দি টেন কম্যান্ডম্যান্টস ফর বিজনেস ফেইলার

 

ডোনাল্ড কিওগের মিনিমালিস্ট পরিচিতিঃ

ডোনাল্ড কিওগ ডিরেক্টর, চীফ অপারেটিং অফিসার হিসেবে দি কোকা কোলা কোম্পানি থেকে অবসর নেন ১৯৯৩ সালে। ১৯৮১ সাল থেকে তিনি এই পদে ছিলেন। আইরিশ-আমেরিকান এই বিজনেসম্যান মারা যান ২০১৫ সালে।

 

দি কোকা কোলা কোম্পানি ও তার বিজনেস মডেল বিষয়েঃ 

যেহেতু কিওগ কোকাকোলা কোম্পানির ডিরেক্টর ছিলেন, এবং কোক আমাদের পরিচিত জিনিস, তাই এর বিজনেস মডেল সম্পর্কে অল্প বলে নেয়া ভালো।

১৮৯৪ সালে মিসিসিপির একজন বিজনেস ম্যান জোসেপ বাইডেহ্যার্ন তার সোডা ফাউন্টেন দোকানের পেছনে বোতলীকরনের মেশিন স্থাপন করেন ও বোতলে করে কোক বিক্রি শুরু করেন। ৫ বছর পরে টেনেসির তিনজন উদ্যোক্তা এই বোতলীকরনের আইডিয়ার প্যাটেন্ট কিনে নেন ও বড় পরিসরে কোক বোতলীকরন করে বিক্রি শুরু করেন। বর্তমান সে আকৃতির কোক বোতল দেখা যায় তা শুরু হয় ১৯১৬ সাল থেকে।

কোকাকোলা কোম্পানির রিপোর্ট মতে তাদের প্রফিট হয় দুই ভাগে।

১। অপারেশনাল। 

কোকাকোলার তৈরীকারকেরা সিরাপ তৈরি করে অথরাইজড বোতলারদের কাছে বিক্রি করে। বোতলাররা সেই সিরাপ বোতলে ভরে ফাইনাল প্রোডাক্ট তৈরি করে। এখানে কোম্পানির লাভ হয় কেবল সিরাপ থেকে। এটাকে তারা বলে অপারেশনাল।

 

২। ফাইনাল প্রোডাক্ট

কোম্পানির আবার কিছু নিজস্ব বোতলীকরন প্ল্যান্ট আছে। সেখান থেকে তারা ফাইনাল প্রোডাক্ট উৎপন্ন করে ও সরাসরি মার্কেটে বিক্রি করে। এখান থেকে আসে দ্বিতীয় ভাগ্যের প্রফিট।

 

দি টেন কম্যান্ডম্যান্টস ফর বিজনেস ফেইলার 

ডন কিওগের দি টেন কম্যান্ডমেন্টস ফর  বিজনেস ফেইলার বইটিতে একটি বিজনেসকে ফেইলার বা অসফল করতে দশটি সেরা উপায়ের কথা বলেছেন আমেরিকার অন্যতম সেরা ও বিশ্বের প্রথম সারীর একজন বিজনেস লিডার, দি কোকা-কোলা কোম্পানির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড কিওগ। বইটি সম্পর্কে বিল গেটসের বক্তব্য হলো, এই বিজনেস ব্যর্থ হবার উপায়গুলি সম্পর্কে বিজনেস সফল করা বিষয়ে একজনকে যা শেখাবে, তা পুরো বুকশেলফ ভর্তি বইও পারবে না।

আমার সাইটের লেখা যারা পড়েন তাদের অনেকেই গণিতবিদ জাকোবির নামের সাথে ও তার বিখ্যাত উক্তি “ইনভার্স, অলওয়েজ ইনভার্স” এর সাথে পরিচিত।

এই কথাটি কী?

