পারসুয়েশন সাইকোলজির মূলকথা বা মানুষকে প্রভাবিত করার মূলসূত্র

আমি যখন ছোট ছিলাম তখন দুনিয়া সম্পর্কে আমার ভিউ ছিল এটি খুব ভালো জায়গা, মানুষেরা খুব ভালো ইত্যাদি। এরপরে ধারণা জন্মে যে দুনিয়া ভালো, তবে সেখানে খারাপ মানুষেরাও থাকে, কিন্তু ভালোরা খারাপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন ও শেষপর্যন্ত জিত হয় ভালোর।

এরওপরে, ধারণা আবার বদলে যায়। এবার হয় যে, দুনিয়া খুবই জটিল। এখানে মানুষ তার স্বার্থ দেখে কাজ করে। ভালো মন্দের কনসেপ্ট অবস্থার প্রেক্ষিতে এতোই জটিল হয়ে পড়ে যে কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ তা সহজে বুঝা যায় না। ভালো মানুষ ও খারাপ মানুষের ভাগ বিভাজনও আর সহজ হয় না।

আপনারো এরকম বা প্রায় এরকম ধারণা ছিল ভাবছেন? সম্ভবত প্রায় সবারই একইরকম ছিল, ও পরে শেষটায় তৃতীয় স্তরে এসে পৌছেছে। এই জায়গায় দুনিয়াকে ভালো বা মন্দ হিসেবে চিহ্নিত করাটা আর সহজ কোন কাজ হিসেবে থাকে না।

পারসুয়েশনের সাইকোলজিতে আমি আগ্রহী। এ নিয়ে সাইটে লিখছি।

পারসুয়েশনের সহজ মানে করলে দাঁড়ায় কাউকে ফোর্স প্রয়োগ ছাড়া কোন কিছু করতে প্রভাবিত করা।

আমার একটি ব্যাগ আছে, আমি বিক্রি করতে চাই। বিভিন্ন কথা বলে আমি ব্যাগটি আগ্রহী ক্রেতার কাছে বিক্রি করলাম, এটা পারসুয়েশন।

আমি একজন রাজনীতিবিদ, আমি পলিটিক্যাল ক্যাপিটাল তথা আস্থা বিশ্বাস অর্জন করতে চাই। নির্বাচনে জিততে চাই। এর জন্য আমি আমার নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আসলাম। বক্তৃতা দিলাম। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওতে কথা বললাম। এগুলির মাধ্যমে আমাকে ভোট যেন তারা দেন এর জন্য ভোটারদের প্রভাবিত করলাম। এটি পারসুয়েশন।

আম একজন কন ম্যান। রাস্তায় বেরিয়ে অচেনা লোকের সাথে নানা কথা বলে তাকে প্রভাবিত করে তার মানিব্যাগ নিয়ে নিলাম। এটাও পারসুয়েশন।

আমি একজন পিতা। আমার ছেলে মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে। সে পথ থেকে ফেরানোর জন্য তাকে আমি নানা কথা বলে প্রভাবিত করে ক্রিয়েটিভ কিছু কাজে নিয়ে গেলাম। এটাও পারসুয়েশন।

আমি একজন ছিনতাইকারী। রাস্তায় একজন লোকের পিস্তল ঠেকিয়ে তার সমস্ত জীবনের অর্জন নিয়ে গেলাম মুহুর্তের মধ্যে, এটা পারসুয়েশন নয়।

অর্থাৎ, পারসুয়েশন একধরনের ম্যানিপুলেশন, ইনফ্লুয়েন্স, কিন্তু ফোর্স প্রয়োগ নয়।

ম্যানিপুলেশনের খারাপ অর্থ আছে। পক্ষান্তরে প্রভাবিত করাটা পজেটিভ। দুইটাই পারসুয়েশনের মধ্যে পড়ে।

মধ্যযুগে ইউরোপিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে লিবারেল আর্টসের একটি মূল বিষয় হিসেবে পারসুয়েশন পড়ানো হতো। তখনকার সময় সকল শিক্ষিত মানুষের এসংস্লিষ্ট শিক্ষা অর্জন করতে হতো। আধুনিক কালে পারসুয়েশন শব্দটি বেশি ব্যবহৃত হতে দেখা যায় বিজ্ঞাপন বাণিজ্যে।

