এই লেখাটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এইখানে, প্রথমাংশে আমি অন্য লোকদের কিছু মারাত্মক সমস্যা নিয়ে বলব। যেহেতু এটি আপনার সমস্যা নিয়ে না, অন্য লোকদের নিয়ে, যারাই সকল সমস্যার মূলে, তাই লেখাটি আপনার ভালো লাগবে।
আপনি ভাবছেন এই অন্য লোক কারা? আপনি ছাড়া বাকিরা।
প্রথম সমস্যা। একে বলে কগনিটিভ ডিজোনেন্স ইংরেজিতে। নানা ভাবে সংজ্ঞায়িত অবস্থায় আপনি একে পাবেন। কিন্তু এর আসল কথাটা হলো, লোকেরা যখন এমন কোন কাজ করে যেটি তাদের বিশ্বাসের সাথে যায় না, তখন সে কাজের পক্ষে যুক্তি দাঁড় করায়। নিজেকে বুঝ দেয়, ও সেই বুঝে নিজেই বিশ্বাস করে।
উদাহরণ,
একজন লোক বিশ্বাস করেন ইসলাম ধর্মে। পাঁচ ওক্ত নামায পড়েন। ইসলামে ঘুষ নেয়া হারাম, কিন্তু তিনি তা নেন। এমন অবস্থায় তিনি তার কাজের পেছনে একটা যুক্তি বের করবেন। কেন এটি উনি করছেন। এই যুক্তির মাধ্যমে তিনি তার কাজকে জাস্টিফাই করবেন।
একজন লোক নিজেকে সৎ মনে করেন। হঠাত তিনি এমন কাজ করে বসলেন যেটি তার এই বিশ্বাসের সাথে যায় না। তখন তার ব্রেইন সাথে সাথে একটা ইল্যুশন বা বিভ্রান্তিময় ব্যাখ্যা তৈরি করে ফেলবে।
এমনকী, আমরা প্রায় ক্ষেত্রেই কোন রিক্রুটার আগে ব্যক্তিকে পছন্দ করবে, পরে কেন লাইক করলো তা র্যাশনালাইজ করবে।
অর্থাৎ, এখানে মূল পয়েন্টটা হলো, অন্য লোকেরা কাজ আগে করে। পরে এর পেছনে তাদের বেরেন যুক্তি তৈরি করে।
দ্বিতীয় সমস্যা। এর নাম কনফার্মেশন বায়াস। অন্য লোকেরা তাদের বিশ্বাসের স্বপক্ষের প্রমাণই দেখতে পায় শুধু।
তারা যদি বিশ্বাস করে, কালো মানুষেরা খারাপ তাহলে কালো মানুষের কুকীর্তির কথাই তারা দেখবে।
তারা যদি বিশ্বাস করে এন্টার্কটিক মহাদেশের তলদেশে রয়েছে ভূত বা ক্যাপিটালিজম খারাপ বা সোশ্যালিজমে কোন সমস্যা নাই বা যেকোন কিছু; তার স্বপক্ষের জিনিসই তাদের মস্তিষ্ক ক্যাচ করবে।
আপনি হয়ত নানা ধরনের কগনিটিভ বায়াসের কথা শুনেছেন। মানুষের চিন্তার বিভ্রান্তির কথা। শুনেছেন যে মানুষ কীভাবে অযৌক্তিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়।
মানুষের সকল বায়াসের সারই আমি উপরে অল্প শব্দে লিখে ফেললাম। আর আপনি পড়ে ফেললেন। এই দুইটিকে মূল ধরে আপনি অন্য লোকদের আচার আচরণ ও সিদ্ধান্তসমূহ দেখলে দেখবেন, তারা অযৌক্তিক আচরণ করে।
আপনি করেন না। কারণ আপনি তো অন্য লোক না।
তবে, অন্য লোকদের কাছে আবার আপনি অন্য লোক। সেটা এক সমস্যাই বটে।
তবে অন্য লোকদের এই সমস্যাগুলি (কগনিটিভ ডিজোন্যান্স, এবং কনফার্মেশন বায়াস) আবার সকল সময় মাথায় রাখা হয় না। মনে করা হয়ে থাকে যে মানুষ যৌক্তিক প্রাণী ও যৌক্তিক আচরণ করবে। এই সাধারণ ভিউটা হলো এমন, ৯০ ভাগ সময়ে মানুষ যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয়, ফ্যাক্ট ও লজিক এর উপর ভিত্তি করে। যেটি আসলে ভুল।