এই কথাটির মূল মেসেজটি হলো সমস্যার সমাধান বের করতে হলে পুরো বিষয়টাকে উলটিয়ে দেখা, ইনভার্স করে দেখা।

কোন দেশকে ধনী করতে চান? তাহলে ভাবুন কী করলে তাকে দরিদ্র করা যাবে। তখন আপনি পেয়ে যাবেন ধনী করার উপায়।

কিওগ তার বইতে এই ইনভার্স পদ্বতিই প্রয়োগ করেছেন। তিনি বিজনেস ব্যর্থ করার দশ অব্যর্থ উপায়ের আলোচনা করে দেখিয়েছেন, এগুলির কয়েকটা করলে আপনার বিজনেসের ব্যর্থতা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

বইটির ভূমিকা লিখেছেন ওয়ারেন বাফেট। এই অসাধারণ ভূমিকা পড়লেই একজন পাঠক বুঝতে পারবেন এই বই একটি মাস্ট রিড। বিশেষত যারা বিজনেসে আগ্রহী তাদের জন্য মাস্ট মাস্ট রিড।

বাফেট শুরুতেই লিখেছেন তিনি তার চাইতে স্মার্ট লোকদের সাথে চলতে পছন্দ করেন, এবং এইজন্য ডন অন্যতম সেরা একজন পছন্দ । ডন বাফেটের দীর্ঘদিনের বন্ধু। তার কাছ থেকে বাফেট কেমন করে শিখেছেন, তার উৎসাহ, উদ্যম, নতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করা ইত্যাদি বিষয়ে ভূমিকাতে সরল ভাষায় উল্লেখ করেছেন ওয়ারেন বাফেট। এ অংশ পড়লে ধরে নেয়া যায় এই বইটির লেখক সাধারণ কেউ নন, এবং তার কথাগুলিও ফালতু পপুলার  সেলফ-হেল্প বইদের মতো হবে না।

এরপর আছে ডন কিওগের নিজের লেখা ভূমিকা। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন এই বইটির সারবস্তু আসলে তার দেয়া একটি লেকচার থেকে নেয়া। মায়ামিতে তখনকার সময়ে কোকা-কোলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি একটি বড় কনভেনশনে বক্তৃতা দিয়েছিলেন। সেই বক্তৃতার বিষয়টি নিয়েই পরবর্তীতে তিনি বইটি লিখেছেন। এতে তার বিজনেসে থাকা প্রায় সারাজীবনের অর্জিত অন্তর্দৃষ্টি উপস্থাপিত হয়েছে।

কিওগ বলেন, “এক লাইফটাইম বিজনেসে ব্যয় করে ফেললাম, কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে কখনোই এমন কোন নিয়মাবলী বা স্টেপ বাই স্টেপ গাইড বের করতে পারি নি যা কোন কিছুতে গ্যারান্টি দিয়ে সফলতা এনে দেবে। বিজনেসের মতো ডায়নামিক ও নিত্য পরিবর্তন হতে থাকা ক্ষেত্রে তো নয়ই।”

তাই তিনি দিয়েছেন বিজনেস অসফল করার দশটি অব্যর্থ উপায়ের কথা। যেকোন বিজনেস যা একসময় সফল ছিল পরে ব্যর্থ হয়েছে, দেখলে দেখা যাবে এদের সবাই কিওগের দেয়া দশ উপায়ের কয়েকটি অবলম্বন করেছে। কিওগ স্থানে স্থানে উদাহরণ সংযুক্ত করেছেন।

কিওগের শিক্ষা বিজনেসে নয়, ছিল মানবিক বিভাগে, মেজর ছিল দর্শন। কাজ শুরু করেছিলেন তখনকার দিনে শুরু হওয়া প্রাথমিক রূপের টেলিভিশনে। তারপর একসময় কোকাকোলায় চলে যান। তার বিজনেস জীবনের বলতে গেলে সব সময়ই কেটেছে কোকাকোলায়। সুতরাং, বইতে নানা ভাবে কোকাকোলার প্রসঙ্গ এসেছে।

দোন কিওগ তার বইতে বিজনেসকে ব্যর্থ করার যে দশ নিয়মের কথা বলেছেন, এগুলি হলোঃ

 

প্রথম রুল – ঝুঁকি নেয়া বন্ধ করে দিন 

 

