জীবন, মৃত্যু ও দার্শনিকীকরণ

দার্শনিকীকরণ হইল মৃত্যুরে শেখা

দার্শনীকিকরণ হলো, মৃত্যুরে শেখা। লার্নিং হাউ টু ডাই। সিসেরোর কথা, যেটা সিসেরো সক্রেটিসের মৃত্যুরে আলিঙ্গন করাকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছিলেন। মন্টেইন, একজন ওয়ান্ডারফুল স্টয়িক, ১৬ শতকের ফ্রেঞ্চ দার্শনিক, এসেইস্ট, রেনেসাম্যান এবং আধুনিক স্কেপটিসিজমের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তার প্রবন্ধসমগ্রের নামই তিনি দিয়েছিলেন এটা যে, দার্শনীকিকরণ হলো মৃত্যুরে শেখা।

 মৃত্যুরে তিনি ফ্রিডমের সাথে মিলাইছিলেন, যে ব্যক্তি মৃত্যুরে শিখেছে, সে শিখে গেলো কেমন করে দাস না হতে হয়।

এখানের পয়েন্ট হচ্ছে, মন্টেইন বুঝাতে চান, আমরা যে দাস হই ইমাজিনারি মরাটার ভয়েই হই। অর্থাৎ মরতে চাই না, ফলে দাস হই বা কম্প্রোমাইজ করি।

কিন্তু যে বিগার পিকচার আছে প্রকৃতির, মানে এই দুনিয়া হাজার বছর ধরে চলছে। কার্ল স্যাগান যার ক্ষুদ্রতা বুঝাতে পেল ব্লু ডটের উক্তি করেছিলেন, মন্টেইনের লেখায় বার বার এই জিনিস এসেছে। প্রাচীন স্টোয়িকরা যেটারে বলতেন উপর থেকে সব দেখা।

সক্রেটিসের মৃত্যু ও এরিস্টটলের না-মৃত্যু

অন্যতম একটা বিখ্যাত মৃত্যু হলো সক্রেটিসের মৃত্যু। সক্রেটিসরে পালানোর পথ করে দিতে চেয়েছিলেন তার শিষ্য জেনোফ্যান। কিন্তু সক্রেটিস তা গ্রহণ করেন নি। তিনি মৃত্যুরেই গ্রহণ করলেন। এই গ্রহণ করাটা সবচাইতে বিখ্যাত মৃত্যু যিশুর ক্রুশ বিদ্ধ হবার ঘটনাটির মতোই, যেখানে যিশু এটারে গ্রহণ করেন দুনিয়ার হয়ে।

অনেকে ভাবতে পারেন সক্রেটিস আদর্শ বজায় রেখে মৃত্যুকে বরণ করেছিলেন তাই তার চিন্তা রয়ে গেছে। এই ধারণা ভুল। কারণ, আরো অনেককেই একই ভাবে হেমলক দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল তাদের মতের জন্য। তাদের চিন্তা রয় নি। রয় নি এই কারণে না যে অগুলি দূর্বল ছিল। জড় প্রকৃতির এটা জাজ করার ক্ষমতা থাকে না ভালো ও খারাপ চিন্তা। তাই অনেক সময় দূর্যোগে দুর্বিপাকে ভালো চিন্তারাশিও হারিয়ে যেতে পারে।

সক্রেটিসের মরার সাথে তার চিন্তা রয়ে যাবার সম্পর্ক নেই। বরং বলা যেতে পারে এটি তার চিন্তার গুণে, এবং তার ভাগ্যের গুণে, কারণ তার শক্তিশালী শিষ্যরা ছিলেন।

আদর্শের জন্য মৃত্যুরে আমরা গ্লোরিফাই করলে তা ভুল হবে। নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই – এমন ধারণা অন্যরে প্রাণ দিতে যে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলে, তা ভয়ানক চিন্তা।

