বিহেভিওরাল ইকোনমিক্স এবং নাজ

বিহেভিওরাল ইকোনমিক্স বা মনস্তাত্ত্বিক অর্থনীতি

ক্ল্যাসিকাল অর্থনীতিতে ধরা হয় মানুষ র‍্যাশনাল বা যৌক্তিক আচরন করবে। এই ধরে নিয়ে তারা তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু বাস্তব জীবনে মানুষ যৌক্তিক আচরণ করে না। ফলে ক্ল্যাসিকাল অর্থনীতি পুরো কাজ করে না বাস্তব জীবনে। তাই তৈরী হয়েছে এক নতুন ফিল্ড। যেখানে মানুষের মনস্তত্ত্ব এবং ইকোনমিক্সরে মিলানো হয়েছে।

অর্থনীতি আপনার জীবনের সাথে যুক্ত। আপনি দুই টাকা দিয়া একটা চকলেট কিনলেও তা অর্থনীতির ভিতরে পড়ে। অর্থাৎ, মানুষের জীবন হল অর্থনৈতিক জীবন।

আর মানুষ হিসেবে নিজের বা নিজেদের মনস্তত্ত্ব জানাটা তো অতীব দরকারী।

অর্থনীতি+মনস্তত্ত্ব = মনস্তাত্ত্বিক অর্থনীতি ডিল করে মানুষ ও তার অর্থনৈতিক ব্যবহার নিয়ে।

এর সাথে ফিলসফি গভীরভাবে যুক্ত। কারণ বড় দার্শনিকেরা (যেমন কীয়ের্কেগার্ড, ডেভিড হিউম, প্লেটো) এরা ভালো মনস্তাত্ত্বিক ছিলেন। তারা যৌক্তিক বিচারে মানুষের মনস্তত্ত্ব অনেকটা বুঝতে পেরেছিলেন। এসব আদি লেখায় মনস্তাত্ত্বিক অর্থনীতি অনুপ্রেরণা এখন মিলে।

আপনি কাজ করে একশো টাকা আয় করলেন এবং রাস্তায় কুড়িয়ে পেলেন একশো টাকা। ক্ল্যাসিক্যাল অর্থনীতি মতে এই দুই একশো টাকা একইরকম। কিন্তু মনস্তাত্ত্বিক অর্থনীতি ভিন্ন কথা বলে। মানুষের বাস্তব ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করে তারা বলে যে কাজ করে আয় করা একশো টাকা আপনি হিসাব করে ব্যয় করবেন, কিন্তু কুড়িয়ে পাওয়া টাকা আপনি সহজে উড়িয়ে দেবেন। ফলে, যদিও মূল্যমান ক্ল্যাসিকাল অর্থনীতি মতে একই, একশো টাকার দুই নোট তো একই মূল্যমানের, কিন্তু ব্যবহারের দিক দিয়ে তার ভিন্নতা আমাদের সামনে এনে মনস্তাত্ত্বিক অর্থনীতি ভিন্ন সমীকরণ হাজির করে।

 

লস বেশী পেইন দেয়

বিহেভিওরাল অর্থনীতির গডফাদার বলা যায় ড্যানিয়েল কায়নেম্যান, আমোস টিভার্স্কি এবং এবার নোবেল পুরস্কার পাওয়া রিচার্ড থ্যালারকে। কায়নেম্যান এবং টিভার্স্কি প্রসপেক্ট থিওরী ডেভলাপ করেন, যাতে তারা দেখান যে, একই পরিমাণ লাভ এবং লসের মধ্যে লসটা মানুষকে বেশী পেইন দেয়। ৫০ টাকা লাভ হলে যে সুখ হয় ৫০ টাকা লস হলে দুঃখ হয় বহু বেশী। এই অসাধারণ ইনসাইট অনেক কিছুই নতুন ভাবে ভাবতে বাধ্য করে।

 

