ইন্টারনেটের যুগে একজন বুদ্ধিমান লোক যেভাবে পড়বেন

ইন্টারনেটের এই সময়ে প্রচুর তথ্য চারিদিকে। এই এতো তথ্য তা নিরন্তর আমাদের সামনে আসছে বা আমরা চাইলেই পেতে পারছি, এগুলির সব কনজিউম করতে থাকলে অতিরিক্ত তথ্যের ভারে চিন্তা ব্যহত হবে এবং বাজে অতিরিক্ত তথ্য কনজিউম করার ফলে চিন্তাহীনতা তৈরি হবে ব্যক্তির মধ্যে।

আরো সমস্যা হলো যেহেতু ইন্টারনেটে দ্রুত ও সহজে তথ্য ছড়ানো যায় তাই নানা বিভ্রান্তিকর ভুল তথ্যের ফাঁদে একজন পড়তে পারেন।

এছাড়া মানুষের সাইকোলজিক্যাল সমস্যা আছে, সে কেবল তার মতের পক্ষের তথ্যই পড়তে চায়, যেটাকে বলে কনফার্মেশন বায়াস।

এই অবস্থায় একজন সচেতন বুদ্ধিমান লোক কীভাবে তথ্য নির্বাচন করবেন অর্থাৎ কী পড়বেন ও কী পড়বেন না তা কিভাবে ঠিক করবেন, তা নিয়েই এই লেখা।

১। মতাদর্শিক বায়াস এড়িয়ে চলুন আপনি কোন মতের পক্ষের বই পড়লে এর বিপক্ষ মতের বইও পড়ুন। এবং, কেবল বিপক্ষ মত নয়, একই বিষয় নিয়ে আরো যেসব মত আছে সেগুলিও জানার চেষ্টা করুন।

যেমন, প্রাণী হত্যা করে বা তাদের কষ্ট দিয়ে মাংস খাবার অনৈতিকতা নিয়ে লিখেছেন দার্শনিক পিটার সিংগার। তিনি তার নৈতিক দিক থেকে এর অনৈতিকতা দেখিয়ে দেন। সিংগার একজন উপযোগবাদী দার্শনিক। আমেরিকান দার্শনিক রবার্ট নোজিক, যিনি উপযোগবাদের বিরুদ্ধে ইউটিলিটি মনস্টার নামক চিন্তা পরীক্ষাটি উপস্থাপন করেছেন, তিনি তার মতো করে, উপযোগবাদের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রাণী অধিকারের কথা বলেছেন। আবার, চেক-কানাডিয়ান বিজ্ঞানি ভাকলাব স্মিল আবার মাংস খাবার পক্ষে লিখতে চেয়েছেন, তবে তার মত হলো যে পরিমাণ মাংস পশ্চিমে কনজিউম করা হয় তা প্রচুর বেশি, এটা কমাতে হবে। এই তিন ভিন্ন মত আমি বিভিন্ন সময়ে পড়ে জানতে পেরেছি। কিন্তু, যেকোন একটিতে মতাদর্শিক হয়ে বসে থাকলে হয়ত অন্যটি চোখে পড়তো না, এবং জানার সুযোগ হতো না।

মতাদর্শিক বায়াস হয়ত পুরোপুরি এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। কনফার্মেশন বায়াস যেহেতু আমাদের চিন্তা পদ্বতিরই অংশ তাই এটাকে পুরোপুরি দূর করা অসম্ভব। কিন্তু যত বেশি আমরা কোন বিষয়ে মতাদর্শিক ভাবে যুক্ত না হবো, ততো বেশি কনফার্মেশন বায়াস দূরে থাকবে বলেই মনে হয়।

মতাদর্শিক বায়াসের সমস্যা হলো মানুষ কোন কিছু মতাদর্শিক ভাবে বিশ্বাস করলে সে এর সাথে ইমোশনালি যুক্ত হয়ে পড়ে। এই বিশ্বাস বা ধারণা তার ব্যক্তি স্বত্তার অংশ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এর উপর কোন আক্রমণ বা বিরোধিতা হলে সে ভাবে যেন তার পরিচয়ের উপরই হামলা হলো।