কিছু কিছু লোক যেমন মাস্টার পারসুয়েডররা আবার মনে করেন উলটা। তারা ধরে নেন মানুষ ৯০ ভাগ সময়ে অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয়, এটাই বাস্তবতা। মানুষ কেবল যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে কিছুটা যেখানে আবেগের জায়গা থাকে না।
পারসুয়েশন একটা স্কিল। গুরুত্বপূর্ণ স্কিল।
ধারালো এক ছুরির মত। যার আয়ত্ত্বে আছে, তিনি ইচ্ছা করলে এটা দিয়ে ভালো কাজ করতে পারবেন, আবার কেউ চাইলে খারাপও করতে পারবেন। এতে মূল ছুরিটা ভালো বা খারাপ তা বলা যায় না। কীভাবে ব্যবহার করছেন কেউ তার উপর ঐ কাজ ভালো না খারাপ তা নির্ধারিত হবে।
কিন্তু আমার পয়েন্ট এখানে, ধরা যাক আপনি স্কুলে যান। সেই স্কুলে অনেকের পকেটেই ছুরি থাকে। তারা নানা সুবিধাদি পায়। ইভেন, আপনাকে ভীত করে রাখতে পারে, আপনার ক্ষতি করতে পারে।
আপনি এর থেকে বাঁচতে পারেন নিজের পকেটে ছুরি রেখে।
সাধারন এই উদাহরণ একজন মানুষের জন্য পারসুয়েশনের স্কিলের গুরুত্ব বুঝাতে।
আপনি যখন হিউমেন সাইকোলজি সম্পর্কে বুঝতে পারবেন তখন আপনি তুলনামূলক ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন আপনার লাইফে। যারা আপনার প্রিয় মানুষ তাদের হয়ত বুঝতে পারবেন বেশি। জীবনের নানা সমস্যায় বেটার সমাধান বের করতে পারবেন।
সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আপনার লাইফে আপনার সিদ্ধান্তের ফল।
তবে একথা ১০০ ভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলা যায় না পারসুয়েশন সম্পর্কে জানলেই এগুলি হবে আপনার, বিবেচনাবোধ ভালো হবে। কারণ এসব জিনিস এপ্লাই করা নির্ভর করে ইনটুইশনের উপর। যেমন, মেন্টাল মডেল দিয়ে সিদ্ধান্ত নেবার সময় মূল চ্যালেঞ্জ থাকে ঐ পরিস্থিতি আপনি কীভাবে এনালাইজ করবেন, ও ঐ অবস্থায় কোন মেন্টাল মডেল ব্যবহার করবেন তা কীভাবে নির্বাচন করবেন। এটি ইনটুইশন নির্ভর প্রক্রিয়া। তাই অত সহজ নয়।
সমস্যাগুলি বর্ননা করা খুবই সিম্পল। যেমন, লোকেরা কিছু করে তার জাস্টিফিকেশন দাঁড় করায়, আর যা বিশ্বাস করে তার স্বপক্ষের জিনিসই দেখতে পায়।
সমাধানও বর্ননা করা সিম্পল, নিজের অবস্থানকে যাচাই বাঁচাই এর মধ্যে রাখা।
কিন্তু এটি করাই সবচাইতে কঠিন।
এবং সিম্পল বর্ননা করা সমস্যাগুলি ডালপালা মেলে আরো অনেক সমস্যার জন্ম দেয়।
এটি কঠিন হয় আমাদের মানুষ হিসেবে সীমাবদ্বতার জন্য। আমরা সব সময়েই ভুলে যাই বা জানিই না যে, এই পৃথিবীতে মানুষ হিসেবে আমাদের বেঁচে থাকাটা, এই সভ্যতা সবই দূর্ঘটনাবশত।
“Remember that you are a Black Swan.”