৩২৩ বিসিতে আলেকজান্ডার দি গ্রেট এর মৃত্যুর পর এথেন্সে জনমত মেসিডোনের বিরুদ্ধে চলে যায়। সেই সময়ে এরিস্টটলের উপর দেশদ্রোহীতার অভিযোগ আনা হলো আলেকজান্ডারের সাথে ও মেসিডোনিয়ান কোর্টের সাথে তার সম্পর্কের কারণে। এরিস্টটল তখন এথেন্স ছেড়ে চলে যান এবং বলে যান,  এথেনসবাসীকে ফিলোসফির বিরুদ্ধে একই পাপ দুইবার করতে দেয়া ঠিক হবে না।

এরিস্টটলের এই এথেন্স ত্যাগ তাকে বা তার চিন্তাকে ছোট করে না। এইটা বরং তার রিয়ালিস্ট চিন্তার দিকটা দেখায়। যেমন রাফায়েলের আঁকা ফ্রেস্কোতে গুরু প্লেটোর সাথে তার ছবিতে প্লেটো উপরের দিকে দেখাচ্ছিলেন আর এরিস্টটল জমিনের দিকে।

মন্টেইনের মৃত্যু শেখা

মন্টেইন তার লাইফের একটা বড় সময় মৃত্যু ভয়ে ভীত ছিলেন। এটা তখনকার দার্শনিকতার একটা ধারাই ছিল। প্রাচীন দার্শনিকেরা বলে গেছেন মৃত্যুরে স্মরণ করতে। এভাবে মৃত্যু ভয় দূর হবে তারা ভেবেছিলেন। কিন্তু এটি করতে গিয়ে, কারো কারো ক্ষেত্রে মৃত্যু ভয়টা আরো বেড়ে যেত।

যেটা মন্টেইনের ক্ষেত্রে হয়েছিল। এর মধ্যে তার প্রিয় বন্ধু প্লেগে মারা যান। তার বাবা মারা যান। তার ভাই মারা যান একটা টেনিস বলের আঘাতে। মন্টেইন তখন বেশ বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। মৃত্যুর এতো অদ্ভুত আগ্রাসী হস্তক্ষেপ তাকে ভীত করে তোলে।

পরে একটা দূর্ঘটনায় তিনি মৃত্যুর কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিলেন। ঘোড়ায় চড়ে যাচ্ছিলেন, অন্যদিকের আরেকজন আরোহীর সাথে সংঘর্ষ হয়। ছিঁটকে পড়েন। মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়, অজ্ঞান হয়ে যান।

খুবই খারাপ অবস্থা ছিল।

কিন্তু সুস্থ হলে পরে মন্টেইন ভাবলেন আসলে ঐসময়ে তার এতো খারাপ লাগে নি। মনে হচ্ছিল উনি শূন্যে ভেসে যাচ্ছেন। ফলত, মৃত্যু নিয়ে তার ধারণা চেইঞ্জ হয়। তিনি মনে করতে থাকেন মৃত্যু অত ভয়ের কিছুই না।

মৃত্যু এমন জিনিস না যেটা  নিয়ে ভেবে ভেবে মাথা ভারী করতে হবে, মন্টেইন এই সিদ্ধান্তে আসেন।

একবার এক মহিলার স্বামী মারা গেছেন। মহিলা কান্নাকাটি করছেন। মন্টেইন প্রাচীন দার্শনিক এপিকিউরাস থেকে শেখা একটি পদ্বতি প্রয়োগ করলেন। তিনি মহিলার সাথে নানা প্রসঙ্গে আলাপ করতে লাগলেন। আর একটা পর্যায়ে মহিলা ঐসব ব্যাপারেই আগ্রহী হয়ে উঠলেন, তার দুঃখের চিন্তা ছেড়ে।

মন্টেইন এই জিনিসটাকে কেবল দর্শনের ট্রিক হিসাবে মনে করতেন না। বরং, তার চিন্তার একটা মূল জায়গা ছিল এটি যে, মানুষের নিজেকে বুঝতে হবে। তার নিজের প্রকৃতি কীরূপ এটা মানুষেরা বুঝতে পারলেই যেকোন সিচুয়েশন সে ডিল করতে পারবে। মন্টেইন অন্য কথা বলে যে অন্যদিকে ডাইভার্ট করলেন, এটি ছিল মানুষের সহজাত প্রবৃত্তিটাকে ব্যবহার করেই তাকে দুঃখবোধের ভেতর থেকে বের করে আনা।

