স্লোভানিয়ান দার্শনিক স্যাভোয় জিজেকের টক এট গুগল এর লেকচার অন ভায়োলেন্স শোনলাম গতকাল, এবং আজ আবার। ভায়োলেন্স নিয়ে এই লেকচারে কিছুই নেই, সব ইডিওলজি নিয়ে। এর আগে একবার শুনেছিলাম মনে হয়, বছর দুই আগে।
এইবার শোনার পর ভাবলাম , এর কিছু জিনিস নোট রাখি। এই লেকচারে জিজেক যা বলেছেন, তার অনেক কিছুই তার প্রায় লেকচারেই বলে থাকেন, যেহেতু তার প্রধান এক বিষয় হচ্ছে ইডিওলজি কী, কীভাবে ফাংশন করে তা নিয়ে আলোচনা।
১। ইডিওলজি কী, বা আননৌন নৌন
আমেরিকার ডিফেন্স সেক্রেটারি ডোনাল্ড রামসফেল্ড মার্চ ২০০৩ সালে একটি কথা বলেন।
“কিছু জিনিস আছে যা আমরা জানি যে আমরা জানি। কিছু জিনিস আছে যা আমরা জানি যে আমরা জানি না। আর কিছু জিনিস আছে আমরা জানি না যে আমরা জানি না।”
জিজেক বলেন, রামসফ্যাল্ডের এই কথায় একটা জিনিস বাদ পড়েছে। সেটা হলো, আননৌন নৌন, অর্থাৎ এমন কিছু জিনিস যা আমরা জানি না যে আমরা জানি।
জিজেকের মতে এটা হলো আমাদের অবচেতনে থাকা জানা জিনিস। যা আমাদের কাজ, আমাদের পছন্দ, আমাদের তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করে। এবং এটাই হচ্ছে ইডিওলজি।
[ সংযুক্তি হিসেবে পড়তে পারেন অবচেতনের নিয়ন্ত্রণ এবং ফ্রয়েডের সাইকোএনালিসিসের মূলনীতি]
২। টয়লেট এর সাইকোএনালিসিস ও ইডিওলজি
জর্মন দেশের টয়লেট, এংলো স্যাক্সন (ইংল্যান্ড+আমেরিকা) দেশের টয়লেট আর ফ্রান্সের টয়লেট তিন ধরণের হয়।
জর্মন টয়লেটে গু যাবার পথটি থাকে সামনের দিকে। গু সামনে ভেসে থাকে। যিনি হাগছেন তিনি গু দেখতে পান, পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পারেন তার গু ঠিক আছে কি না।
ট্রাডিশনাল ফ্রেঞ্চ টয়লেটে গু যাবার গর্তটি থাকে পেছনের দিকে। গু পড়বে আর নাই হয়ে যাবে। কোন দেখাদেখি নাই। যত তাড়াতাড়ি পারা যায় নাই করে দেয়াই এর উদ্দেশ্য।
আর আমেরিকান তথা এঙ্গলো স্যাক্সন টয়লেট হচ্ছে উপরোক্ত দুই ধরণের টয়লেটের এক সিন্থেসিস। এখানে এমন ব্যবস্থা থাকে যে, যাতে গু পানিতে ভেসে থাকে। পুরা জায়গাতেই থাকে পানি, ফলে কোথাও গর্ত থাকলো তা গুরুত্বপূর্ন নয়। গু মুক্তভাবে চলাচল করতে পারে।
জিজেকের কথা হলো এই তিন ধরণের টয়লেটের ডিজাইন কেবল তাদের উপযোগীতার জন্যই নয়, বরং এক ধরণের ইডিওলজিক্যাল ফাংশন রয়েছে এর।
প্রায় দুইশ বছর আগে চিন্তকদের মধ্যে এই ধারণা জনপ্রিয় ছিল জার্মানী, ফ্রান্স এবং এঙ্গলো স্যাক্সন এই তিন দেশের চিন্তা তিন ধরণের, ইউরোপিয়ান ট্রিনিটি, এবং তাই ইউরোপিয়ান চিন্তা কাঠামোর মেরুদন্ড। জর্মনরা কনজারভেটিভ, ফ্রেঞ্চরা বিপ্লবী, আর ইংলিশ তথা এঙ্গলো স্যাক্সনরা উপযোগবাদী, তুলনামূলক উদার।
জর্মন কনজারভেটিজম, গু সামনে ভাসবে, ব্যক্তি তা পর্যবেক্ষণ করবেন।
ফ্রেন্স র্যাডিকালিজম, গু পড়ার সাথে সাথেই নাই হয়ে যাবে।
আমেরিকান টয়লেটে, পানিতে গু ভাসা, ভেসে বেড়াবে, তা হচ্ছে ইউটিলিটারিয়ান প্র্যাগমেটিজম বা লিবারালিজম। দেখি কী হয়, থাকুক, ইত্যাদি।
জিজেকের মতে এভাবেই অবচেতন লেভেলে ইডিওলজি কাজ করতে থাকে। এই টয়লেটের ডিজাইন গুলি নিয়ন্ত্রণ করছে তাদের পেছনের মতাদর্শ।
আমাদের জীবনে এইভাবে ইডিওলজি কাজ করে, এর সম্পর্কে আমাদের সচেতন থাকারও দরকার পড়ে না।
৩। নীলস বোর, ঘোড়ার খুর ও ইডিওলজি