মানুষ সাধারণত ঝুঁকি নিতে চায় না। সে একটা পরিক্ষিত ফর্মূলায় লাইফ লিড করতে চায়। যেভাবে তার বাবা, দাদা জীবন যাপন করে গেছেন, যেভাবে বিপদের সম্ভাবনা কম। বিশেষত কৃষিভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবার পরে, মানুষ যখন এক জায়গায় স্থির হলো তখন থেকে এই ঝুঁকি কম নেবার প্রবণতা তার মধ্যে দেখা যায়। এজন্য প্রাচীন ম্যাপে দেখা যায় অনেক জায়গায় নাম টেরা ইনকগনিটো বা অজানা অঞ্চল। এইসব জায়গায় যাবার ঝুঁকি মানুষ নিতে চায় নি। অনেক ক্ষেত্রে ম্যাপে এসব জায়গায় লেখা থাকত, এই এলাকায় ড্রাগন থাকে। ড্রাগনের ভয়ে মানুষ ঐসব এলাকায় যেতে চায় নি।

কিন্তু অনেকে ঝুঁকি নিয়েছেন। নতুন জায়গা আবিষ্কার করেছেন। যেমন ব্রিটিশ এক্সপ্লোরার স্যার রিচার্ড ফ্রান্সিস বার্টন বা কলম্বাস। এসব অভিযানের ও ঝুঁকি নেবার ফল তারা বা তাদের দেশ ভালো ভাবেই পেয়ে এসেছে।

ঝুঁকি না নেয়াটা বিজনেস এবং মানুষের জীবনের জন্যও খারাপ। গ্রোথের জন্য খারাপ। আমরা যে সো কোলড তেল দেয়া ‘নাইস গাইজ’ দের দেখি, এরা অনেকেই বুঝতে পারে তেল দেয়া খারাপ কিন্তু তাও এই পথে হাঁটে কারণ এটা তাদের জন্য সেইফ।

 

দ্বিতীয় রুল – বি ইনফ্লেকজিবল 

 

আপনি যদি মনে করেন আপনার কাছে নির্দিষ্ট একটি ফর্মূলা আছে, এবং এটাই একমাত্র ঠিক ফর্মূলা, সাফল্যের সূত্র, এবং যদি আপনি এটা থেকে না নড়েন, তাহলে আপনি ইনফ্লেকজিবল। আপনার বিজনেসকে ব্যর্থ করতে হলে ইনফ্লেকজিবল হওয়া অত্যন্ত জরুরী। কখনো নতুন তথ্য,  ডেটা বা প্রযুক্তিকে আমলে নিবেন না, সব কিছুর জন্য একটা সেট অব রুলস তৈরি করে নিয়ে, এগুলিকে ধ্রুব সত্য ধরে নিয়ে চালিয়ে যান।

লাইফের ক্ষেত্রেও এটা খাটে।

 

তৃতীয় রুল – আইজোলেট ইয়োরসেলফ 

 

আপনার নিজেকে আলাদা করে রাখুন। যাতে কর্মচারীদের সাথে আপনার দূরত্ব তৈরি হয় ও সহজে তারা আপনার সাথে দেখা করতে, কথা বলতে পারে না। এবং কর্মচারীরা যেন আপনার কাছে খারাপ নিউজ নিয়ে আসতে না পারে, সে ব্যবস্থা করুন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলার তার কাছে খারাপ নিউজ নিয়ে আসা পছন্দ করতেন না। তার সেক্রেটারি এটা সহজেই বুঝে নিয়েছিলেন যে ফুয়েরারকে কেবল গুড নিউজ সরবরাহ করতে হবে, তাতেই তিনি খুশি থাকবেন।

অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল তার অফিসে একটা বিশেষ সেকশনই খুলেছিলেন যার কাজ ছিল ব্যাড নিউজ সাথে সাথেই চার্চিলের কাছে পৌঁছে দেয়া। কারণ তিনি এটা জানতেন ব্যাড নিউজ যত দ্রুত জানা যায় তত ক্ষতি কমানোর সুযোগ থাকে অনেক ক্ষেত্রে, দেরীতে পেলে ক্ষতি অনেক অনেক বেড়ে যায়। যেহেতু আপনি বিজনেস ব্যর্থ করতে যাচ্ছেন, তাই এমন ব্যবস্থা করবেন যাতে কেউ ব্যাড নিউজ আপনার কাছে নিয়ে আসতে না পারে। ম্যানেজাররা আনলেও যেন রেখেঢেকে আনে, বয়স্কে অসন্তুষ্ট করা যাবে না এটা মাথায় রেখে। আর যদি কেউ রুঢ় সত্যি বলতে যায় আপনার কাছে, তাকে ফায়ার করুন।

এই জন্য ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করুন অফিসে। এমনিতেই ‘নাইস গাইজ’ এরা বিনয়ী থাকে এবং ভয়ে আপনাকে সব বলবে না। এখানে ডন কিওগের একটি উদাহরণ দেই। তিনি একবার, তার প্রথম চাকরিতে কিছু সেলস ম্যানের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি লক্ষ করলেন একজন সেলস ম্যান খুব ভালো পারফর্ম করছে কিন্তু তার সাথে কখনো দেখা করে না। কখনো অসুস্থতা, কখনো অন্য কোন অজুহাত দেখিয়ে সে আসে না। কিওগ একবার নিজেই গেলেন লোকটার সাথে দেখা করতে। দেখা করলেন, কথা বললেন। লোকটা এমনিতেই তার অফিসে এসে যে কথা বলবে, এটা ভয় পেট। কিওগ তার ভয় কাটিয়ে দিলেন।

আপনি কখনো এইরকম কাজ করবেন না যদি আপনার বিজনেসকে ব্যর্থ করতে চান।

 

চতুর্থ রুল – ধরে নিন আপনার কোন ভুল হয় না

 

এটা ধরে নিতেই হবে, এবং এর উপর স্থির বিশ্বাস রাখতে হবে যদি আপনার বিজনেসকে ভালো মত ব্যর্থ করতে চান। এবং লাইফে গর্দভ হতে গেলেও এটা খুব ভালো উপায়।

 

পঞ্চম রুল – ফাউল লাইনের একেবারে কাছে গিয়ে খেলতে থাকুন 

 

সান জু তার আর্ট অব ওয়ারে যুদ্ধের একটা নিয়ম বলেছিলেন, নৈতিক কারণ তৈরি করুন। অর্থাৎ, আপনি যে যুদ্ধ করছেন এর একটি নৈতিক ভিত্তি থাকতে হবে। তা না হলে আপনার সৈন্যদের মনোবল শক্ত হবে না। যুদ্ধে আপনি হারবেন। এটি খুবই শক্তিশালী জিনিস। এখনো যুদ্ধে মোরাল গ্রাউন্ড তৈরি করা হয় আগে। আপনি আপনার বিজনেসকে ব্যর্থ করতে হলে নৈতিকতা মানবেন না। ধরেন, গ্রোথ হ্যাকিং এর নামে মারাত্মক অনৈতিক কাজ করলেন, অন্য বিজনেসের ক্ষতি করলেন। এই ফাউল খেলাটি আপনার কর্মীদের মনোবলে প্রভাব ফেলবে, একসময় আপনার কাস্টমাররা জানলে তাদের উপর প্রভাব ফেলবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ডন কিওগ একটা হাসপাতালে অসুস্থ রোগীদের সেবার কাজ করেছিলেন। সেখানে তার অভিজ্ঞতায় তিনি যা দেখেছেন তা এভাবে বর্ননা করেছেন,

এই হাসপাতালে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুব অল্প বয়সে আমাকে মানব চরিত্রের উতকর্ষতা ও নীচতার সাথে তীব্রভাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। এই দুই জায়গার মধ্যেকার দূরত্ব খুব বেশি নয়। মানুষ এক্সতড়া অর্ডিনারি লেভেলে উঠে আসতে পারে, আবার অনেক অনেক নীচেও পড়ে যেতে পারে দ্রুতই।

এইজন্য মোরাল জায়গাটি সাধারণত অনেক সতর্কতার সাথে দেখে রাখতে হয়। লজিক্যাল নৈতিক ভিত্তি না থাকলে কোন একশন তার সমর্থন হারায়, এবং এর প্রভাব কর্মীদের নৈতিকতাতেও পড়বে।

“Success is more permanent when you achieve it without destroying your principles.”