আর্নস্ট  বেকার এবং জীবন-মৃত্যুর সাইকোএনালিসিস

মানুষই একমাত্র এনিম্যাল যে আরো বেশী কিছু হয়ে উঠতে চায়, কেবল এনিম্যাল হতে অস্বীকার করে। আলবেয়ার কাম্যু এই কথা বলেছিলেন। এর কারণ হলো মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি। যে মানুষকে আপনি স্টুপিড ভাবেন, তার বুদ্ধিও অন্যান্য প্রানী থেকে অনেক বেশি, এবং তার ব্রেইনের ক্ষমতাও অত্যধিক তুলনামূলক ভাবে।

এই বুদ্ধিবৃত্তির জন্য মানুষ বুঝতে পারে যে, মৃত্যু নামে একটা জিনিস আছে, যেটাতেই সকল বিনাশ। সে আর থাকবে না। এই বাস্তবতার যে এংজাইটি, এটি থেকে মানুষ এই মৃত্যুরে ভুলে থাকার কিছু উপায় বের করেছে। যে উপায়গুলি তাকে বুঝায় যে, আসলে তার মৃত্যুই শেষ না, এরপরেও সে থাকবে।

একদল মানুষ খবই ধ্বংসাত্মক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়ে, যেমন মাদকসক্তি। এগুলির মাধ্যমে তারা মৃত্যুর বাস্তবতাকে ভুলে থাকে।

আরেকদল সাধারণ মানুষেরা যে পন্থা বেঁচে নেয়, তা হলো সাধারণ জীবন যাপন, এবং এই সমস্যা যে আছে তা স্বীকার না করে চলা। সন্তান জন্ম দেয়া, খাওয়া, বাজার করা, আড্ডা দেয়া, বিনোদন, দান দয়া ইত্যাদি। এগুলি আপনার কাছে ট্রিভিয়াল লাগতে পারে। এটা ট্রিভিয়াল এপ্রোচই, যেটা কীয়ের্কেগার্ড উল্লেখ করেছিলেন।

কিন্তু ভেবে দেখুন, একটা কুকুর কি বিনোদনের জন্য নেটফ্লিক্সে ফিল্ম দেখবে বা বাজে গান শুনবে?  না, কারণ তার এই বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা নেই। কিন্তু মানুষেরা এটা করে কারণ বুদ্ধিবৃত্তি আছে তার, এইজন্য সে একটা মিনিং বা অর্থের তাড়ণা অনুভব করে।

এইজন্য বিনোদন না হলে, কনজিউম করতে না পারলে তার খারাপ লাগবে। যেহেতু সাধারণ মানুষ সে, তাই তার মিনিং মূলক কাজগুলিও হবে ট্রিভিয়াল।

মানুষের দুনিয়ার ভাগ দুইটা। একটা বস্তু নির্ভর দুনিয়া যা আমরা দেখি, ফিজিক্যাল। আরেকটা হলো সেই বস্তুগুলির অর্থ অর্থাৎ সিম্বলিক।

এই সিম্বলিক সেন্সেই আমরা মিনিং তৈরি করি, মৃত্যুর বাস্তবতাকে ভুলে যেতে, সরিয়ে রাখতে বা অভারল এর সাথে ডিল করতে যাই।

এই সিম্বলিক সেন্সেই মানুষ “অমরত্বের” কনসেপ্ট তৈরি করেছে।

এখানে ট্রয় ফিল্ম থেকে একিলিসের কথা বলা যায়। ট্রয়ের যুদ্ধে যাবার পেছনে তার কারণ ছিল অমরত্ব। এখানে আসে কনসেপ্ট অব হিরোইজম।

গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ আছে ট্রয়ে, যেখানে সমুদ্র দেবী থেটিস (একিলিসের মা) ও একিলিস কথা বলে। থেটিসকে একিলিস বলে,  তারা আমাকে  আরেকটা যুদ্ধের জন্য চায়।