শেয়ার ইনভেস্টররা দেখা যায় যে শেয়ার লস হচ্ছে তা দীর্ঘ সময় ধরে রাখেন এবং যেটির দাম বাড়ছে তা দ্রুত বিক্রি করে দেন। তাদের এই প্রবণতা প্রসপেক্ট থিওরী দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়। একজন ধরা যাক গ্রামীন ফোনের শেয়ার কিনলেন ১০০০ টাকায়। ১৫০০ টাকা শেয়ারের দাম হলো কয়েকদিন পর। তিনি তা বিক্রি করে দিলেন, আরেকজন কিনলেন ১৫০০ টাকায়।

এই দুইজনের লাভ লসের রেফারেন্স পয়েন্ট কিন্তু ভিন্ন। যিনি ১০০০ টাকায় কিনেছিলেন ১৫০০ টাকায় যাওয়ায় তার লাভ হয়েছে। তিনি মনে করেছেন তা আর বাড়বে না, তাই তিনি বিক্রি করে দিলেন।

অন্যজন ১৫০০ টাকায় কিনলেন, তার মনে হয়েছে এটি আরো বাড়বে। কিন্তু দেখা গেল তা ১৪০০ টাকায় চলে গেল, এখন দ্বিতীয় জন কী করবেন? তার কাছে ইমোশনাল পয়েন্ট টা ১৫০০, তা গ্রামীন ফোন কোম্পানি কি জানে? অবশ্যই জানে না। ফলে তার উচিত হবে তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেয়া। লস কাটিয়ে উঠার জন্য অযৌক্তিক ভাবে, কোন প্রকার তথ্য বিশ্লেষণ না করে, ১৫০০ তে আসলেই বিক্রি করে দেব এমন ধারণা নিয়ে বসে থাকলে তার আরো লস হতে পারে।

 

হিউরিস্টিক্স এন্ড বায়াস

হিউরিস্টিক্স হচ্ছে মানসিক শর্টকার্ট বা কোন একটি সমস্যার একদিক লক্ষ্য করে এবং অন্যান্য দিক উপেক্ষা করে আমাদের ব্রেইন যে শর্টকার্ট পন্থায় সিদ্ধান্ত নেয় তা। যেমন, আধো অন্ধকারে বাঁকা প্যাচ খাওয়া চিকন লাটি দেখলেই মনে হবে সাপ নাকী! অথবা কাউকে বলা হলো পাঁচজন লোকের মাঝে একটি কেক ভাগ করে দিন। তিনি প্রথমেই সমান ভাগ করে পাঁচজনকে দেয়ার কথা ভাববেন, পাঁচজন আলাদা ব্যক্তির চাহিদা বা প্রয়োজনের ব্যাপারে লক্ষ না রেখেই।

অথবা প্লেইন দূর্ঘটনার বিপদ গাড়ি দূর্ঘটনার চাইতে বেশী মনে হওয়া। বা, কোন তথ্য বেশী পাওয়ার ফলে তাকে বেশী গুরুত্বপূর্ন বলে মনে করা। ব্রেইনের হিউরিস্টিক্সের ফলে যে অযৌক্তিক ভুল মানুষের হয় তার নাম কগনিটিভ বায়াস। মজার ব্যাপার হলো, কেউ কগনিটিভ বায়াস নিয়ে জানলেই এগুলি থেকে বের হতে পারে না।

একসম্য এই শর্টকার্ট খুব কাজে দিয়েছে। যেমন আদিকালে যখন জঙ্গলে মানুষ বাস করত। ধরা যাক এক আদি পূর্বপুরুষ তার সন্তানকে নিয়ে জঙ্গলে হাঁটছেন। তিনি সিংহের সামনে এলেন প্রথমবারের মত। সিংহ ছেলেটিকে খেয়ে ফেলল। তখন তিনি গুহায় ফিরে গেলেন এবং অন্য সন্তানদের বললেন সিংহ দেখলেই কিছু না ভেবে দৌড় দিতে হবে।