ইডিওলজি কাজ করার জন্য একে বিশ্বাস করার দরকার পড়ে না। বিশ্বাস করতেই হবে এমন কোন কথা নেই। জিজেক নীলস বোরের একটা গল্প বলেন। একবার নীলস বোরের এক বন্ধু গিয়ে দেখলেন বোর তার ঘরের প্রবেশ দরজার উপরে ঘোড়ার খুর ঝুলিয়ে রেখেছেন।
ইউরোপে একটি কুসংস্কার প্রচলিত ছিল যে ঘরের প্রবেশদ্বারে ঘোড়ার খুর ঝুলিয়ে রাখলে খারাপ আত্মারা ঘরে প্রবেশ করতে পারে না।
বন্ধু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, বোর, তুমি একজন বিজ্ঞানী মানুষ হয়ে এসব বিশ্বাস করো?
বোর বললেন, বিশ্বাস করেছি তোমারে কে বলল!
বন্ধু বললেন, বিশ্বাস না করলে ঝুলিয়ে রেখেছো কেন?
বোর বললেন, কারণ আমাকে বলা হয়েছে, কেউ এর ক্ষমতায় বিশ্বাস না করলেও এটি কাজ করে।
জিজেকের মতে আধুনিক দুনিয়ায় ইডিওলজি এভাবে কাজ করে। বিশ্বাস করতেই হবে এমন কোন কথা নাই। ইজরাইলের ৬০ থেকে ৭০ ভাগ লোক নিজেদের বলে নাস্তিক বা তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না। পৃথিবীর সবচাইতে বেশী নাস্তিকদের দেশ। কিন্তু ইজরাইল রাষ্ট্র ওয়েস্ট ব্যাংক দখলের নৈতিক ভিত্তি দেয় তাদের ধর্মগ্রন্থ থেকে, এ এই জায়গাটি আমাদের ঈশ্বর দিয়েছেন। অন্যদের (ফিলিস্তিনি আরব) জমি দখল করে তারা বলছে আমাদের ধর্মগ্রন্থে লেখা আছে এটা আমাদের। এখন একজন সহজেই অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করতে পারেন, ১০০ জন লোকের মধ্যে ৬০ জন লোক যেদেশে বিশ্বাসই করে না ঈশ্বরে, সেই দেশ বলছে ঈশ্বর তাদের জমি দিয়েছেন, আর এই যুক্তিতে জমি দখল করে বসে আছে, এটা কীভাবে হচ্ছে?
আপনারা দেখে থাকবেন অনেক কমেডি টিভি সিরিয়ালে হাসির ট্র্যাক থাকে। অভিনয় হচ্ছে এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে হাসির শব্দ আসে। যদিও মনে হতে পারে দর্শকের হাসি আনার জন্য এটি একটি পাভলোভিয়ান ট্রিক। কিন্তু তা নয়। অস্ট্রিয়ান দার্শনিক রবার্ট ফ্যালার এর ইন্টারপ্যাসিভিটি ধারণার উপর ভিত্তি করে জিজেক বলেন, এখানে টিভি দর্শকের হয়ে হাসে। দর্শককে হাসতেও হয় না। ফলে অনুষ্ঠানটি দেখার পরে দর্শকের মনে হয় তিনি অনেক হেসেছেন। হাসার পরে যে রিলিফ পান তিনি, অনুষ্ঠান দেখা শেষ করার পর এমন বোধ হয় তার।
আধুনিক দুনিয়ায় ইডিওলজিও এমন ভাবে ফাংশন করে। আপনাকে তা বিশ্বাস করতে হয় না। আপনার হয়ে অন্যরা বিশ্বাস করলেও হয়।
জিজেক সান্তা ক্লজের উদাহরণ আনেন। বড়দিনের সময় সান্তা ক্লজ ছোট বাচ্চাদের জন্য উপহার আনেন, এমন কথা প্রচলিত আছে পশ্চিমে। তো বাবা মারা রাতে বাচ্চাদের জন্য উপহার রেখে দেন, আর বলেন যে সান্তা ক্লজ দিয়ে গেছে। বাচ্চারাও এটা মেনে নেন।
কিন্তু বাবা মাদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলবেন, বাচ্চারা ওটা বিশ্বাস করে তো, তাই বললাম। বড় হলে এমনিতেই বুঝতে পারবে।
আর বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করলে বলবে, আরে আমরা তো জানি এটা সান্তা ক্লজ দেয় নি। কিন্তু বাবা মা বলছেন তাই তাদের মনে দুঃখ না দেয়ার জন্য, উপহার পাওয়ার জন্য, অভিনয় করলাম।
এখানে বিশ্বাস কেউ করছে না, করার প্রয়োজনও হচ্ছে না, কিন্তু রীতিটি চলছে।
ইজরাইলের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী গোল্ডা মেয়ার নিজেও ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন না। তাকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আপনি কি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন?