একিলিস আগামেমনকে পছন্দ করতো না। সে যুদ্ধ করতে আগ্রহী ছিল না। কিন্তু তার মা বললেন,

থেটিসঃ তুমি যদি এইখানে থাকো, আমার সাথে, তোমার পরিবারের সাথে, তুমি শান্তিপূর্ণ এক দীর্ঘজীবন লাভ করবে। তুমি বিয়ে করবে, বাচ্চা হবে তোমার। তারা তোমাকে ভালোবাসবে, এবং তুমি মারা গেলে তারা তোমাকে স্মরণ করবে। কিন্তু যখন তোমার সন্তানেরা মারা যাবে, এবং তাদের সন্তানেরাও, তখন তোমার নাম হারিয়ে যাবে।

তুমি যদি ট্রয়ে যুদ্ধে যাও, কেউই তোমার চাইতে বেশি গ্লোরি অর্জন করবে না। তোমার বিজয়ের কাহিনী মানুষের মুখে মুখে থাকবে। হাজার বছর ধরে মানুষ এগুলি বলবে। দুনিয়া তোমার নাম মনে রাখবে।

কিন্তু তুমি ট্রয়ে গেলে আর ফিরবে না, ওখানেই মারা যাবে।

খুবই ওয়ান্ডারফুল এই সেকশন। এখানে অমরত্ব, হিরোইক এর কনসেপ্ট এবং মৃত্যুকে চমৎকার ভাবে আনতে পেরেছেন স্ক্রিপ্ট রাইটার।

অমরত্বের জন্য, হিরোইকের জন্য আমাদের বেশি কিছু করতে হয়, সাধারণ জীবন যাপনের চাইতে। এটা হতে পারে স্যাক্রিফাইস বা বীরত্বপূর্ন কিছু।

জোসেফ ক্যাম্পবেল এইজন্যই বলেন, “A hero is someone who has given his or her life to something bigger than oneself.”

আর্নস্ট বেকার মনে করেন মৃত্যু’কে ডিল করতে গিয়েই মানুষ অমরত্বের কনসেপ্টগুলি বের করেছে, অমরত্বের প্রজেক্ট হিসেবে, যেখানে দুনিয়ার জীবনের পরে তার অনন্তজীবন আছে বলা হয়। এবং ইভেন, তার দুনিয়ার সাধারণ জীবনরেও হিরোইক করার প্রক্রিয়া রেখেছে  অনেক ধর্ম, যেখানে দৈনন্দিন জীবনে ভালো কাজ করে ব্যক্তি তার নিজের কাছে নিজেকে হিরো হিসেবে তৈরি করছে (যেমন দান), যার ফল সে পাবে পরকালের অমরত্বময় অনন্তজীবনে।

 বেকার, এই অমরত্ব প্রজেক্টের সমস্যা দেখেন, যখন কয়েকটা প্রজেক্ট মুখোমুখি হয়। তখন তারা তীব্র সংঘর্ষে লিপ্ত হয় কারণ এই প্রজেক্টগুলি তাদের লাইফের মিনিং এর সাথে জড়িত।

আমার প্রিয় হিরো, অডিসিয়াসের একটা কথা বলা যায় এখানে। অডিসিয়াসকে আমার ভালো লাগে কিছু কারণে, এর একটি হলো, আমার মনে হয় সে অনেক কিছুই বুঝতে পারতো, হিউম্যান ন্যাচার সম্পর্কে। ট্রয় ফিল্মে অডিসিয়াস বলে,

Men are haunted by the vastness of eternity. And so we ask ourselves: will our actions echo across the centuries? Will strangers hear our names long after we are gone and wonder who we were, how bravely we fought, how fiercely we loved?

নশ্বরতার নিহিলিজম

অডিসিয়াসের কথার সূত্র ধরে আমরা যদি যাই, তাহলে উত্তর খুঁজতে হয়, আমরা কি আজ তাদের মনে রেখেছি? তাদের বীরত্বের কথা, প্রেমের কথা, রাগ ও যুদ্ধের কথা?