বিভিন্ন মতাদর্শ ভিত্তিক মিডিয়া আছে। যদি খবরের কাগজ পড়েন অনলাইনে বা অফলাইনে, তাহলে বিভিন্ন মতাদর্শের পত্রিকা পড়ুন। এক মতাদর্শের পত্রিকা পড়লে পুরো চিত্র পাবেন না, যেহেতু তাদের মতাদর্শিক বায়াস থাকবে।

 

২। নিজের দেশ বা অঞ্চল সবারই প্রিয়। সবারই নিজের দেশ নিয়ে বায়াস থাকবে। কিন্তু এটি এড়িয়ে চলতে হবে পড়ার সময়ে। অন্য দেশের খবরও পড়ার চেষ্টা করুন। পত্রিকা বা মিডিয়া যেসব দেশকে গুরুত্বপূর্ন করে তুলে ধরে এদেরকে নয়, যারা আসলেই গুরুত্বপূর্ন আপনার মনে হয় তাদের ব্যাপারে পড়ুন।

অনেক সমস্যা আছে যেগুলিকে মিডিয়া বেশি হাইলাইট করে। আপনি কেবল এইসব সমস্যা নিয়ে পড়তে থাকলে ঐ মিডিয়ার তৈরি এক বিভ্রান্তির অংশ হয়ে গেলেন আপনি।

মিডিয়া যাকে গুরুত্বপূর্ন বলে সেটাকে আপনি মিডিয়া বলছে তাই গুরুত্বপূর্ন বলবেন না। আপনি কোন ঘটনা বা বিষয়কে গুরুত্বপূর্ন বলবেন আপনার বিচারে। আপনি যেহেতু আপনি, মিডিয়ার ভোক্তা আপনার পরিচয় নয়।

 

৩। প্রচুর ভিন্ন ভিন্ন জিনিস নিয়ে পড়ুন। যেমন, সাইকোলজি নিয়ে পড়লেন, ইকোনমিক্স নিয়ে পড়লেন, আবার প্রাচীন যাদুবিদ্যা নিয়ে পড়লেন, এরপর ইঁদুরের মেটিং স্ট্র্যাটেজি নিয়ে পড়লেন। অর্থাৎ, আগ্রহের পরিধি হবে বিস্তারিত। যতো বেশি বিস্তারিত হয় ততো ভালো।

 

৪। সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা হয় ইস্যুভিত্তিক। মিডিয়াগুলিতে প্রায় সব সময় সাম্প্রতিক ইস্যু থাকে। যেকোন ধরণের ইস্যুতে পক্ষ এবং বিপক্ষ (এবং আরো কোন পক্ষ থাকলে) সবার দৃষ্টিভঙ্গী সম্পর্কে পড়ুন।

যেমন, বাস চালকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছে, পত্রিকায় লেখা হচ্ছে, তখন আপনার কাজ হবে বাস চালকদের মত কী দেখা, বাস মালিকদের মত কী দেখা।

আওয়ামিলীগ বিএনপির কোন কাজের সমালোচনা করছে, তখন আপনার কাজ হবে একই বিষয় নিয়ে বিএনপির মত কী দেখা, বিএনপিপন্থী পত্রিকায় গিয়ে।

লিবারেলরা কনজারভেটিভদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে, আপনার কাজ হবে একই বিষয় নিয়ে কনজারভেটিভদের মত কী দেখা, কনজারভেটিভদের পত্রিকায় গিয়ে।

আর যদি কোন মডারেট ব্যক্তি বা মিডিয়া থাকে, যারা উভয় পক্ষের দোষ গুণ নিয়ে লিখছে, তাদেরটাও পড়তে পারেন।

 

৫। লেখার তথ্য চেক করুন। যে ডেটা উল্লেখ করে বলা হয়েছে তা ঠিক কি না, কোথায় রিসার্চ হয়েছে, সেই রিসার্চে ডেটা সেট কীভাবে নেয়া হয়েছে ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে আসুন।