― Nassim Nicholas Taleb, The Black Swan: The Impact of the Highly Improbable
আমাদের বুদ্ধিমত্তা বলেন আর যত যাই স্কিল, তা এই দূর্ঘটনার (পরিকল্পণামাহিক না, আকস্মিক ঘটে যাওয়া ঘটনা) ফলে পাওয়া কিছু সুবিধাদির জন্যই। এখানে আমরা ভাগ্যবান। যেটি, আমাদের নিকটয়াত্মীয় শিম্পাঞ্জিরা পায় নি, তাই তারা আজো আমাদের থেকে বহু পেছনে।
আমাদের এই বিস্তর উন্নতি যে হয়েছে অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত, আমাদের ব্রেইন এর জন্য তৈরি না।
সহজ এক উদাহরণ দেখেন ফেইসবুক প্রযুক্তি। কিছু প্রোগ্রামিং ল্যাংগুজে লেখা নির্দেশ, হোস্টিং, ডিজাইন এগুলির মাধ্যমে এবং কম্পিউটারের মত ডিভাইসের মাধ্যমে আমাদের সামনে এসেছে। আপনিও এই লেখা পড়ছেন খুব সম্ভবত ফেইসবুক থেকে এসে।
এটি বিশ বছর আগেও ছিল না।
এই নতুন প্রযুক্তিতে আমাদের নতুন ধরণের সামাজিক সম্পর্ক হচ্ছে। লাইক, কমেন্ট, শেয়ার, রিএক্ট। বিশ বছর আগের এক মানুষ শেয়ার বেশি পেলে কী অনুভূতি হয়, ফেইসবুকে কীভাবে সামাজিকতা করতে হয় এগুলি সম্পর্কে জানতো না। তার ব্রেইনে এমন কোন জিনিস যায়ই নি। যেহেতু ছিলই না।
কিন্তু হঠাত করে ব্যবহার করতে করতে আমরা এই নতুন সামাজিকতা করছি। এই অল্প সময়ে আমাদের ব্রেইন এর জন্য কিন্তু পুরোপুরি তৈরি না।
একইভাবে, এগ্রিকালচারাল সমাজ তৈরি হয়েছে মানুষের ইতিহাসের সময় নিলে, খুবই অল্প দিন হলো। এমতাবস্থায়, খুবই দ্রুত যে অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত ও সামাজিক পরিবর্তন হচ্ছে, এর জন্য আমাদের ব্রেইন তৈরি হবার সময় পায় নি।
আমাদের ব্রেইনের সীমাবদ্বতার এটি একটি কারণ হতে পারে।
অথবা, হতে পারে এটি মূল সিস্টেমের (ব্রেইন) স্থির সীমাবদ্বতাই।
সুতরাং, এই কগনিটিভ ডিজোন্যান্স ও কনফার্মেশন বায়াসের মাধ্যমে ভুল ডিসিশন আমরা যেকোন মুহুর্তে নিতে পারি।
এজন্য আত্মনিরীক্ষা, নিজের অবস্থান যাচাই ও বুঝা, এবং বেটার তথ্য পেলে, যৌক্তিক তথ্য পেলে ভুল অবস্থান পরিবর্তন ইত্যাদি জরুরী।
কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে এটি সম্ভব নয়। সাধারণ মানুষেরা মনে করে তারা জানে। তারা ইগোসর্বস্ব প্রাণী, যদি মুখে বিনয়ের ভাব দেখায় এবং বিনয়ের স্তুতি করে। কিন্তু ঠিক জায়গায় খোঁচা দিলে আপনি তাদের অসুস্থ ইগো এবং অহংকার দেখবেন।
একজন মাস্টার পারসুয়েডর তৃতীয় মাত্রা থেকে কাজ করতে পারেন।
যেমন, অধিকাংশ আলাপই ফেইসবুকে বা মিডিয়ায় আপনি দেখবেন রাজনীতি নিয়ে।
একটা ইস্যু হয়।
এর পক্ষে একদল কথা বলে, স্ট্যাটাস দেয়।
বিপক্ষে একদল কথা বলে, স্ট্যাটাস দেয়।
এখানে খেয়াল করলে দেখবেন, ঘটনাটা একই। কিন্তু দুইজন লোক বা দুই দল দেখছে ভিন্ন ভাবে।
এদের কোন দল বিকৃত করছে দেখাকে?