রেখেছি কিছু কিছু। যেগুলার গল্প আছে। যেগুলার গল্প মুখে মুখে চলে এসেছে, অন্ধ হোমারের কন্ঠে ভেসে ভেসে। বা মহাভারতের মিথে বা অন্যান্য প্রাচীন গল্পে।

কিন্তু এর বাইরে আমরা একক ব্যক্তিদের কি মনে রেখেছি? হোমারের সময়কালের, বা তারো আগের, তারো আগের। যাদের জীবনের কোন গল্প লেখা নেই বা হারিয়ে গেছে। বা হারিয়ে যাওয়া অনেক সভ্যতার মানুষের। যেমন, মায়ান সভ্যতার মত উচ্চ সভ্যতার মানুষের? বা সুমেরিয়ানদের?

ওদের শত শত বছরের ইতিহাস আমাদের কাছে কয়েকটি শব্দে আবদ্ধ, “সুমেরিয়ান” “মায়ান”। যেটা উদ্যোক্তা নাভাল রবিকান্ত বলছিলেন টিম ফেরিসের টুলস অব টাইটানস বইতে।

এই নশ্বরতার এটা নিরর্থবোধের ব্যাপার আছে, যেটা ১৬ শতকের নেদারলেন্ডিশ ভ্যানিটাজ চিত্রকর্মগুলির মত।

করোনার এই সময়ে

এই সংকটের কালে, যখন মারাত্মক ভাইরাস বাতাসে বাতাসে ভেসে বেড়ায়, তখন মৃত্যু ভয়টা মানুষের মধ্যে যেন একটু প্রকাশ্য হয়ে উঠে। যেই ভয় এতোদিন ছিল, দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটা কাজেই ছিল, জীবন যাপনে ছিল। কিন্তু অবচেতনে।

হঠাত এই ভয়টা একটা প্রকাশ্য মূর্তি লাভ করে।

এখানেই মানুষের অস্বস্থি হয়। মৃত্যুর রূপ থেকে পালিয়ে বেড়ানো মানুষেরা যখন এর রূপ দেখতে পায়, অনুভব করতে পায় বাইরে মৃত্যু, বাতাসে মৃত্যু, রাস্তায় মৃত্যু, তখন তারা এর সাথে সহজে মানিয়ে নিতে পারে না।

এই সময়ে অদ্ভুত অনেক আচরণ সে করে। যেমন যুক্তরাজ্যে এই প্যানডেমিকের সূচণাকালের দিকে লোকজন দোকানপাট খালি করে দিয়েছিল টয়লেট পেপার কিনে। আমেরিকা ওয়াল মার্ট খালি হয়ে গিয়েছিল প্রায়। মানুষের ঢল নেমেছিল বাজারে।

বাংলাদেশের এক জায়গায় একজন লোকের শারিরীক কিছু অসুস্থতা দেখা দিয়েছিল। মানুষ তাকে করোনা আক্রান্ত বলে এতো মেন্টাল প্রেসার দিয়েছে যে সে আত্মহত্যাই করে বসে। এবং আইরনিক্যালি, পরে দেখা যায় তার করোনা নেগেটিভ।

যেহেতু অস্বস্থিকর মৃত্যুর রূপটি মানুষের সামনে এখন, যেহেতু এটি থেকে পালাতেই, এটিকে ভুলে থাকতেই মানুষের সব জীবন সাধনা, তাই এই বর্তমান অস্বস্থিকর বাস্তবতায় মানুষের আচরণ তীব্র হয়ে উঠতে পারে। কিছু কিছু ডার্ক আচরণ।

ক্রিস্টোফার নোলানের ডার্ক নাইট’স রাইজেজ এর হিরো নিহিলিস্ট জোকার যেটাকে বলেছিল, হোয়েন চিপস আর ডাউন, তখন এই সিভিলাইজড মানুষেরা, তথাকথিত সভ্য মানুষেরা, একে অন্যরে ছিঁড়ে খাবে। 

এরকম একটা সিচুয়েশন এখন মানুষের জন্য।

তাই সাবধান থাকা দরকার এথিক্যাল দিক থেকে, যেহেতু মোরালিটির পরীক্ষাই হয় কঠিন সময়ে।