বানাম বিষয়ে বানাম

গেরামার ও বানাম

গেরামার ও বানাম হচ্ছে ভাষার ইউনিটির জন্য। আর ভাষার ইউনিটি মূলত একটা রাজনৈতিক বিষয়।

আপনে সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারবেন না ভুল বানামে লেখলে। বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও অথরিটি আপনারে বাইর করে দিতে পারে যদি বানামের সংহতি না মানেন।

সামাজিক আইনে একজন ব্যক্তিরে নত করার প্রথম ধাপই হচ্ছে তারে বানাম গেরামারের মধ্যে নিয়ে আসা, গেরামারটিক্যালি ‘সঠিক” বাক্য লেখানো বা লেখতে বাধ্য করা।

এখন আপনে যদি চাকরি না করেন সরকারের বা অন্য কারো বা সমাজ দেবতার নত মস্তক পূজারী না হয়ে থাকেন, এইটা জাইনা রাখেন যে, ভুল বানামে আপনে লেখতেই পারেন। আপনার চাকরি যাবে না। যেহেতু চাকরিই করতেছেন না।

তবে বিদ্যমান সমাজ দেবতার পুজারীবৃন্দ সামাজিক প্রেশার ক্রিয়েট করতে পারেন, সেই চেষ্টা তাদের থাকবে। পূজারীর সচেতন ও অবচেতন কাজ হচ্ছে দেবতার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে কাজ করা, এবং এর মাধ্যমে পকারান্তে দেবতার শক্তি বৃদ্ধি করা। সেই প্রেশার আপনে না গুনলেই নাই।

অবশ্য, আপনে যদি তাদের কাছ থেকে কিছু চান, যেমন পপুলারিটি, বা ভোট, বা খ্যাতি, তাহলে গিভ এন্ড টেইক ব্যবসায় যেতে হবে, অর্থাৎ আপনে তাদের দেয়া প্রেশার গুনলেন, তাদের মনোমতো হইলেন, তারাও আপনারে ভালো বললেন। ওইগুলা আপনার চাওয়ার মধ্যে না থাকলে, কারে গুনবেন বা কেন? কোন বানাম ভাষা বা গেরামাররে?

ইউ আর মোর ফ্রি দেন ইউ থিংক।

“Forming grammatically correct sentences is for the normal individual the prerequisite for any submission to social laws. No one is supposed to be ignorant of grammaticality; those who are belong in special institutions. The unity of language is fundamentally political.”


― Gilles Deleuze, A Thousand Plateaus: Capitalism and Schizophrenia

মুক্তি ও ভাষা

মনে রাখবেন যে, মানুষের প্রথম মুক্তি হয় ভাষায়। যেহেতু ভাষায় বা শব্দ উচ্চারণের মাধ্যমেই মানুষের বাচ্চা নিজেরে প্রকাশ করেন।

এবং পরবর্তীতে যে ভাষা তিনি শিখে ফেলেন ওই ভাষায় নিজের লগে বাতচিত করেন, যেই জিনিশটারে আমরা চিন্তা বলি। তার মানে, চিন্তায় ভাষা দরকার।

আমরা কেন গরু

আমরা কেন সাহিত্যে গরুরে গরু লেখি তা এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। কেন গরুরে রগু লেখি না বা আর কিছু। উত্তর হইল, যে কারণে আমরা দূরে কোথাও যাইতে হইলে গাড়ি দিয়া যাই। পায়ে হাইটা যাই না। অর্থাৎ সুবিধার জন্য। একেবারে বাস্তবিক কারণ।

এই কমিউনিকেশনের বাস্তবতা নর্মাল। কিন্তু মহান না। এটা গাড়ি দিয়া যাবার মতই নর্মাল।

গাড়ি দিয়া যাবার ক্ষেত্রে আমি পায়ে হাইটা যাইতে পারি। কেউ হাসবে না সাধারণত। কিন্তু গরুরে রগু লেখলে হাসতে পারে, প্রতিবাদও করতে পারে। এই জায়গায় সমস্যা গুরুতর হয়।

গাড়ি দিয়া যাওয়া তো আমার একমুখী কাজ। পক্ষান্তরে লেখা দ্বিমুখী, লেখি ও আরেকজন পড়েন-বুঝেন। ফলে, তার উষ্মা প্রকাশের জায়গা থাকে। কিন্তু তার রাগ ক্ষোভ প্রতিবাদ হিশাবে নিয়া কি একজন আর্ট তৈরি করবেন? অবশ্যই না। কারণ এটা করলে লজিক্যালি তিনি নিজেই ফ্রিডম হারান। তার আর্ট মানুষরে আর কী ফ্রি করবে।

পরের কাহিনী হচ্ছে, কোন একটা জিনিশ আমি করতে পারি কিন্তু করছি না ইচ্ছা করে, এটা এক জিনিশ। এবং কোন জিনিশ আমি করতেই পারব না, এটা ভিন্ন জিনিশ। দ্বিতীয়টা আমার স্বাধীনতা হরণ করে। যত তীব্রভাবে আমাকে এই “আমি করতেই পারব না” চাপানো হবে, ততোই আমার মনুষ্য হিশাবে বাই বর্ণ স্বাধীনতাগুলি নেয়া হয়, এবং এটা রাজনৈতিক।

অনেক সময় আমি রাজনীতি বুঝি না বলে নিজের গলার শেকল নিজে তৈরি করি, গলায় পরি ও হামাগুড়ি দিতে থাকি।

তো, মূল কথা, মানুষরে বুঝানো রগু সে লেখতেই পারে গরুর বদলে। চাইলেই পারে। তার চাকরি যাবে না। তারে কেউ বোকা মনে করবে না। এবং যখন সে গরু লেখবে, তখন সে বাস্তবিক কমিউনিকেশনের প্রয়োজনেই লেখতেছে জানবে, কোন পবিত্রতা রক্ষা করে যাচ্ছে না বুঝবে। ভাষা হচ্ছে টুল, যেমন ফেসবুক টুল, চেয়ার এক টুল।

দ্যেলুজ বিষয়ে প্রশ্নোত্তর

জাইলস দ্যেলুজ কে?

একজন ফ্রেঞ্চ দার্শনিক ও বুদ্ধিজীবী।

দ্যেলুজ কী বিষয়ে লিখেছেন?

দর্শন, সাহিত্য, ফিল্ম, ফাইন আর্ট ইত্যাদি নিয়ে লিখেছেন।

দ্যেলুজের বিখ্যাত বইগুলির নাম কী?

ক্যাপিটালিজম এন্ড স্কিজোফ্রেনিয়াঃ এন্টাই অডিপাস, এ থাউজ্যান্ড প্লাটুজ। এই দুইটাই ফেলিক্স গাতারির সাথে মিলে লিখেছিলেন। ডিফারেন্স এন্ড রেপিটিশন গ্রন্থকে তার ম্যাগনাম অপাস ধরা হয়।