আবার ধরা যাক, কয়েকবছর পর আরেক ছেলেকে নিয়ে তিনি হাঁটছেন। এবার একটা শকুন উড়ে গেল ছেলের উপর দিয়ে। আর ছেলেটি এমনিতেই হোঁচট খেয়ে পড়ে মারা গেল। আদি পুরুষ এবার গুহায় ফিরলেন। সন্তানদের বললেন শকুন যেন তোমাদের মাথার উপর দিয়ে না যায়, গেলেই মারা পড়বে।

এভাবেই, ধীরে ধীরে মানুষের উন্নতির সাথে সাথে হিউরিস্টিক্স ও বায়াস তার মধ্যে আসন গেড়েছে। তখনকার সমাজে তা টিকে থাকার জন্য বড় সুবিধাই ছিল। সিংহ দেখে যে আদিপুরুষ চিন্তা করতে বসেছিলেন, তিনি সিংহের পেটেই গেছেন, তার সাথের ভাইটি যে কিছু না ভেবে দৌড় দিয়েছিল সে টিকে গেছে। এদিক থেকে দেখলে আমরা অচিন্তকদের উত্তরপুরুষ। আমাদের ব্রেইন চিন্তা এড়িয়ে যেতে চায় যতভাবে পারা যায়। এর ফলেই হিউরিস্টিক্স এবং বায়াসের সাহায্য নেয়।

বায়াসের কিছু উপকারও আছে। যেমন, প্লেন দূর্ঘটনা নিয়ে মানুষের অতি ভয়ের কারণেই এটি কম বিপদজনক হয়েছে দিনে দিনে। একটি লাটিকে সাপ মনে করে সাময়িক ভয় পাওয়ায় লস খুব কম কিন্তু সাপকে লাটি মনে করে ধরে ফেলার লস ভয়াবহ।

 

নাজ কী

নাজ হল চয়েজ আর্কিটেকচার। ধরা যাক, আপনার পিচ্চি ছেলে জুতা পরতে চায় না। তো আপনি কীভাবে তারে জুতা পরাবেন? ইনসেন্টিভ দিতে পারেন, মানে চকলেট দিবো, আইসক্রিম দিবো ইত্যাদি। মাইর দিতে পারেন। এগুলা ট্র্যাডিশনাল পদ্বতি। বুদ্ধিমান হলে আপনি ছেলেরে বলবেন, লাল জুতা না কালোটা পরবা? তখন ছেলে বুঝবে তার স্বাধীনতা আছে, সে একটা জুতা পিরে নিবে। আপনার কাজ সমাধা হল সহজেই।

বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল ফ্যাক্টর আছে মানুষের, যা তার আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। এসব সিরিয়াসলি এখন নিয়েছে ইউকে, ইউরোপ, আমেরিকা ইত্যাদি। পাবলিক পলিসি’র ক্ষেত্রে এসব হিসাব করে সিদ্ধান্ত নেয়া খুবই দরকার। অন্যথায় দেখা যাবে মেয়র রাস্তায় ডাস্টবিন বসিয়েছেন কিন্তু কেউ ব্যবহার করছে  না।

আমাদের দেশ সব দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকা জ্ঞাণবিমুখ দেশ। আমাদের সুস্থ ক্যাপিটালিস্ট সিস্টেমই নাই। আমাদের ব্যবসায়ীরা মাইরা খায় সরাসরিই, ফলে সাইকোলজি মেইন্টেন কইরা খাওয়ার দরকারই পড়ে না।

তবে বড় অনেক ক্ষেত্রে কিন্তু অনেকের বিশাল লস হয়ে যায় কম জানার জন্য। আপনি যদি কম জানেন তাহলে এই কম জানার জন্য আপনাকে মূল্য দিয়ে যেতে হবে প্রতিনিয়ত। যেমন, ধরা যাক বাংলাদেশে নিরপেক্ষ ভাবে ভোট হয়। বিএনপি-জামাত কনজারভেটিভ ও আওয়ামিলীগ লিবারেল পার্টি হইয়া নির্বাচন করতেছে।

ভোট গ্রহণ কেন্দ্র রাখা হল স্কুল কলেজ। এতে কার লাভ?