তিনি উত্তরে বলেছিলেন, আমি জ্যুইশ পিপলে বিশ্বাস করি, আর জ্যুইশ পিপল ঈশ্বরে বিশ্বাস করে।
এখন ঘটনা হচ্ছে, ইজরাইলিদের মতাদর্শ তথা ওয়েস্ট ব্যাংক ঈশ্বর আমাদের দিয়েছেন, তাই আমাদের বলে দখলে নেয়া, এটি কোন ইহুদি লোকের বিশ্বাস করার আর প্রয়োজন থাকে না। বরং তার হয়ে অন্য ইহুদিরা বিশ্বাস করলেই হচ্ছে। মতাদর্শ তার কাজ চালিয়ে নিতে পারছে।
৪। ইডিওলজি, পর্নো, প্রহিবিশন
পর্নো নিয়ে জিজেকের মত, পর্নো ফিল্মে আপনারা দেখবেন একেবারে বোকার মত কিছু গল্প থাকে। যেকোন সাধারণ দর্শকই বুঝতে পারবে যে এই ধরণের ঘটনা বাস্তবে সম্ভব নয়। কোন কোন ফিল্মে ক্যামেরা ম্যানের সাথে পর্নো অভিনেতা অভিনেত্রীরা ফিল্মেই কথা বলে। এসব ক্ষেত্রে গল্পের ন্যারেটিভ বা বর্ননা আরো কমিয়ে আনা হয়।
এটিই হচ্ছে পর্নো ফিল্মের সেন্সর। এর মাধ্যমেই দর্শকদের বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে এখানে, এটি বাস্তব নয়। কিন্তু এতে দর্শকদের এক্সাইটমেন্ট কমে না। বরং তারা এগুলিই দেখে। বাস্তব ন্যারেটিভ দিয়ে পর্নো ফিল্ম বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, বানিয়েছিলেন একজন ফ্রেঞ্চ পরিচালক। কিন্তু মার্কেটে তা জনপ্রিয় হয় নি।
বিশ্বাস এখানে গুরুত্বপূর্ন হিসেবে কাজ করে না।
জিজেক এরপরে জুডিথ বাটলারের সাথে তার এক ঘটনার কথা বলেন। জুডিথ বাটলার একজন দার্শনিক। একবার জিজেক তাকে বেশ বাজে কিছু কথা বলেন। পরে তিনি অনুতপ্ত হন আর ফোন দিয়ে ক্ষমা চান। ক্ষমা চাইলে বাটলার বলেন, আচ্ছা ঠিক আছে স্ল্যাভোয়। এতে কিছু হয় নি। আমরা ত বন্ধুই।
জিজেক এখানে বলতে চান, জুডিথ বাটলার ‘এতে কিছু হয় নি’ ইত্যাদি বলেছেন তার ক্ষমা চাওয়ার পরেই। এখানেও ইডিওলজি ফাংশন করে। একজন ক্ষমা চাইলে অন্যজন কী বলবে। “না ঠিক আছে, এতে কোন সমস্যা নেই।” এটাই হলো রীতি, ইডিওলজির ফাংশন।
জিজেক জানতে পেরেছিলেন জাপানে বছরে ৪০ দিন ছুটি নেয়া যায়। কিন্তু ২০ দিনের বেশী ছুটি নেয়াকে মারাত্মক খারাপ দেখা হয় যে কেউ নেয় না বিশ দিনের বেশী। কিন্তু ছুটি বিশ দিন করা হয় না। চল্লিশ দিনেরই থাকে। এই স্বাধীনতাটা দেয়া হয় অলিখিত ভাবে একজন বিশদিন ছুটি নিবেন এই শর্তেই।
অনেক দুর্নীতিপ্রবণ দেশেই আইনের ক্ষেত্রে এমন অলিখিত নানা আইন থাকে। যেসব অলিখিত নিয়মেই দুর্নীতি চলে।
কিন্তু সেই অলিখিত নিয়ম কেউ প্রকাশ করে ফেললে তার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।
