ক্যাম্পবেলের ল স্মরণ রাখুন

ভারতীয় উপমহাদেশে যখন ব্রিটিশ শাসন ছিল তখন এক পর্যায়ে দিল্লীতে কোবরা (বা গোখরা) সাপের প্রাদুর্ভাব ছিল খুব বেশি। এদের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকার ঘোষণা করলো যারা কোবরা সাপ মারতে পারবে তাদের পুরস্কার দেয়া হবে। প্রথমে প্রচুর সাপ মারা পড়ল। কিন্তু পরে সরকারী কর্মকর্তারা দেখল যে, লোকেরা কোবরা সাপ পালন করছে যাতে তারা নতুন বাচ্চা দেয়। নতুন উৎপাদিত বাচ্চা যত বেশি হবে, তত বেশি সাপ মারা যাবে, তত বেশি আয়ের সুযোগ। এটা দেখে সরকার সাপ মারায় পুরস্কার বন্ধ করে দিল। যারা সাপ পালন করছিলো তারাও তাদের সাপ ছেঁড়ে দিল। সুতরাং দেখা গেল দিন শেষে, সাপের সংখ্যা কমে নি, বেড়ে গেছে।

একই জিনিস হয়েছিল ফিলিপাইনের হ্যানয়ে। সেখানে ছিল ইঁদুরের প্রাদুর্ভাব। তখন ফ্রেঞ্চ উপনিবেশ ছিল ফিলিপাইনে। সরকার ঘোষণা দিল, যারা ইঁদূর মেরে প্রমাণ স্বরূপ ইঁদুরের লেজ নিয়ে আসতে পারবে, তাদের পুরস্কার দেয়া হবে। প্রচুর ইঁদুরের লেজ জমা পড়তে লাগল। একসময় সরকারী কর্মকর্তারা দেখল যে, অনেক লেজ ছাড়া ইঁদুর ঘুরে বেড়াচ্ছে। অর্থাৎ, লোকেরা ইঁদুর মারছে না, কেবল লেজ কেটে নিয়ে আসছে, যাদে ইঁদুরেরা আরো বংশবিস্তার করতে পারে। যত বেশি বাচ্চা হবে ততো বেশি লেজ কাটার সম্ভাবনা। ততো বেশি আয়ের সুযোগ।

সোস্যাল সাইন্টিস্ট এবং সাইকোলজিস্ট ডোনাল্ড টি ক্যাম্পবেলের নাম অনুসারে এই প্রবণতাটির নাম দেয়া হয়েছে ক্যাম্পবেলের ল। তিনি লিখেনঃ

“The more any quantitative social indicator is used for social decision-making, the more subject it will be to corruption pressures and the more apt it will be to distort and corrupt the social processes it is intended to monitor.”

অর্থাৎ, পুরস্কার সকল সময় ভালোদিকে যায় না, অবস্থাটিকে আরো খারাপ করে তুলতে পারে।

যখন কোন নিউজপেপারে ভিউ যত বেশি হবে তত লাভ হবে, কিংবা বিজ্ঞাপনে ক্লিক যতো পড়বে ততো লাভ হবে বা পোস্টে যত লাইক বেশি পড়বে ততো তার পোস্ট গুরুত্ব পাবে তখন সাবজেক্টস তথা ব্যক্তিরা এইসব জিনিসে “দুই নম্বরী” পদ্বতি বের করে নিবে বেশি লাভের জন্য।