ইদ্রিস আলীর সেদিন অফিস থেকে ফেরার সময় মনে হল অনেকদিন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না। জীবনটা কেমন যেন একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে। ঘোরাঘোরি দরকার। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলেন চারটা বাজে। প্রচুর সময় আছে। একটা সিএনজি নিয়ে তিনি চলে গেলেন শহরের একটু বাইরে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়গুলোর কাছে। তার পাহাড় দেখতে ভালো লাগে। পাহাড়ের মধ্যে এক ধরনের “জেন্টলম্যান জেন্টলম্যান” ভাব আছে।
ইদ্রিস আলী কিছুক্ষন পাহাড়ের পাদদেশে হাটাহাটি করলেন। সবুজ নরম ঘাস দেখে তার শুয়ে পড়তে ইচ্ছে হল। আশপাশে লোকজন ছিল না বললেই চলে। মনের ইচ্ছাকে দমিয়ে রেখে লাভ নেই মনে করে ইদ্রিস আলী পাহাড়ের পাদদেশে কোমল সবুজ ঘাসদের উপর শুয়ে পড়লেন। উপরে নীল আকাশ, সাদা মেঘের টুকরো ভাসছে। আর পাশে দাঁড়িয়ে সারিবদ্ধভাবে নিরব পাহাড়েরা।
ইদ্রিস আলী চোখ বুঝে এল। তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন।
দূরদেশ থেকে এক পর্যটক পাখি দম্পতি এসেছিল পাহাড়ে। সন্ধ্যা হয়ে আসছে। তারা আশ্রয়ের খোঁজে সন্ত্রস্ত হল। এমন সময় তাদের চোখে পড়ল পাহাড়ের নিচে এক কালো বস্তু পড়ে আছে। এক কোনে ফাঁকা দেখা যাচ্ছে। পাখি দম্পতি টুপ করে সেই ফাঁকে ঢোকে পড়ল পরম নির্ভয়ে। সেটা ছিল ইদ্রিস আলীর কোটের পকেট।
সেই থেকে এক জোড়া ভিনদেশি পাখি ইদ্রিস আলীর পকেটেই রয়ে গেল।
এরপর থেকে ইদ্রিস আলী আর ঘড়ি ব্যবহার করেন না।
ছবিঋণঃ
Melody Sundberg