                                                                                                                                    Walter Cronkite

 

ষষ্ট রুল – চিন্তার  জন্য সময় নিবেন না 

 

মানুষ চিন্তাবিমুখ প্রাণী। সাইকোলজির একটা পরীক্ষায় দেখা গেছে মানুষ চিন্তা করার চাইতে ইলেকট্রিক শক নিতেও প্রস্তুত। বর্তমান বাস্তবতায় নানা ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া রয়েছে মানুষকে ব্যস্ত রাখার জন্য। চিন্তা করার সময় কোথায় তার?

চিন্তাকে গুরুত্ব দিবেন না। শুধু কাজ ও দেখানো কাজকে গুরুত্ব দিন। চিন্তা না করে সিদ্ধান্ত নিন। আপনার কোম্পানিতে চিন্তাস্বক্ষম লোক রাখবেন না, তাদেরই রাখবেন যারা ভালো হুকুম তালিম করতে পারে।

তাতে আপনার জমিদার জমিদার ফীল হবে, এবং আপনার বিজনেস ব্যর্থ হবার পথে এক ধাপ এগিয়ে যাবে।

 

সপ্তম রুল – বিশেষজ্ঞ ও বাইরের পরামর্শকদের উপর সব বিশ্বাস স্থাপন করুন

 

নিজে তো চিন্তা করবেন না, তাই বিশেষজ্ঞ ও নামী পরামর্শকদের উপর অন্ধ বিশ্বাস স্থাপন করুন। তাড়াই এনে দিবে আপনার জন্য  সব সূত্র। স্ট্যাটিস্টিক্স, ফিগার ও চার্ট এমনভাবে দেখবেন যেন এগুলির সাথে হিউম্যান সাইকোলজির কোন সম্পর্কই নেই।

 

অষ্টম রুল – আপনার বুরোক্র্যাটিক সিস্টেমটিকে ভালবাসুন 

একটা পেন্সিল কিনতেও যেন দশ টেবিল ঘুরে ফাইল ও দুই সপ্তাহ লাগে। যেকোন সাধারণ কাজ হতেও যেন তিনটা মিটিং হয়। মিটিং মানেই যেন কাজ হয় আপনার কাছে। এই বুরোক্রেসি যেন আপনার প্রিয় হয়।

 

নবম রুল – মিক্সড মেসেজ বা  ঘোলাটে মেসেজ দিন কর্মচারী ও কাস্টমারদের

 

কী বলছেন নিজেই নিশ্চিত না, এমনভাবে বিবৃতি দিবেন কর্মী ও কাস্টমারদের। যেন তারা বিভ্রান্ত হয়ে যায়। আপনার কর্মীরা যাতে ক্লিয়ারলি বুঝতে না পারে আপনি আসলে কী করছেন।

 

দশম রুল – ভবিষ্যতের ব্যাপারে ভীত হয়ে উঠুন

 

পেসিমিস্ট হয়ে উঠুন। ব্যর্থ তাকে দেখতে থাকুন আর ভবিষ্যতের ব্যাপারে ভীত হয়ে উঠুন।

 

বোনাসঃ এগারোতম রুল- নিজের কাজ ও জীবনের প্রতি প্যাশন হারিয়ে ফেলুন

 

প্যাশন হারিয়ে হয়ে উঠুন একজন হতাশাবাদী। যে নিশ্চিত তাকে দ্বারা কিছুই হবে না।

কিওগের বই থেকে বেশ কিছু কাজে লাগানোর মতো মেন্টাল মডেল বের করা যায়। যেমন এই ঘটনাটি হতে পারে চমৎকার একটি মেন্টাল টুল।

 