মানুষ অযৌক্তিক প্রাণী। তার মস্তিষ্কের কিছু সীমাবদ্বতা আছে রিয়েলিটি দেখার ক্ষেত্রে। এই সীমাবদ্বতাগুলি কাজে লাগিয়েই তাকে প্রভাবিত করা হয়।

এটি কোন নতুন জ্ঞান নয়। সেই সৃষ্টির আদিকাল থেকেই মানুষ এটিতে অভ্যস্ত। আদম ও হাওয়া বেহেশতে ছিলেন ভালোই, শয়তান তাদের গন্দম ফল খেতে প্রলুব্ধ করেছিল। শয়তান সেই প্রথম পারসুয়েডর।

সুতরাং, একে পারসুয়েশন না বলে বলা ভালো মানুষের পরস্পর যোগাযোগের প্রাকৃতিক উপায়। আর পারুসুয়েশনের স্টাডি হলো সেই উপায় সম্পর্কে জানা, এটিকে আরো কার্যকর করা, নৈতিক করা, ও এর খারাপ দিক সম্পর্কে অবহিত থাকা।

পারসুয়েশন সম্পর্কে আপনার জ্ঞান থাকলে এবং এটি ব্যবহারের বুদ্ধি থাকলে আপনি আপনার ভালো কাজে লোকদের প্রভাবিত করতে পারবেন। আর খারাপ কাজে কেউ প্রভাবিত করছে দেখলে তা বুঝতে পারবেন।

ধরতে পারেন, পারসুয়েশনই ছিল আদি দুনিয়ার ম্যাজিক, যাকে বলা হতো যাদুবিদ্যা। মানুষ যাদুর গালিচায় চড়ে বাতাসে উড়ে চলে যায় দেশ থেকে দেশান্তরে, এটাই একমাত্র যাদু না। আলাদিনের প্রদীপ ঘষলে জ্বিন বেরিয়ে আসে, এটাই একমাত্র যাদু না।

একজন নেতা তার নেতৃত্ব দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে রাস্তায় নামিয়ে আনলো, রক্তগঙ্গা বইল, মানুষ বেগোরে প্রাণ দিল তার কথা শোনে, এক ভবিষ্যত স্বপ্নের দিকে উদ্বাহু হয়ে – এটা কি কম বড় যাদু?

বা একেকটা ধর্ম, কোটি কোটি মানুষ বিশ্বাস করে আসছে হাজার বছর ধরে। এগুলির প্রবক্তারা কি কম শক্তিশালী, যারা বক্তৃতায়, তাদের কথায় এমন পারসুয়েসিভ পাওয়ার রাখতেন যে, এতোদিন পরেও মানুষ তাদের কথাগুলি কমবেশি মেনে চলেছে?

পারসুয়েশনই হলো সকল মার্কেটিং এর মূল। সকল নেতৃত্বের গুঢ় তত্ত্ব।

জিনিসটা ধরেন একটা তলোয়ার, বা ম্যাজিক। আপনি কীভাবে ব্যবহার করবেন তার উপর নির্ভর করেই এর ভালো মন্দ। তলোয়ার দিয়ে অত্যাচারী হয়ে মানুষ খুন করা যায় আবার সেভেন সামুরাইয়ের মতো খারাপ লোকদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায় নিরীহ মানুষদের।

পারসুয়েশনের মূল জিনিসটা কী, হয়ত আপনার মনে এই প্রশ্ন এসেছে এই লেখা পড়তে পড়তে।

মূল জিনিসটা হলো মানব মনস্তত্ত্বের কিছু বেসিক বিষয় আশয়। একেবারে বেসিক। এগুলিকে ধরেই সকল পারসুয়েশনের সূত্র প্রবাহিত।

এমন পাঁচটি মূল বিষয় নিয়ে কথা বলি।

এক – আমাদের স্বপ্নে যারা উৎসাহ দেয়

মানুষের একটি স্বপ্ন থাকে। প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন থাকে। যারা আমাদের স্বপ্নকে উৎসাহ দেয় তাদের আমরা পছন্দ করি।