একটা উদাহরণ দেই। পাবলিক জনমত ভিত্তিক রাজনৈতিক কোন পোলের জন্য সমাজে আগে থাকতে হবে গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতিষ্ঠা। অর্থাৎ, মানুষেরা জানবে তারা ভয়হীন ভাবে নিজেদের মত ব্যক্ত করতে পারবে। এই মতের জন্য তাদের কোন সমস্যা হবে না। যদি এটা নিশ্চিত না হয়, যদি তাদের মধ্যে ভয় থাকে, তাহলে ক্ষমতাসীন দলকে তারা সমর্থন করে কি না এমন জরিপে অধিকাংশ লোকে ভয় থেকেই জানাতে পারে যে তারা সমর্থন করে। কারণ কে চায় এমন পোলে মত দিয়ে ঝামেলায় পড়তে? ফলে এই জরিপ থেকে আপনি ঠিক অবস্থার চিত্র পাবেন না। এর রিসার্চ পদ্বতিতে ভুল রয়েছে।

একইভাবে, বাংলাদেশের ১৫ বছরের বাচ্চারা কেমন বই (আউটবই) পড়ে এ নিয়ে রিসার্চ করতে গিয়ে এক প্রতিষ্ঠান ডেটা নিল শহর অঞ্চলের নামী স্কুল থেকে। ১০০০ জনের তথ্য নিয়ে তারা ফলাফল দিল বাংলাদেশের ১৫ বছরের বাচ্চারা গড়ে বই পড়েছে ১২ টি।

এই রিসার্চও কিন্তু সঠিক চিত্র দেখাল না। কারন এটিতে সুবিধাপ্রাপ্ত এক অঞ্চল থেকে ডেটা নেয়া হয়েছে। সমগ্র বাংলাদেশের চিত্র এখানে আসে নি।

 

৬। সাইন্টিফিক রিসার্চের সীমাবদ্বতা মাথায় রাখুন।

কোন বিষয় নিয়ে পরীক্ষা করা হলে সেটি কিন্তু বাস্তবের ঘটনা না। এটা হলো পরীক্ষার ঘটনা।

বাস্তবে ঘটনাটি ভিন্ন হতে পারে।

যেমন, কীভাবে মানুষ সিদ্ধান্ত নেয় এ নিয়ে অনেক রিসার্চ করা হয়েছে। এ নিয়ে নানা স্টেপ বাই স্টেপ পদ্বতির কথাও আছে। কিন্তু ফায়ার ফাইটারদের (এবং আরো অনেক ঘটনায়) ক্ষেত্রে দেখা গেছে, যখন কোন তীব্র মুহুর্ত উপস্থিত হয় তখন এমন স্টেপ বাই স্টেপ নয়, বরং খুব দ্রুত ইনট্যুশনের মাধ্যমে তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেন। কারণ স্টেপ বাই স্টেপ চিন্তার সময় তখন থাকে না।

সাইকোলজিতে বা বিশেষত সোশ্যাল সাইকোলজিতে, মেডিসিনে এবং বলতে গেলে অভারল সাইন্সেই একটি প্রধান সমস্যা হলো রেপ্লিকেশনের সমস্যা। অর্থাৎ, পরীক্ষা যে ফলাফল দিল, আবার পরীক্ষা করলে একই ফলাফল দেয় না।

নেচার ম্যাগাজিনে ২০১৫ সালের একটা পোলে ১৫০০ বিজ্ঞানি বলেন, তাদের মধ্যে ৭০% ই অন্য অন্তত একজন বিজ্ঞানির কাজ পুনরায় রেপ্লিকেট করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আর নিজের পরীক্ষা পুনরায় করতে গিয়ে একই ফলাফল পান নি ৫০%।

এই সমস্যার কারণে সাইন্টিফিক ফলাফলকে সব সময় ধ্রুব সত্য ধরে নিবেন না। কারণ তারা ধ্রুব সত্য নয়। পরবর্তীতে আরেক রিসার্চ এটি নস্যাৎ করে দিতে পারে বা এর দূর্বলতা দেখিয়ে দিতে পারে।