ষাঁড়ের দিকে লক্ষ্য করুন

 

 

কিওগের বই থেকে বেশ কিছু কাজে লাগানোর মতো মেন্টাল মডেল বের করা যায়। যেমন এই ঘটনাটি হতে পারে চমৎকার একটি মেন্টাল টুল।

কিওগ যখন টিনেজ ছিলেন তখন তিনি তার এলাকায় ষাঁড় কেনাবেচার কাজের সাথে জড়িত হয়ে পড়েন। ষাঁড় এর  যখন পুনরোৎপাদনের বয়স পেরিয়ে যেত তখন এগুলি বিক্রি করে দেয়া হতো এবং ক্রেতারা কিনে নিতো জবাই করে মাংসের ব্যবসার জন্য। এমনই এক ক্রেতা কিওগকে দায়িত্ব দিলেন ষাঁড় কেনার। এখান থেকে তিনি একটি কমিশন পেতেন।

প্রথম দিন তিনি যেসব ষাঁড় কিনলেন, তাতে বেশি দাম দিয়ে ফেললেন। তাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন যিনি তিনি তখন উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন, তোমার বয়স কম। বিক্রেতারা তোমাকে নানা কথায় ভুলাবে, নানা প্রশংসা করবে। তোমার সাথে চমৎকার আচরণ করবে। কিন্তু আমি তোমাকে এই তালিকা দিচ্ছি। ষাঁড়ের মধ্যে এই গুণগুলি আছে কি না দেখবে তুমি। মনে রাখবে এগুলিই তুমি খুঁজছো, কে তোমাকে কী বলছে ওদিকে লক্ষ্য দিবে না। ষাঁড়ের দিকে লক্ষ্য রাখবে, লোকটার দিকে নয়।

কিওগ তার বাকী জীবন এই উপদেশ মনে রেখেছিলেন। তিনি লিখেছেন, আপনি নিজেকে যত বুদ্ধিমানই ভাবুন না কেন, যদি ষাঁড়ের দিক থেকে লক্ষ্য সরিয়ে লোকটার দিকে নেন, তাহলে যত সফল বিজনেসই আপনার থাক না কেন, পতন অনিবার্য হয়ে উঠবে।

আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন তরুণকে বিভ্রান্ত করার জন্য অনেক মানুষ রয়েছে। সব সময় তারা ইচ্ছা করে এমন করছে তা নয়। কিন্তু করে যাচ্ছে নিজের চিন্তার সীমাবদ্বতার জন্য। মানুষের লাইফটাইম ক্ষতি করে যাচ্ছে। একসময় এই তরুণেরা হয়ত বুঝতে পারবে যদি কখনো চিন্তা করা শিখে, কিন্তু তখন অনেক সময় চলে যাবে। আপনি সহজেই এই ট্র্যাপ থেকে বাঁচতে পারেন, যদি লোকটাকে লক্ষ্য না করে ষাঁড়ের দিকে লক্ষ্য করেন।

 

ডেটার বিপদ 

ডেটা এখন বর্তমান বাস্তবতায় খুবই ট্রেন্ডি জিনিস। কিন্তু আনপ্রসেসড ডেটা হচ্ছে খুবই বিপদজনক একটা ব্যবসার জনয়। কারণ ডেটা দিয়ে সত্যকে আড়াল করা যায় ও ভুল চিত্র দেখানো যায়। দুনিয়ার সব রিসার্চ কিছুই না আপনি যদি ঠিক প্রশ্নটা করতে পারেন, এখানেই মানুষের চিন্তার গুরুত্ব। কিওগ স্পষ্ট করে বলেন, থিংকিং ইজ দ্য বেস্ট ইনভেস্টমেন্ট ইউ উইল এভার মেইক ইন ইয়োর কোম্পানি, ইন ইয়োর অউন কেরিয়ার এন্ড ইন ইয়োর লাইফ। 

মানে, আপনার জীবনের জন্য সবচাইতে বড় ইনভেস্টমেন্ট হলো চিন্তা করা শেখা বা চিন্তা করা।