পাবলিয়াস সাইরাসের উপদেশাবলী

পাবলিয়াস সাইরাস (৮৫-৪৩ বিসি) ছিলেন একজন সিরিয়ান লোক এবং রোমান দাস। তিনি তার বুদ্ধি ও প্রতিভা দিয়ে তার মালিকের সম্মান আদায়ে সক্ষম হন। মালিক তাকে শিক্ষা অর্জনের সুযোগ করে দিয়েছিলেন।

পাবলিয়াস সাইরাস বিখ্যাত তার নীতিবাক্যগুলির জন্য। তার নীতিবাক্য নিয়ে যে বইটি আছে তার নাম দ্য মোরাল সেইংস অব পাবলিয়াস সাইরাস, এ রোমান স্লেইভ।

তার নীতিবাক্যগুলি হাজার হাজার বছর ধরে যেহেতু টিকে আছে, সুতরাং এগুলি লিন্ডি প্রুফড। এই নীতিবাক্যদের অনেকগুলিই আমরা শুনেছি বা আগে অন্যদের লেখায় পড়েছি। এখানে তার বই থেকে কয়েকটি নীতিবাক্য অনুবাদ করে দিলাম।

পাবলিয়াস সাইরাসের নীতিবাক্য

 

এমনকি যখন আমরা যা চেয়েছি তা পেয়ে যাই, তখনো সেটি আমাদের নয়।

অন্যের দুঃখে নিজের সুখ খুঁজে নেবেন না।

বন্ধুর দোষের ব্যাপারে অন্ধ হবেন না, এবং দোষের জন্য তাকে ঘৃণাও করবেন না।

আপনার পিতামাতা ন্যায়বিচারক হলে সম্মান করুন, না হলে সহ্য করুন।

বিপদ বা খারাপ অবস্থা দেখিয়ে দেয় আমাদের বন্ধু আছে নাকি বন্ধুর ছায়া আছে।

একজন নারী তখনই ভালো হয়, যখন সে হয় প্রকাশ্য কূটচারী।

যেখানে ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, সেখানেও সতর্ক দৃষ্টি রাখুন।

একজন নারী হয় ভালোবাসে নয়ত ঘৃণা করে, মাঝামাঝি কিছু সে জানে না।

আমাদের উচিত নিজেদের সৌভাগ্যের প্রভু হওয়া, অন্যথায় সে আমাদের তার দাস বানিয়ে ফেলবে।

আপনি যাকে ভালোবাসেন তাকে রাগিয়ে তুলেন যদি চান সে আপনাকে ভালোবাসুক।

যে মানুষ নিজেকে সুখী মনে করে না সে কখনো সুখী হতে পারে না।

অন্যের ভুল দেখে প্রজ্ঞাবানেরা নিজেদের শুধরে নেন।

একজন প্রজ্ঞাবান নিজের মাইন্ড বা চিন্তার প্রভু, এবং একজন গর্দভ তার মাইন্ড বা চিন্তার দাস।

একজন দেবতা একইসাথে প্রজ্ঞাবান হতে এবং ভালোবাসতে পারেন, এমন খুবই কম হয়।

আত্ম-অনসন্ধানের মাধ্যমেই মানুষের যুক্তিক্ষমতা (বুদ্ধি বা রিজন) বৃদ্ধি পায়।

একজন মানুষ সত্যিকার সুখী হলে দেবতাও তাকে বিরক্ত করতে চান না।

জীবন সবচাইতে আনন্দদায়ক যখন তা মূর্খতার ভিতর দিয়ে অতিবাহিত হয়।

একজন ভালো মানুষকে পাবার আগে আপনি আরো প্রচুর জিনিসের মুখোমুখি হবেন।

একজন মহাসাধুর শিষ্য হওয়া বৃথা যদি না তোমার নিজের বুদ্ধি থাকে।

ক্ষত শুকিয়ে গেলেও দাগ থেকে যায়।

যে পরিকল্পণা বদলানো যায় না সেটা বাজে পরিকল্পণা।

যে কেবল নিজের জন্যই বাঁচে সে অন্যের কাছে মৃত।

প্রজ্ঞাবানের মতো হওয়া এবং প্রজ্ঞাবান হওয়ার মধ্যে বিরাট পার্থক্য বিদ্যমান।

একজন প্রজ্ঞাবান নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করেন আর একজন গর্দভ তার আবেগের নিয়ন্ত্রণে চলে।

অনেকেই উপদেশ পায়, কিন্তু খুব অল্প লোকই এর থেকে সুবিধা আদায় করে নিতে পারে।

আপনাকে না ডাকা হলে কাউন্সিলে চলে যাবেন না।

সফলতা কিছু অপরাধকে সম্মানজনক করে তোলে।

প্র্যাকটিস হচ্ছে সবচাইতে বড় শিক্ষক।

যা করতে পারবেন কখনো তার চাইতে বেশি করার কথা দিবেন না।

চেষ্টা করার আগ পর্যন্ত কেউই জানে না সে কী করতে পারে।

সবচাইতে বড় সাম্রাজ্য হলো নিজের উপর নিজের শাসন।

নিরব থাকুন অথবা নিরবতার চাইতে ভালো কিছু বলুন।

আমি নিজের কথা নিয়ে অনেক অনুশোচনা করেছি, কিন্তু নিজের নিরবতা নিয়ে কখনো অনুশোচনা করতে হয় নি।

একজন হার্পার (ফোক মিউজিশিয়ান) হতে না পারলে, একজন পাইপার (বংশীবাদক) হোন।

ভালো কাজের মাধ্যমে আমরা দেবতাদের কাছাকাছি যেতে পারি।

কেবল একজন চতুর বা গর্দভই বলে থাকে ভালো কাজ হারিয়ে যায়।

যে দিতে জানে না, সে যেন গ্রহণও না করে।

একজন ইতর লোকের সর্বোচ্চ উদারতা, একজন উদার লোকের ইতরতার মতো।

যে আপনাকে একবার ধোঁকা দিয়েছে তার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।

ভ্রমনে একজন প্রীতিকর সঙ্গী হলো বাহনের মতোই ভালো।

যা শুনেন তার সব নিয়ে ভাবুন কিন্তু বিশ্বাস করবেন প্রমাণসহ যা পান তা।

বাড়ি নির্মাতার উচিত না বাড়িকে অর্ধনির্মিত অবস্থায় ফেলে রাখা।

সৈন্যদের সাহস নির্ভর করে সেনাপতির প্রজ্ঞার উপরে।

গৌরবহীন জীবন মৃত্যুর কাছাকাছি।

আপনি কখনো অসুখী না হলে মানুষেরা মনে করবে আপনি অসুখী।

যে কেবল নিজের স্বার্থে ভালো তাকে খারাপ বলা উচিত।

সবচাইতে সহজে অপরাধ লুকানো যায় জনতার ভীড়ে।

সব খারাপ কাজের পেছনে একটি অজুহাত তৈরি আছে।

যে ভূমিতে আপনি সুখে থাকতে পারেন সেটাই আপনার দেশ।

আপনি যদি নিজেকে ভালোবাসেন তাহলে সর্বদাই কিছু লোক থাকবে যারা আপনাকে ঘৃণা করে।

শত্রুর ফাঁদের চাইতে বন্ধুদের ঈর্ষাকে বেশি ভয় করুন।

নতুন বন্ধু হলে পুরনো বন্ধুদের ভুলে যাবেন না।

যে বন্ধুদের অবিশ্বাস করে, সে আসলে শব্দটির মর্ম জানে না।