একজন মাস্টার পারসুয়েডর বা পারসুয়েশনে দক্ষ নিরীক্ষক এভাবে দেখবেন না। তিনি দেখবেন যে, ঘটনা একই, ধরা যাক এটি হচ্ছে টিভি পর্দা। কিন্তু দুই জন বা দুই দল দেখছে দুই মুভি।
এটি কেন হয়?
তারা তাদের নিজের বিশ্বাসের সাপেক্ষে দেখে।
মোদি ব্যায়াম করছেন।
লিবারেল মোদি বিরোধীরা দেখবেন মোদি ভণ্ডামি করছেন।
আর মোদি স্বপক্ষের বিজেপিরা দেখবে মোদি যোগ ব্যায়াম করে হিন্দুত্মের মূল স্পিরিটকে ধরতে চেষ্টা করছেন।
এই দুই মুভি তারা দেখছে একই চিত্রকে অবলম্বণ করে।
ফলে তারা কখনো এক মতে আসতে পারবে না। কারণ তারা দেখছেই তো ভিন্ন জিনিস।
পারসুয়েশনে দক্ষ নিরীক্ষক এই দুই মুভির দুই জন দেখছে এটা প্রথমে মনে রাখবেন। এরপর ঘটনাটি দেখবেন, এনালাইজ করবেন।
সুতরাং, তার পক্ষে অপেক্ষাকৃত বেশি সত্যের কাছে যাওয়া সম্ভব হয়।
তো, আপনাকে মেন্টাল জিম করতে হবে যদি আপনি এই তৃতীয় মাত্রায় গিয়ে ভাবতে চান।
কারণ এখানে প্রথমত আপনি আপনার নিজের সীমাবদ্বতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। এটা জিমে মাসল বিল্ড আপ করার মত। এমনিতে আপনার মাসল ওয়েল ডিফাইনড থাকে না, স্ট্রং থাকে না। কারন সেই পরিশ্রম আপনার করতে হয় না, সেই খাবার আপনি খান না।
জিমে গিয়ে নিয়ম অনুসরণ করে ব্যায়াম করলে, ঠিকমত খাবার খেলে আপনার মাসল হয়, ফিজিক্যাল স্ট্রেংথ বাড়ে।
একই রকম জিনিস মেন্টাল জিমে হয়।
প্রাত্যহিক লাইফে শরীরের জন্য খারাপ প্রলোভন থাকে, যেমন মুখরোচক ফাস্ট ফুড, সিগারেট, সুগারযুক্ত খাদ্য, আলস্য ইত্যাদি। বিভিন্ন কোম্পানি এগুলি প্রমোট করে ও আপনাকে এগুলি গ্রহণ করতে উৎসাহিত করে।
এর চাইতে অনেক অনেক বেশি আপনারে প্রভাবিত করা হয় মেন্টালি নিয়ন্ত্রণ করতে, বা আপনারে এমন সিদ্ধান্ত নিতে যেটা আপনার জন্য লং টার্মে ক্ষতিকর।
কারণ আপনার কাছে কোন জিনিস বেঁচতে হলে আগে মেন্টালি প্রভাবিত করতে হয়।
ফলে মেন্টাল জিম বেশি দরকারী। ব্রেইনকে ট্রেইন করা বেশি দরকারী।
যেমন, একটা উদাহরণ ফমো। ফিয়ার অব মিসিং আউট। আপনার একটা মানসিক অবস্থা আছে, আপডেট তথ্য, আপডেট নিউজ মিস করে গেলেন নাকী এই ভয়।
এই ভয়টি উসকে দেয়ার জন্য আছে সোশ্যাল মিডিয়া ও নিউজ মিডিয়া।
মিসিং আউটের ভয় থেকে তাড়িত হয়েই মানুষ বার বার হোমপেইজ দেখে ফেইসবুকে। ইমেইল চেক করে বার বার। নিউজ দেখে।
কিন্তু বড় চিত্র বা বিগ পিকচার থেকে যদি আপনি আপনার লাইফ বা মানুষের লাইফ দেখেন, তাহলে দেখবেন নতুন ফ্যাশন, নতুন তথ্য এগুলি অত দরকারী না আপনার হ্যাপি ও গুড লাইফের জন্য।
উপরে এক জায়গায় বলেছি আপডেট তথ্য দরকার নিজের অবস্থান পর্যালোচনার জন্য। এবং যৌক্তিক তথ্য পেলে বদলানোর জন্য। এখন আবার বলছি আপডেট তথ্য আকাঙ্খার সমস্যা নিয়ে। এটা কন্ট্রাডিক্টরি হয়ে গেল কি না?