কিন্তু তাই বলে এই না যে সব সাইন্টিফিক রিসার্চ বিরোধীতা করে বিজ্ঞান বিরোধী হবেন। বিজ্ঞান হচ্ছে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান, এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা নির্ভর একমাত্র যৌক্তিক পদ্বতি। তাই তার বিরোধীতা বা তাকে ত্যাগ করার কিছু নেই, বরং সন্দেহ এবং নিজের পরীক্ষা ছাড়া মেনে না নেয়ার কথা বলছি আমি। অর্থাৎ, আমি বলছি সাইন্টিফিক ফলাফল বিশ্বাস করার আগে আপনি এই ফলাফলটির ব্যাপারে খোঁজখবর নিবেন, কীভাবে তা করা হলো ইত্যাদি, মোটকথা সাইন্টিফিক পদ্বতি প্রয়োগ করেই গ্রহণ করবেন।

আর সেইফ সাইডে থাকতে সোশ্যাল সাইন্স বা সাইকোলজির রিসার্চদের শক্তিশালী হাইপোথিসিস হিসেবে দেখাটাই ভালো।

কিছু ধারণা আছে যা হাজার বছরের ব্যবধানে কাজ করে আসছে। এগুলি যখন কোন সাইকোলজি বা অন্য সাইন্টিফিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়, তখন এটি গ্রহণের পক্ষের যুক্তি হয় বেশি শক্তিশালী।

 

৭। বই পড়ার সময় এখন ইন্টারনেটের কল্যানে আপনি একটি সুবিধা পাচ্ছেন- লেখকের দেশ, তার জীবন ও বেড়ে উঠা, তার পড়ালেখা, রাজনৈতিক মত ইত্যাদি সম্পর্কেও জেনে নিতে পারবেন গুগল সার্চের মাধ্যমে। এগুলি জানা হলে আপনি লেখকের বায়াস সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন, তখন লেখাটি বুঝতে আপনার সুবিধা হবে, এবং এতে কী কী মিস ইনফরমেশন থাকতে পারে ধারণা করতে পারবেন ও থাকলে তা ধরেও ফেলতে পারবেন।

 

৮। আপনি কাদের সাথে চলাফেরা করেন এটা যেমন আপনার ব্যক্তিত্বের গঠনে প্রভাব ফেলে তেমনি কাদের লেখা পড়েন তাও আপনার চিন্তা পদ্বতিতে প্রভাব ফেলে। আপনি নিশ্চয়ই যার লেখা পড়ছেন তাকে খুশি করতে পড়ছেন না, আপনি পড়ছেন আপনার চিন্তা ক্ষমতা বাড়াতে বা আরো ভালো চিন্তা করতে, নতুন ইনসাইট পেতে। সুতরাং, কেবল তাদের লেখাই পড়ুন যারা আপনার চাইতে স্মার্ট তথা বুদ্ধিমান। নিজের সময় দিয়ে নিজের চাইতে অল্পবুদ্ধি কারো লেখা পড়ার মানে নেই, কারণ সময়ের সমষ্টিই জীবন।

সাধারণত মানুষ কম্ফোর্ট জোনে থাকতে চায়। এখানে সে স্বস্থি পায়। তাই তার চাইতে স্মার্ট মানুষের লেখা পড়তে বা তাদের সাথে কথা বলতে বিরক্ত হয়, ইগো আহত হবার কারণে। যাদের মত ও ভিউ পড়তে বিরক্তি আসে, ইগো আহত হয় তাদের লেখা পড়ুন। স্মার্ট হবার নিয়ম হলো, আপনি রুমের সবচাইতে স্মার্ট লোক হলে রুম পরিত্যাগ করে অন্য রুমে যান যেখানে আপনার চাইতেও স্মার্ট লোক আছেন।

 

৯। ভালো গল্প উপন্যাস পড়ুন এবং ফিল্ম দেখুন। কারণ এগুলির ভেতর দিয়ে আপনি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন, গল্পের বা ফিল্মের চরিত্রটির হয়ে জীবন যাপন করার মাধ্যমে বা তার জীবনকে নিবিড়ভাবে দেখার মাধ্যমে। এটি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে কোন জিনিস দেখার ক্ষমতা বাড়ায়। এমপ্যাথি তথা সহমর্মীতা বাড়ায়। মানুষের ও প্রকৃতির প্রতি মায়া বাড়ায়।

