ক্রোনাস ও গোয়েন্দা
জমাদার ফ্যামিলিতে খুন।
একটি নয় তিনটি।
জমাদারের তিন পুত্র নিহত।
দায়িত্ব পড়েছিল খোরশেদের আলমের কাঁধে।
আপনারা হয়ত জেনে থাকবেন, ইনি আমাদের ডিটেক্টিভ।
চৌকস, প্রখর বুদ্ধিমান এবং তদন্তে অদ্বিতীয়।
তবে এই ঘটনায়,
খোরশেদ আলম রহস্যের কিনারা করতে গিয়ে,
নিজেই পৌছে গেলেন মৃত্যুর কিনারায়।
তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে শক্ত করে।
আবছা আবছা ভাবে অবশ্য তিনি,
রহস্যের কিনারা করতে পেরেছেন,
বলে মনে হচ্ছে তার।
জমাদার সাহেব যখন এই খুনগুলির কিনারা করতে,
তাকে ডেকে এনেছিলেন,
তখন জমাদার সাহেবের ড্রয়িং রুমে
সাজানো ছিল কয়েকটি বই
চতুর ডিটেক্টিভ খোরশেদ আলমের দৃষ্টি এড়ায় নি তা।
এখন খোরশেদ আলম একটি প্রায় অন্ধকার কক্ষে,
পিছনে তার হাত বাঁধা।
কিন্তু তা স্বত্তেও তিনি দেখতে পাচ্ছেন, অদূরে একটি বই
নেরুদার বুক অব কোয়েশ্চনস।
যা জমাদার সাহেবের ড্রয়িং রুমেও ছিল।
খোরশেদ আলম দুইয়ে দুইয়ে চার মেলান।
তবে কি জমাদার সাহেবই তাকে বেঁধে রেখেছেন?
এইভাবে?
কেন তিনি একাজ করবেন?
তিনিই কি হত্যাকারী তবে?
কেন নিজ পুত্রদের খুন করবেন তিনি?
এর পেছনে থাকতে পারে কী এমন রহস্য?
ডিটেক্টিভ খোরশেদ আলমের মাথা ঝিম ঝিম করে
তিনি ভাবতে চেষ্টা করেন সমস্ত বিষয়
কিন্তু সময়, বড়ই দুঃসময়
তার মাথায় ভীড় করতে থাকে জগতের অমীমাংসীত নানাবিদ আরো রহস্য
যেগুলি নেরুদা তুলে দিয়েছিলেন ঐ পুস্তকে
এক্ষণে, জমাদার সাহেব পুস্তকে কী যাদু করে গেছেন কে জানে
বই থেকে একে একে প্রশ্নগুলি উঠে এসে ভীড় জমাতে থাকে
ডিটেক্টিভ খোরশেদ আলমের চিন্তায়
ধোঁয়াগুলি কি মেঘের সাথে কথা কয়?
এক বিড়ালের মনে কতো প্রশ্ন জমা থাকে?
বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকা একা ট্রেনের চাইতে বিষাদগ্রস্ত কিছু কি পৃথিবীতে আর হতে পারে?
অথবা, পরিত্যক্ত বাইসাইকেল কীভাবে তার স্বাধীনতা খুঁজে পায়?
অথবা, আমি যে শিশুটি ছিলাম সে কোথায়? হারিয়ে গেছে নাকী আমার মধ্যেই তার বসবাস?
অথবা, যে আমার রক্ত স্পর্শ করে নি, সে কীভাবে অনুভব করবে কবিতা আমার?
এত সব আদি ও অকৃত্রিম রহস্যের ভীড়ে
খোরশেদ আলম আটকা পড়ে যান
এবং এখানে বাঁধা পড়া, ও জমাদার সাহেবের তিন পুত্র হত্যার রহস্য নিয়ে
তিনি আর ভাবতে পারেন না
তার গলা শুকিয়ে আসে
তিনি ঘাড় ঘুরিয়ে পানি খুঁজেন
কিন্তু পানি নেই।