এক কাকডাকা দুপুরে ঘামতে ঘামতে আফজাল সাহেব অনুভব করলেন তার শরীরের চামড়া শক্ত হয়ে যাচ্ছে। তিনি ঘামাচির যন্ত্রণায় চুলকালিচ্ছেন আপন চামড়া অন্যমনস্কভাবে এবং এই সময়েই হঠাৎ তিনি চমকে উঠেন চামড়ার পুরুত্ব দেখে। তার চামড়া গন্ডারের চামড়ার মত পুরো হয়ে গেছে।
আফজাল সাহেব আতঙ্কে প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন, যখন দেখলেন তার চামড়ার রঙ। কালো কালো। তিনি দ্রুত নিজের শরীরের দিকে ভালোমত লক্ষ্য করতেই দেখতে পেলেন তার শরীরের পরিবর্তন। লেজ ও গঁজিয়েছে একটা বেশ।
আতংক, হতাশা এবং বিস্ময়ে আফজাল সাহেবের চোখে জল এল। তিনি বুঝতে পারলেন, তিনি একটি বয়স্ক গুইসাপে পরিণত হয়েছেন।
সারাজীবন গুঁইসাপ পাচারের ব্যবসা করেছেন। এখন শেষ বয়েসে এসে এক উদ্ধত যৌবনা রৌদ্রের দিনে নিজেকে একটি বয়স্ক গুঁইসাপে পরিণত হতে দেখে কী করবেন বুঝে উঠতে পারলেন না আফজাল সাহেব। তিনি হতভম্বের মত দাঁড়িয়ে রইলেন কিছুক্ষণ।
কিন্তু কাছেই একজোড়া পায়ের শব্দে সতর্ক হলেন। তারই সহচর আসলাম এগিয়ে আসছে। আফজাল সাহেব ভেতর থেকে পালানোর তাগিদ অনুভব করলেন। কারণ আসলাম দেখলে আর রক্ষা নেই। গুঁইসাপ দেখা মাত্রই মেরে ফেলে বস্তায় ভরে নিয়ে যাবে। গুঁইসাপের রূপে আফজাল সাহেব কে এখন কে চিনবে আর।
আফজাল সাহেব প্রাণের ভয়ে পালাতে শুরু করলেন। আর অনুভব করতে লাগলেন গুঁইসাপেরা এতদিন তার ভয়ে এভাবেই পালাত।
ছবিঃ এই গুঁইসাপ কে মারা হয়েছে আমাদের গ্রামে। আগে গ্রামে অনেক গুঁইসাপ দেখা যেত। এখন কমে গেছে। এইসব গুঁইসাপেরা নিরীহ এবং উপকারী প্রাণী। এরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এই পৃথিবীতে সবার বাঁচার অধিকার আছে। এইসব নিরীহ প্রাণী হত্যা বন্ধের জন্য আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। যারা অজ্ঞতার কারণে এদের হত্যা করেন তাদের বুঝাতে হবে এইসব প্রাণীদের গুরুত্ব। আর যারা পাচারের উদ্দেশ্যে হত্যা করেন, তাদের ঠেকাতে হবে।
*ছবিক্রেডিট- তারেক।