আওয়ামিলীগের। কারণ নিরপেক্ষ ভোটারেরা ভোট কেন্দ্র স্কুল কলেজ হইলে প্রভাবিত হবে আওয়ামিলীগরে ভোট দেবার দিকে।

ইউকে-ইউএসেতে চার্চেও ভোট হয়। আমাদের দেশে যদি ঐ পরিস্থিতিতে মসজিদ /মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে ভোট সেন্টার থাকে, তাহলে নিরপেক্ষ ভোটারেরা তুলনামূলক কনজারভেটিভ দলকে পছন্দ করতে প্রভাবিত হবে। এম্পিরিক্যাল এভিডেন্স এমন প্রভাবের কথা স্বীকার করে।   সেই এভিডেন্স আছে ওয়ারটন স্কুলের জোনাহ বার্গার ও তার কলিগদের ২০০৮ সালের পেপার কন্টেক্সচুয়াল প্রাইমিংঃ হোয়ার পিপল ভোট এফেক্টস হাউ দে ভোট-এ।

এই ব্যাপারটা কনজারভেটিভ দলের জানা থাকলে তারা বড় লস থেকে বাঁচতে পারবে।

নাজের ক্ষেত্রে এথিকস মেইনটেইন করাও খুবই জরুরী। উইন-উইন সিচুয়েশন যাতে হয়, অন্যথায় তা অন্যায় হবে।

 

একটি নাজ ডিজাইন

ধরুন আপনি একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ম্যানেজার। আপনার অফিস পাঁচ তলা। অনেক লোকের যাতায়াত, সবাই কর্মচারী না। লিফট আছে সিঁড়ি আছে। আপনি চান লোকজন বেশী সিঁড়ি ব্যবহার করুক। কী করবেন?

এই প্রশ্ন আমি ফেইসবুকে ও আমাদের নলেজ শেয়ারিং গ্রুপে করেছিলাম। অনেকে ভিন্ন ভিন্ন উত্তর দিয়েছেন।

এখানে মানুষের কয়েকটি বিষয় খেয়াল করে নাজ ডিজাইন করতে হবে।

 

এক- মানুষ প্রকৃতিগত ভাবে অলস।

জনসন এবং গোল্ডস্টাইনের (২০০৩) রিসার্চ থেকে আমরা জানতে পারি যে, ইউরোপের কিছু দেশে অর্গান ডোনেশনের হার খুবই বেশী। তার তুলনায় দেখা যায় পাশের দেশটিতে অনেক কম। এর কারণ, যেসব দেশে বেশী এইসব দেশে অর্গান অটোমেটিক ডোনেশন হবে এমন নিয়ম। কেউ চাইলে এই ব্যবস্থা থেকে বের হতে পারবে। এজন্য তাকে অফিসে গিয়ে ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে।

আর যেসব দেশে অর্গান ডোনেশনের হার কম, এদের ক্ষেত্রে উলটো। অর্গান ডোনেট করতে হলে এখানে অফিসে যেতে হবে, ফর্ম পূরণ করতে হবে।

 

দুই- মানুষ লস বেশী ভয় পায়। লস এড়িয়ে চলতে চায়।

 

এই দুই মূলনীতির উপর ভিত্তি করে আমরা উক্ত লিফট ব্যবহার বিষয়ে মানুষের পছন্দ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে পারি, যাকে বলা হবে নাজ ডিজাইন। প্রথম লিফটের সামনে একটি মেসেজ ঝুলাতে হবে। একটি গ্র্যাফিক্যাল ছবি দিতে হবে হৃদরোগে মারা যাচ্ছে একজন ব্যক্তি। উল্লেখ করতে হবে প্রতিদিন দেশে কতোজন লোক হৃদরোগে মারা যায়। এমনভাবে এই মেসেজ রাখতে হবে যাতে সবার চোখে পড়ে।