আপনার ছেলের বা মেয়ের একটি অযৌক্তিক স্বপ্ন আছে ধরা যাক। আপনি নিশ্চিত বুঝতে পারছেন তার নাচার প্রতিভা নেই, তবু সে বড় নাচিয়ে হতে চায়। এটি বুঝতে পেরে আপনি হয়ত তাকে নিরোতসাহিত করলেন। কিন্তু তার এই স্বপ্নকে অন্য কেউ উৎসাহ দিলে সে ঐ ব্যক্তির প্রভাবে পড়ে যাবে।

সাধারণত বাবা মা’রা চান তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত অর্থনৈতিক জীবন যেন নিশ্চিত হয়। এজন্য পাবলো নেরুদার বাবা তাকে লেখতে নিরোতসাহিত করতেন বা শোয়ার্জনেগারের বাবা তাকে বডিবিল্ডার হতে বাঁধা দিয়েছিলেন।

বাবা মা’দের এমন অবস্থা খুব বেঠিক কিছু না, যদি আপনি স্কেলেবল পেশা ও নন স্কেলেবল পেশার পার্থক্যটা বুঝতে পারেন।

আপনার বাবা মা’র স্কিন খেলায় আছে। আপনি তাদের ছেলে বা মেয়ে। আপনার ক্ষতি হলে সরাসরি তাদেরই ক্ষতি।

কিন্তু যারা উৎসাহ দিচ্ছে, তাদের স্কিন খেলায় না থাকলে, অর্থাৎ সেই উপদেশে লাভ বা ক্ষতি হলে তাদের উপর প্রভাব না পড়লে তাদের উপদেশের ব্যাপারে সতর্ক থাকাই যৌক্তিক।

তবে, একথা সত্য অনেক ক্ষেত্রে তুমুল প্রতিভাধর ব্যক্তিকে তার বাবা মা তাদের স্বপ্নের ব্যাপারে নিরোতসাহিত করে থাকেন। কিন্তু আমার মনে হয় এমন ব্যক্তিরা এতে দমে যান না। বরং এটি তাদের আরো বেটার করে তোলে। যারা দমে যান তারা বেশি প্রতিভাধর ছিলেনই না হয়ত।

বাংলাদেশের আব্দুল্লাহ আবু সায়িদের একটা কথা আছে মানুষ বড় হয় তার স্বপ্নের সমান। আবু সায়িদ দেশে শিক্ষিত একটা ক্লাসের কাছে খুবই জনপ্রিয়। শিশু কিশোরদের কাছে আরেক জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। এই দুই সাহিত্য ব্যক্তিত্বের একটা কমন জিনিস হলো দুজনই তাদের অডিয়েন্সের স্বপ্নকে উৎসাহ দেন।

 

দুই – যারা আমাদের ভুলকে জাস্টিফাই করে

প্রতিটি মানুষ ভুল করেছে। আপনি যাদের দেখেন রাস্তাঘাটে, সামাজিক মিডিয়ায়, টিভিতে সিনেমায়, এদের সবাই জীবনে ভুল করেছে। কিন্তু মানুষ তার ভুলের জন্য নিজেকে দায়ী করতে পছন্দ করে না। সে পছন্দ করে এটা ভাবতে যে আসলে সে পরিস্থিতির স্বীকার। আমরা নিজের ভুলকে সবাই মনে করি করার কিছুই ছিল না, ঐ পরিস্থিতিতে পড়েই আমরা এমনটা করেছি। আর অন্যের ভুলের ক্ষেত্রে সহজেই সিদ্ধান্তে পৌছে যাই যে লোকটা খারাপ কাজ করেছে। সাধারণ খারাপ না, মারাত্মক খারাপ।

কেউই যেহেতু তার ভুলের জন্য নিজেকে দায়ী করতে চায় না, জাস্টিফিকেশন চায় তাই যদি কেউ তাদের সেই জাস্টিফিকেশন দেয়, তাহলে সেই ব্যক্তিকে সে পছন্দ করবে। ।