উদাহরন দেই, ধরা যাক আমি ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে আগ্রহী। আমি মনে করি ক্রিপ্টোর ব্লকচেইন টেকনোলজি ডিজিটাল মানি হবে ফিউচারে।
এই অবস্থান আমি ফান্ডামেন্ডালিস্টের অত অন্ধভাবে ধরে বসে থাকতে পারি না। আমি বিভিন্ন জিনিসের সাথে যুক্ত থাকতে পারি যারা এ সংস্লিষ্ট পর্যালোচনা করে। আমি আপডেটেড থাকতে পারি এই প্রযুক্তির কোন এরর বের হলো কি না, সিকিউরিটির সমস্যা দেখা গেল কি না ইত্যাদি বিষয়ে। এটি আমার কগনিটিভ ডিজোন্যান্স ও কনফার্মেশন বায়াস দূর করার চেষ্টা।
কিন্তু আমি ফেইসবুকে গিয়ে নতুন ফ্যাশন কী এখন, কী নিয়ে নতুন ট্রল হচ্ছে, কোন সেলিব্রেটি কাকে বিয়ে করেছে, বা একেবারে অহেতুক পলিটিক্যাল আলাপ ইত্যাদি এসব নিয়ে কী করব! এগুলি না জানলে আমার সমস্যা নেই।
পলিটিক্যালি আমি সচেতন থাকব ভালো এনালিটিক্যাল লেখা পড়ে। দরকার মনে করলে এনালিটিক্যাল কিছু লিখে। সে দরকারে নিউজ পড়া যেতে পারে। মিস করে যাবার ভয় থেকে নয়।
এই মিস করে যাবার ভয়, নিতান্তই নিরীহ আপনার মনে হতে পারে। আপনার মনে হতে পারে আপনি এখনো ইউনিভার্সিটিতে পড়েন, অনেক সময় আছে। বা কাজ টাজ নেই, অনেক অবসর। তাই এগুলি দেখে মজা পেলেন।
কিন্তু অভ্যাস হলো খুবই মারাত্মক জিনিস।
আপনি খেয়াল করলে দেখবেন, বছর বছর ধরে একই জিনিস বার বার করে যাচ্ছেন। অর্থাৎ, এক্ষেত্রেও কম্পাউন্ড ইন্টারেস্ট হবে।
এই অভ্যাসটা খুবই শক্ত হয়ে উঠবে। আপনার ব্রেইন ঐভাবেই ট্রেইনড হয়ে উঠবে। ফলে পরবর্তীতেও আপনি একই প্রসেসে চিন্তা করবেন ও নিয়ত অস্থিরতায় থাকবেন মিসিং আউটের ভয়ে।
ইনভেস্টরদের জন্য এই জিনিস আত্মঘাতি।
কারণ মার্কেট যখন ভলাটাইল থাকে, দ্রুত ওঠানামা করে, তখন শান্ত থাকতে হয় ভালো ইনভেস্টরকে।
যে সারাজীবন ফিয়ার অব মিসিং আউটের প্রভাবে কাজ করেছে, সে ভলাটাইল মার্কেটে টিকতেই পারবে না।
সো, ট্রেইন ইওর ব্রেইন। প্রতিদিন।