মানুষের মধ্যে লস এভারশন জাগিয়ে তুলতে হবে।

এবং, অতঃপর সিঁড়ি ব্যবহারের কথা বলা যায়।

দ্বিতীয়ত, লিফট ব্যবহার একটু কঠিন করে দিতে হবে। এটা সুইচে করা যেতে পারে, বা এমন জায়গায় রাখতে হবে যেন খুঁজতে হয়। সিঁড়ি রাখতে হবে সামনে। এ কাজ বিল্ডিং ডিজাইনের সময়ই করতে হবে কারণ পরে তা বদলানো যাবে না।

 

নাজে ট্রায়াল এন্ড এরর

নাজের ক্ষেত্রে ট্রায়াল এন্ড এরর মেথডে কাজ করতে হয়। বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করে দেখতে হবে। মেসেজ বদলে বা অন্য কোন ভাবে। এবং সব ক্ষেত্রে ডাটা রাখতে হবে যাতে যেটি কার্যকর তা পুনরায় ব্যবহার করা যায়।

 

নাজে সতর্কতা

নাজ যেহেতু সাইকোলজিক্যাল চয়েক আর্কিটেকচার তাই এখানে সতর্কতার অবকাশ আছে। বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল, সামাজিক ফ্যাক্টর বিবেচনা করে কাজ করতে হয়।

ভারতে একবার প্রাইমারী শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর চেষ্টা করা হলো। কিন্তু দেখা গেল শিক্ষকেরা আরো যেন উদাসীন হলেন। গবেষকেরা দেখলেন এখানে অন্য একটা জিনিস কাজ করছে। যারা শিক্ষক তারা আপার কাস্টের, যারা ছাত্রছাত্রী তারা লোয়ার কাস্টের। সুতরাং, বর্ণবাদী সমাজে আপার কাস্টের শিক্ষকেরা ইচ্ছে করেই লোয়ার কাস্টের ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে চান না।

আরিজোনার সংরক্ষিত ফরেস্ট ন্যাশনাল পারকে লোকজন চুরি করে গাছ কেটে নিয়ে যায়। এটা কমানোর জন্য রবার্ট চিয়ালদিনি মেসেজ টাঙিয়ে দিলেনঃ

“অনেক লোক এই বনের গাছ কেটে নিচ্ছেন, তা বনের পরিবেশ নষ্ট করছে।”

তার উদ্দেশ্য ছিল গাছ কাটা কমানো। কিন্তু দেখা গেল গাছ চুরি আরো ৮% বেড়ে গেছে। এখানে আরেকটি সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার কাজ করেছে, যার নাম সোশ্যাল প্রুফ। সবাই করছে, তার মানে আমিও করতে পারি। আরিয়ালি পরবর্তীতে তার ডিজওনেস্টি বিষয়ক বইয়ে দেখিয়েছিলেন, যদি দেখা যায় সমাজে অসৎ কাজ সবাই করছে এমন ধারণা তৈরী হয়, তাহলে অসৎ কাজ বাড়ে।

 

উপসংহারঃ

নাজ এর নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ কারণ এটি খারাপভাবেও অনেকে ব্যবহার করতে পারে। কেউ কেউ এ ধরনের চয়েজ আর্কিটেকচারকে অনৈতিকও মনে করে থাকেন। যদি উইন-উইন সিচুয়েশন হয়, মানে সবারই লাভ হয় তাহলে ব্যাপারটি সহনীয় হয়ে উঠে। বিশেষত পাবলিক পলিসির ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অপরিসীম।

নাজ ডিজাইনে বিগ পিকচার যারা দেখতে পারেন তারা ভালো করতে পারবেন। অর্থাৎ, বিভিন্ন ফিল্ডের জ্ঞানে যাদের আগ্রহ, এবং যারা সামগ্রিকভাবে কোন একটি ঘটনাকে দেখার ক্ষমতা রাখেন। অন্যথায় হীতে বিপরীত হবার সম্ভাবনা থেকে যায়।