 

তিন – যারা আমাদের ভয় দূর করে

প্রায় প্রত্যেক মানুষেরই ভয় আছে।  আপনি তার ভয় দূর করতে যদি তাকে সাহায্য করেন তাহলে সে আপনাকে পছন্দ করবে।

 

চার – যারা আমাদের সন্দেহের নিশ্চিতি দান করে

প্রত্যেক মানুষেরই কিছু সন্দেহ আছে। আপনি যদি তাদের সন্দেহের পক্ষে প্রমাণ দেন, তাহলে সে আপনাকে পছন্দ করবে। কেউ কেউ মনে করে টুইন টাওয়ার ভাংছে আমেরিকাই, দুনিয়া চালায় ইলুমিনাতি, দুনিয়া আসলে সমতল বা একধরনের সরীসৃপ এলিয়েন মানুষের ভেতরে ঢুকে দুনিয়া চাল্লাচ্ছে ইত্যাদি। আপনি তার সন্দেহের পক্ষে প্রমাণ হাজির করলে সে আপনাকে পছন্দ করবে। কারণ এতে সে মনে করতে থাকে সে ঠিক ছিল, ও সে বুদ্ধিমান।

 

পাঁচ – যারা আমাদের শত্রুর উপর ঢিল ছুঁড়তে আমাদের সাহায্য করে

প্রত্যেকেরই শত্রু থাকে। কারো শত্রু সেক্যুলাররা, কারো শত্রু মৌলবাদীরা, কারো শত্রু ভারত, কারো চীন ইত্যাদি। আদর্শগত শত্রু, ব্যক্তিগত শত্রু। তার শত্রুকে সে আঘাত করতে চায়, ক্ষতি করতে চায়। তার সে কাজে আপনি সাহায্য করলে সে আপনাকে পছন্দ করবে।

এই যে পাঁচটা বিষয়, এগুলি করলে লোকেরা আপনার জন্য যেকোন কিছু করবে। একটি বা সবক’টি।

আপনি খেয়াল করলে দেখবেন সকল জনপ্রিয় নেতা এটা করেছেন। কেউ করেছেন ভালো কাজে, কেউ খারাপ উদ্দেশ্যে। ভালো উদ্দেশ্যের উদাহরণ যদি হয় কোন দেশ স্বাধীন করতে দেশের লোকদের কনভিন্স করে পথে নামানো, তাহলে খারাপ উদ্দেশ্যের উদাহরণ হয় কাল্টের নেতারা, যাদের অনেকে লোকদের ম্যাস সুইসাইড করিয়েছিল।

লোকরঞ্জনবাদী বা পপুলিস্ট রাজনীতি এখন চলছে, তাই এই ধারার নেতাদের কথাবার্তা ও কাজে আপনি উপরোক্ত পাঁচটি বিষয় দেখতে পাবেন স্পষ্টভাবে।

১। তাদের স্বপ্নকে উৎসাহ দেয়া

২। তাদের ব্যর্থতা ও ভুলকে জাস্টিফাই করা

৩। তাদের ভয়কে দূর করা

৪। তাদের সন্দেহগুলিকে কনফার্ম করা

৫। তাদের শত্রুর দিকে ঢিল ছুঁড়তে তাদের সাহায্য করা

পারসুয়েশন নিয়ে লিখতে গিয়ে ব্লেয়ার ওয়ারেন এই পাঁচটিতেই আটকে দিয়েছেন সমস্ত পারসুয়েশনের জ্ঞানকে। ওয়ান সেন্টেন্স পারসুয়েশন কোর্স বইতে।

এই পাঁচ জিনিস যে করবে, লোকজন তাই করবে যা সে বলবে

এটি নতুন জ্ঞান নয় যে লোকজন এখান থেকে শিখে গিয়ে ধান্দাবাজি শুরু করবে। বরং যারা ধান্দাবাজ, তারা কোনও না কোন ভাবে এগুলিই করে।