যেমন ধরা যাক, স্টালিনের শাসনামলে স্টালিন ভাষণ দিচ্ছেন। হঠাৎ একটা লোক উঠে বলল, স্টালিন আপনি একজন বাজে শাসক। স্বৈরাচার। দেশ ধ্বংস করে দিচ্ছেন।
এর পরে আরেকজন লোক এই লোককে বলল, আপনি এসব কী বলছেন? আপনি কি জানেন না আমাদের দেশে রাষ্ট্রপ্রধানের সমালোচনা করলে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড? আমি আপনার বিচার দাবী করছি।
এখানে, কোন লোক আগে শাস্তি পাবে? দ্বিতীয় লোকটি। কারণ সে প্রকাশ্য করে দিয়েছে অলিখিত, কিন্তু সবার জানা নিয়মটি।
দ্বিতীয় লোকটির কথা স্টালিন শাসনের বাইরের রূপটি, মানবিক রূপ যেটা সে বজায় রাখতে চায়, তা ধ্বংস করে দিতে চায়। এর জন্য সে শাস্তি পাবে বেশী।
এছাড়া, আমেরিকান কালচারে একজন ধনী লোক অন্য আরেকজন কম টাকাওয়ালা লোককে হোটেলে খাবার জন্য নিয়ে গেলে, ধনী লোকই টাকা দেয়, কিন্তু দেবার সময় অন্য লোকটিও আমি দিচ্ছি, আমি দেই ইত্যাদি করে থাকেন। এটা তারা দুজনই জানেন অভিনয়। কিন্তু না করলে কেমন দেখায়। এখানেও অলিখিত নিয়মে ইডিওলজি কাজ করে।
৫। কনজিউমারিজম ও ইডিওলজি
পণ্যের মার্কেটিং এর তিনটা মডেল। এক ক্ষেত্রে উপযোগবাদী। যেখানে বলা হয় পণ্যটি কতো ভালো, বা এতে আপনার কী কী উপকার হবে। আপনি কিনের ঐ উপযোগীতাটির জন্যই। বার্গার কিনলেন ক্ষুধা নিবারণের জন্যই।
দ্বিতীয় ক্ষেত্রে, সোশ্যাল সিগনালিং। অর্থাৎ, এটি কিনলে আপনার সামাজিক মান সম্মান কীভাবে বৃদ্ধি পাবে।
এবং তৃতীয় মডেল হচ্ছে, এই পণ্য আপনার ভেতরে থাকা পটেনশিয়াল কাজে লাগাতে সাহায্য করবে। আপনাকে মুক্ত করবে। অনেকটাই সেলফ ইম্প্রুভমেন্ট, আপনাকে আপনার স্বপ্ন বাস্তবতায় নিয়ে যাবে এমন। এটাই পণ্য মার্কেটিং এর আধুনিক মডেল।
এমনকী, এখন পণ্য আপনাকে মানসিকভাবেও শান্তি দিতে চায়। এইজন্যই গ্রীন ফুড বা পণ্য মানুষ কিনে। আপনি গ্রীণ ফুডটি কিনলেন, মানে আপনি কেবল এটি কিনলেন না, আপনি পরিবেশের জন্যও কাজ করলেন। ফলে, আপনার খাওয়াটি বা পণ্য উপভোগটিকেও পরিবেশবাদী কাজ বানিয়ে শান্তি দেয়া হয়।
কোন পণ্যে ৫% যাবে গুয়েতেমালায় দরিদ্র শিশুদের কল্যাণে ইত্যাদিও লেখা থাকে অনেক সময়। এর মাধ্যমে আপনার কনজিউম করাকে দানে রূপান্তরিত করে কনজিউম বা ভোগজনিত অপরাধবোধ দূর করতে চায় কোম্পানি।
জিজেকের মতে ইডিওলজিক্যাল এসব মেসেজের নিচে আরেকটি মেসেজ থাকে, যেমন দে লিভ ফিল্মে ছিল। তাদের মূল বক্তব্য যা দেখা যাচ্ছে, পরিবেশের উপকার বা দরিদ্রদের কল্যাণ তা নয়। এই বক্তব্যের নিচে তাদের মূল বক্তব্য আছে, এবং তা হচ্ছে আপনার অপরাধবোধ দূর করা, আপনাকে মানসিক শান্তি দেয়া ও নিজেদের ব্যবসা করা।