চাকরি পাবেন যেভাবে 🙂

মানুষের যেসব সামাজিক বন্ধন থাকে তাকে দুইভাগে ভাগ করা হয়। শক্ত বন্ধন ও দূর্বল বন্ধন। শক্ত বন্ধন হচ্ছে বেস্ট ফ্রেন্ডস, পরিবারের লোকজন এরা। আর দূর্বল বন্ধন হচ্ছে দূরের বন্ধু, অনেক ক্ষেত্রে পরিচিত ইত্যাদি লোকজন।

আমরা আমাদের কোন উপদেশের দরকার হলে বা জবের দরকার হলে সাধারণত যাই শক্ত বন্ধনের কাছে।

কিন্তু একটি ক্লাসিক রিসার্চ আছে সমাজতাত্ত্বিক মার্ক গ্রানোভেটারের। সেখানে তিনি দেখিয়েছিলেন মানুষ শক্ত বন্ধনের চাইতে দূর্বল বন্ধন থেকে বেশী জব পেতে পারে, এবং এই বেশীটা সামান্য বেশী নয়, একেবারে ৫৮% বেশী!

এর কারণ কী?

স্বাভাবিক ভাবে মনে হয় যেহেতু একজন লোকের শক্ত বন্ধন কম থাকে এবং যেহেতু দূর্বল বন্ধন তথা অল্প পরিচিত লোকের সংখ্যা অনেক বেশী থাকে তাই হয়ত দূর্বল বন্ধন থেকে সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

প্রকৃত কারণ হলো, আমাদের শক্ত বন্ধনের লোকজন সাধারণত আমরা যা জানি তাই জানে। তাদের কাছে একই তথ্য থাকে, একই পরিচিত লোকজন থাকে, ফলে ইচ্ছা থাকলে তারা আমরা যে সাহায্য চাচ্ছি তা করতে পারে না।

কিন্তু দূর্বল বন্ধনের লোকদের পরিচয় থাকে এমন সব লোকের সাথে যা আমাদের অজানা, তাদের কাছে এমন তথ্য থাকে যা আমাদের অজানা। তাদের চলাফেরা থাকে ভিন্ন ভিন্ন ডোমেইনে। এই কারণেই তাদের জবে সাহায্য করতে পারার ক্ষমতা বেশী থাকে।

তবে, দূর্বল বন্ধনের লোকদের কাছে সাহায্য চাইতে মানুষ অস্বস্থি বোধ করে। এক্ষেত্রে আরেক ধরণের বন্ধনের কথা ভাবতে পারেন, যার সাথে একসময় বেশ শক্ত বন্ধন ছিল, কিন্তু স্বাভাবিক কিছু কারণে দেখা হয় না। স্বাভাবিক কারণ বলতে বিভিন্ন শহরে থাকা, ইত্যাদি ইত্যাদি। অস্বাভাবিক কারণ হচ্ছে ঝগড়া বিবাদ।

যেমন আট বছর আগে হোস্টেলে একসাথে থেকেছিলাম বা কোন ক্রিকেট দলে একসাথে খেলেছিলাম তার সাথে। তখন তার সাথে বন্ধুত্ব হয়। পরে আর দেখা স্বাক্ষাত হয় না তেমন, কিন্তু বন্ধু-বন্ধু সংযোগ ভেতরে আছে।

দীর্ঘদিন সে নানা কিছু করেছে, নানা ধরণের লোকের সাথে মিশেছে যা আমাদের অজানা। ফলে তার কাছে থাকা তথ্য আমাদের কাছে থাকা তথ্য এক নয়।

তার কাছে জবের ব্যাপারে সাহায্য চাওয়া অস্বস্থিকর নয়।

এইসব দূর্বল বন্ধন থেকে সাহায্য নিলে একজনের জব পাওয়ার সম্ভাবনা ৫৮% বেড়ে যায়, রিসার্চ মতে।

সাধারণত ফেইসবুকে মানুষের দূর্বল বন্ধন বেশী থাকে। ফলে সহজেই ফেইসবুক একজন ব্যবহার করতে পারেন তার দূর্বল বন্ধনকে ব্যবহার করতে।

কিন্তু এখানে প্রশ্ন হতে পারে ব্যক্তির অস্বস্থি। অস্বস্থির কারণ নেই প্র্যাক্টিক্যালী দেখলে। রিজেকশন থেরাপি সম্পর্কে একজনকে অভ্যস্ত থাকতে হবে, এবং অনিশ্চিত দুনিয়ায় এন্টিফ্র্যাজাইল হতে হয়।

আর যে মূল কারণে মানুষের অস্বস্থি হয় তা হলো অন্যে দেখে কী বলবে। কিন্তু যারা আপনাকে আসলেই পছন্দ করে তারা আপনার জব চাহিয়া ফেইসবুক পোস্টে বা অন্য কোন এক পোস্টে কখনো হঠাৎ করে অপছন্দ করা শুরু করবে না। এসব ক্ষেত্রে তারাই অপছন্দ করতে পারে যারা আগে থেকেই আপনাকে অপছন্দ করত। এর কোন আভাস যদি আপনি পেয়ে যেতে পারেন তাহলে তো ভালোই, তাকে রিমুভ করতে পারবেন। যারা আমাদের অপছন্দ করে, বা আমরা যাদের অপছন্দ করি তাদের সাথে আমরা সামাজিকতা করি না স্বাভাবিক সামাজিক নিয়মেই।