ব্লেয়ার ওয়ারেন লিখেছিলেন যে,

আপনার পরিবার

বন্ধুবান্ধব

কাস্টমার

এবং প্রায় সবারই এই পাঁচ জিনিসের প্রয়োজন আছে। কাউকে না কাউকে দরকার এই প্রয়োজন মেটানোর জন্য। অন্য কোম্পানি এই প্রয়োজন মেটালে আপনার কাস্টমার ঐ কোম্পানির পণ্যে চলে যাবে। অন্য কেউ আপনার বন্ধুবান্ধব, পরিবারের এই পাঁচ প্রয়োজন মেটালে তারা তারই প্রভাবে কাজ করবে। এখন আপনিই সিদ্ধান্ত নেন যে আপনি এই পাঁচ প্রয়োজন পূরণ করবেন কি না।

এবং আরো বলা যায়, এই প্যাটার্ন ধরে ধরে আপনি এনালাইজ করতে পারবেন কোন সফল বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইন থেকে শুরু করে কোন রাজনৈতিক নেতার প্রচারণা, বা ফেইসবুক হনুর কর্মকাণ্ড।

তখন আপনি আরেকটু এগিয়ে গিয়ে ভাবতে শুরু করতে পারেন সে কীসে আপনাকে পারসুয়েড করতে চাচ্ছে? সেটা কি আপনার জন্য ভালো, নাকি খারাপ?

উপরোক্ত পাঁচ বিষয়ের উপর দাঁড় করানো যায় একটি কাল্পনিক পারসুয়েসিভ মডেলঃ

 

ধরা যাক আপনার দেশের লোকদের এক বড় অংশের মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় চেতনাবোধের শ্রেষ্টত্ব। তারা স্বপ্ন দেখে দেশ থেকে অন্য ধর্মের ত্রিশ চল্লিশ ভাগ লোকদের সরিয়ে দিয়ে বা তাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে রাজত্ব করবে।

আপনি তাদের স্বপ্নটি ধরতে পারলেন ও তাতে উৎসাহ দিতে শুরু করলেন।

আপনার দেশ নিজেদের দোষে নানা সমস্যায় ভুগছে। আপনি দোষ আপনার সমর্থকদের উপর দিলেন না। অর্থাৎ, সেই ধর্ম জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখা লোকদের উপর দিলেন না।

বরং তাদের যে সন্দেহ অন্য ধর্মের লোকেরাই সামাজিক অর্থনৈতিক সমস্যার জন্য দায়ী, আপনি তার স্বপক্ষে প্রমাণ হাজির করতে লাগলেন।

তারা ভয় পায় অন্য ধর্মের লোকেরা দেশ নিয়ে নিবে ও দেশ ভরে ফেলবে নিজেদের সন্তান সন্ততি দ্বারা। আপনি এই ভয়ে প্রথমে উসকানি দিয়ে বাড়ালেন, এবং এরপর এই ভয় দূর করতে নানা আক্রমণাত্মক বক্তৃতা দিলেন ও ভিন্ন ধর্মের লোকদের উপর দমনমূলক ব্যবস্থা নিলেন।

নিয়মিত ভিন্ন ধর্মের লোকদের উপর আক্রমণ করতে চায় আপনার সমর্থকেরা। আপনি সেইসব আক্রমণে উৎসাহ দিলেন। আক্রমণ হলে নিজের হাতে বন্ধ করার ক্ষমতা থাকলেও অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে সাহায্য করলেন।

মানে, পাঁচ বিষয়ই আপনি যথাযথভাবে করে গেলেন। তাহলেই আপনার অনুসারীরা আপনি যা বলবেন তা করবে।

 

পারসুয়েশনের সাইকোলজি নিয়ে অন্যান্য লেখাঃ

১। স্লোগানের সাইকোলজি বা কীভাবে কার্যকর স্লোগান বানাবেন

২। কীভাবে হাই গ্রাউন্ড ম্যানোভার ব্যবহার করে তর্কে জেতা যায়/ টেবিল ঘুরিয়ে দেয়া যায়

৩। বিহেভিওরাল ইকোনমিক্স ও নাজ

৪। নির্বাচনী প্রচারণায় যেভাবে নাজ ব্যবহার করবেন