবাদই আছে, আল্লার উপর ভরসা করোট ঠিক আছে, কিন্তু তোমার উঠ বাইন্ধাও রাইখ। নাইলে উঠ হারাইয়া গেলে আল্লারে দোষারূপ কইরা লাভ হবে না।

এখানে আল্লার উপর ভরসা আসলে ভরসা না। এটা হলো পরিস্থিতি অস্বীকার করার মেকানিজম। ভরসার কথা তখন আসে যখন আপনি পদক্ষেপ নিবেন। একজন পদক্ষেপ নিয়ে পরে তিনি বিশ্বাসী হলে ভাবতে পারেন, এখন আমি তো আমার নিয়ন্ত্রণে থাকা কাজটি করেছি, বাকীটা আল্লাহ ভরসা।

অপটিমিজম ও পেসিমিজম এইসব বিপদের দিনগুলিতে

এইসব বিপদের দিনে বাংলাদেশে আল্লার উপর ভরসা করা লোকদের বেশি দেখে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না তাদের আল্লার উপর সত্যিকার ভরসা আছে ভেবে, তাদের এটা রিয়ালিটিরে অস্বীকার করার টেন্ডেন্সি। পশ্চিমা বিশ্বে আমরা এই কোবিড-১৯ ক্রাইসিসে দেখলাম তারা অনেক পেসিমিস্টিক। সম্ভবত এর কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ট্রমা। বা তাদের হারানোর অনেক কিছু আছে। এই যে প্যানিক শুরু হলো, মানুষ গ্রোসারি খালি করে দিয়েছে জিনিসপত্র কিনে, যদিও তাদের সরকার সাথেই সাথে ইমারজেন্সি ঘোষনা করে ফান্ড বের করে ফেলেছে।

একটা চিন্তা এখানে করা যায়, অপটিমিজম না পেসিমিজম কোনটা উন্নতির জন্য বেশি জরুরী।

সাধারণ দেখায় মনে হয় অপটিমিজম।

কিন্তু আমার মনে হয় এটা অপটিমিজমরে না বুঝার কারণে। কারণ অপটিমিজম এপ্রোচ বলবে, যা হবার হবে, আল্লা ভরসা। ফলে অপটিমিজম একটা এন্টি-উন্নতি অবস্থান তৈরি করে।

পেসিমিজম বলবে, না বিপদ আমার হতে পারে, আমার আগে নিরাপত্তার দিক দেখা দরকার। ভরসা করার জন্য আমার কাছে প্রথমে আছে আমার পদক্ষেপ। দ্বিতীয়ত সরকার, কারণ তার দায়িত্ব। সে কাজ না করলে আমার উচিত তাকে কাজ করতে বাধ্য করা।

বাংলাদেশের মানুষ ঝড় বন্যা মোকাবেলা করেছে। তাদের এইসব স্ট্রাগলে টিকার অভিজ্ঞতা আছে। সম্ভবত এই কারণে তাদের মধ্যে একটা অপটিমিজম সব সময় কাজ করে। তাদের কাজ না করা বা আলস্যও এর অংশ, কারণ তারা ধরে নেয় যা হবার হবে।

সাধারণ সর্দিতেই বেশি লোক মারা যায়…

এটা অনেকে বলছেন। এটার বিপরীতে যুক্তি হলো সাধারণ সর্দিতে কি আমেরিকার কখনো ইমারজেন্সি করতে হয়েছে বা ইতালিতে একসাথে এত মৃত্যু বা এইরকম ঘরবন্দী অবস্থা হয়েছে? যদি না হয়ে থাকে তাহলে এটি সাধারণ সর্দির মত না।

কিছু ঘটনা আছে, যেমন বছরে সন্ত্রাসী হামলায় যত লোক মারা যায়, তার চাইতে বহুগুণ বেশি মারা যায় সড়ক দূর্ঘটনায়।

এই তুলনা দিয়ে সন্ত্রাসী হামলাকে হালকা করার চেষ্টা ভূল। কারণ সড়ক ব্যবস্থা অনেকটা মানুষের নিয়ন্ত্রণে। প্রতিনিয়ত আপগ্রেড করার চেষ্টা চলছে। তাও নানা অব্যবস্থাপনা ও ভুলের কারণে সমস্যা হচ্ছে। এটি অব্যবস্থাপনাজনিত ও ভুল জনিত ত্রুটিমূলক কনসিকুয়েন্সেস।

কিন্তু সন্ত্রাসী হামলা আকস্মিক ঘটনা, যা কোন একটা আদর্শ দ্বারা বায়াসড। এটাকে রোড এক্সিডেন্টের মত দেখলে কী হবে? আমরা কি শত শত বছর ধরে সন্ত্রাসী হামলার ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করে রেখেছি যে এভাবে এভাবে চলতে হবে, এবং হঠাত ভুল বা অব্যবস্থাপনায় (বেশিরভাগই অনিচ্ছাকৃতভাবে) দূর্ঘটনা হচ্ছে?

না।

বরং আমাদের জিরো টলারেন্সের সাথে এটিকে হাই রিস্ক ইভেন্ট হিসেবে দেখতে হবে। একে সমূলে বিনাশের চেষ্টা করতে হবে। যেটি অনেক দেশ করেছে বলে হামলা অনেক কম হচ্ছে।

প্রতিটা রিস্ক একই ধরণের রিস্ক না, একই তীব্রতা ও প্রকৃতির রিস্ক না। যেমন ভূমিকম্প ধরণের প্রাকৃতিক দূর্যোগ এক ধরণের রিস্ক, এখানে আমাদের হাতে যেসব রেস্পন্স আছে তা হলো কীভাবে ক্ষতি কমানো যায় ঘটনা ঘটার পরে। সন্ত্রাসী হামলায় কীভাবে এটি আর ঘটতে না দেয়া যায়, এর আইডোলজিক্যাল রুট কীভাবে নিশক্তি করা যায়। সড়ক দূর্ঘটনায় রাস্তাঘাটের ব্যবস্থাপনা ও চালকদের ট্রেনিং, এবং ট্রাফিক ট্রেইনিং, আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দূর্ঘটনা কমানো। ইত্যাদি ইত্যাদি।

রিস্কের বিষয়ে দেখতে হবে কোন জিনিস আমাদের স্টেকে আছে, অর্থাৎ আমাদের ক্ষতির পরিমাণ কী হবে, ও আমাদের নিয়ন্ত্রণে কী কী রেসপন্স আছে।

 

উপসংহারঃ

উপসংহারে আমার কথা হলো, ভ্রাতা ও ভগিনিবৃন্দ, আপনারা কোবিড-১৯ এর দিনগুলিতে মানুষের সংস্পর্শ এড়িয়ে থাকুন। নিরাপদে থাকুন। অন্য সবার কেয়ার নিন, পরিবারের বয়স্কদের। আপনারে সারভাইভ করার চেষ্টাটা অন্তত করতে হবে আগে, বাকিটা ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেবার আগে। যত অপটিমিজমের বায়াসে আক্রান্ত হয়ে, নিজেকে বাস্তবতার কেন্দ্রে রেখে আপনি (এবং আমিও) ভাবেন যে ভাগ্যদেবী আপনার দিকে সর্বদা হাস্যোজ্জল কৃপাদৃষ্টি দিয়ে চেয়ে আছেন, আসলে তা নয়।

 

বি দ্রঃ লেখাটি শেয়ার করুন। এতে মানুষের উপকার হবে। 

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

×
গুরুত্বপূর্ণ
Scroll to Top
বই মডেলিং