আমাদের একটি বায়াস হলো নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া, এবং তার আলোকেই সব বিচার করতে যাওয়া। বই পড়া ও ভালো ফিল্ম দেখা এই বায়াসের বিরুদ্ধে কাজ করে।

কিন্তু, ফিকশন পড়ার সময় একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে, সেটি হলো ফিকশন বায়াস। ফিকশন বায়াসের কারণে আমরা মনে করি ফিকশনে যেমন ঘটনাগুলি হয়, তেমন আমাদের বাস্তব জীবনে হবে তেমন। কিন্তু বাস্তব জীবন ফিকশনের চাইতে ভিন্ন হতে পারে। বলা হয়ে থাকে কখনো কখনো ফিকশন বাস্তবের চাইতেও বেশি বিস্ময়কর হয়ে উঠে।

ফিকশন বায়াস এড়ানোর জন্য, ফিকশনে যখন আপনি দেখবেন কোন ঘটনা বাস্তবের চাইতে ভিন্ন হচ্ছে তখন ভেবে নিবেন আপনার দেখা যা যাপন করা বাস্তবে হলে ঘটনাটি কেমন হতে পারতো।

তখন একই সাথে পরস্পর বিপরীত ধর্মী দুই বায়াসের বিরুদ্ধে কাজ করা হয়ে যাবে।

ইতিহাস পড়ার সময় এটা ব্যাপার মনে রাখবেন, আপনি যা পড়ছেন তা ইতিহাসের কাহিনি হলেও পুরা বাস্তব নয়। একজনের বর্ননা যেহেতু তাই এটি ফিকশনাল অনেকটাই। কারণ বর্ননার সমস্যা আছে, যেটা আকিয়া কুরোসাওয়া তার রাশোমন ফিল্মে দেখিয়েছিলেন, যার নাম দেয়া হয়েছে রাশোমন ইফেক্ট। সত্যিকার অর্থে কী ঘটেছিল তা বুঝতে কেবল সেই লেখা পড়লেই হবে না, এর সম্পর্কে অনুসন্ধান জারী রাখতে হবে।

এটার একটা ইন্টারেস্টিং পদ্বতি হলো হাইপোথিসিসের মাধ্যমে চিন্তা করা। যেমন, ভাবলেন, পলাশীর যুদ্ধে সিরাজ উদ দৌলা জিতলে কী হতো? এই প্রশ্নে, ধরে নিলেন সিরাজ জিতেছেন। এটা ধরে নিয়েই ভিন্ন রকম ইতিহাস মেলাতে হবে কী হতো বের করতে। তখন ইতিহাসের কী ঘটেছিল সেটা আরো বেশি বুঝতে পারবেন।

 

১০। এলগোরিদম ও ফিল্টার বাবল থেকে সাবধান। আপনি যেসব নিয়ে আগ্রহী, যেসব সার্চ দেন কেবলই সেসবই আপনার সামনে আনবে এলগোরিদম। এতে সমস্যা আছে, ফিল্টার বাবলে আটকে থাকার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সচেতন ভাবে ফিল্টার বাবল থেকে বের হতে চেষ্টা করুন।

গুগলে সার্চ দেবার সময়ও সতর্কতা অবলম্বন করুন। যেমন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং আসলে সত্য না, এটা ধরুন আপনার ধারণা। কিন্তু গুগলে সার্চ দিয়ে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে আসল তথ্য কী। এসব ক্ষেত্রে একজন লোক সার্চ দেন “ইজ গ্লোবাল ওয়ার্মিং এ মিথ?” বা “গ্লোবাল ওয়ার্মিং কি মিথ” এইরকম প্রশ্ন করে। ফলে গুগল এর পক্ষের যুক্তিমূলক লেখা তুলে আনবে। এসব ক্ষেত্রে আপনি উভয় পক্ষের মত জানতে চাইলে সার্চ দিন, ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং কি সত্যি না মিথ’ এভাবে লিখে। তাহলে মোটামোটি ভালো কোন লেখা পেতে পারেন।