মুরাদুল ইসলাম » ব্লগ » মানুষের লাইফে সম্পর্ক

মানুষের লাইফে সম্পর্ক

মানুষের লাইফে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ, তার ফ্যামিলি। মা বাপ ভাই বোন স্ত্রী/প্রেমিকা, পুত্র কন্যা। কোন কোন আত্মীয়, কোন কোন বন্ধুও হতে পারে। এরাই লাইফে ডিপার মিনিং দেয়।

এবং এই প্রতিটা সম্পর্ক কম্পাউন্ড ইন্টারেস্টে কাজ করে। প্রতিদিন এফোর্ট দিতে হয়। আপনারে এইসব সম্পর্ক ওউন করতে হবে। যদি অউন না করেন, তাহলে এজেন্ট হয়ে থাকবেন, যেন অন্য পক্ষের মূল দায়িত্ব ও আপনি খালি চাকরি করতেছেন। তখন আপনি আশা করবেন, কিন্তু অন্যেরও যে আশা আছে আপনার প্রতি, তা বুঝবেন না।

আপনার মায়ের কষ্ট হইতেছে রান্না ঘরে গরমে কাজ করে, আর আপনি দেশোদ্ধারের লেখা লেখতেছেন, এইটারে আমি দায়িত্বজ্ঞানহীনতা মনে করি।

এই প্রতিটা সম্পর্কে বেস্ট হইতে হবে, ও গিভার হইতে হবে। কিছু দূর্ভাগ্যজনক ব্যতিক্রম ছাড়া, এই ইনভেস্টমেন্টে লাভ হবে প্রচুর। লাক ম্যাটার করে, কিন্তু নিজের চেষ্টা হওয়া দরকার হাইয়েস্ট।

ইমোশনালি ডেভলাপ হওয়া সহজ জিনিশ না। এটা লজিকের চাইতেও কঠিন। ইমোশনাল ইন্টিলিজেন্সের জন্য অন্যের আবেগ বুঝতে হয়। এই ডেভলাপমেন্ট হয় ধীরে ধীরে, সম্পর্ক অউন করা, ও তার মধ্য দিয়ে চালিত হতে হতে।

ব্যক্তিগত ভাবে আমি খুবই লজিক্যাল মানুষ। আমার কবিতার এক ক্যারেক্টার আছে গোয়েন্দা খোরশেদ আলম, ওইখানে তার লজিক প্রিয়তা বুঝাইতে লেখছিলাম রূপকে, সে অন্ধকারে নিজের হাতরেও বিশ্বাস করে না। ঐটার কাছাকাছি ছিল আমার অবস্থান।

ক্রিটিক্যালি সব দেখার এই দোষ। মানুষ মনে করবে, আপনে দোষ ধরতেছেন, কিন্তু আপনি জানেন আপনি আসলে অংকের মত এক আর একে দুই মেলাচ্ছেন, এবং সবই সামনে ভিজিবল।

কিন্তু মানব সম্পর্ক, যাদের আপনে ভালোবাসেন তাদের সাথে যে সম্পর্ক, তা লজিকের উর্ধ্বে। এইটা ইমোশনাল ইন্টিলিজেন্সের টেরিটোরি।

ডেভিড লিঞ্চের টুইন পিকস হয়ত দেখে থাকবেন। ওইটাতে একটা ডার্ক দুনিয়া দেখায়। ওই দুনিয়াটাই আমাদের বাস্তবতা। কিন্তু লিঞ্চের মূল মেসেজটা কী ছিল?

উনি দেখাইছেন টেরর, ভয়ংকর ভয়, যার সাথে পারা যায় না। সে সব কিছু নাশ করে ফেলার মত ক্ষমতাধর।

এর সাথে ফাইটের অস্ত্র, বা এই বাস্তবতায় মানুষের টিকে থাকার অস্ত্র হিশাবে তিনি দেখাইছেন ভালোবাসারে। লাভ টেরররে পরাজিত করে না ওইখানে, বাট সৌন্দর্য তৈরি করে, বেঁচে থাকার আশা দেখায়। গোয়েন্দা লজিকরে দেখান নাই, এইজন্যই টুইন পিকস ভালো।

লাভ হইল হোপ, বিশ্বাস। এর বিপরীতে দুনিয়ার টেরর।

এবং আপনারা জানেন, লাভ ইজ এন এক্ট, এইটা একশন নির্ভর। আপনারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে ভালবাসতে হবে।

এবং ভালোবাসার জন্য ক্ষেত্র বিশেষে স্যাক্রিফাইস করতে হবে। স্যাক্রিফাইস ছাড়া ভালোবাসা হচ্ছে চুরির মত, নাসিম তালেবের বক্তব্যের লগে আমি সহমত, এবং এইটাতেও সহমত, কোন জিনিশ আপনি কত লাভ করেন এর পরিমাপ হইল এর জন্য কী স্যাক্রিফাইস করতে পারেন বা কী রিস্ক নিতে পারেন।

আন্তইন ডি সেইন্ট জুপেরির দ্য লিটল প্রিন্সে, একবার লিটল প্রিন্স গোলাপ ফুলের বাগানের সামনে আসে। গোলাপ ফুলেরা কয়, দেখো আমরা কত সুন্দর ইত্যাদি। লিটল প্রিন্স একসময় বলে, তোমরা সুন্দর, কিন্তু এম্পটি, কারণ তোমাদের কেউ ভালোবাসে নাই।

তখন লিটল প্রিন্স একটা সাইকোলজিক্যাল ইনসাইট সামনে নিয়া আসে। সে তার গ্রহে থাকা তার ফুলটার কথা বলে। সে বলে, ওইটা আমার ফুল, আমার জন্য স্পেশাল, কারণ, আমি ওর পেছনে এফোর্ট দিছি। আমি তারে পানি দিছি, আগাছা পরিষ্কার করছি, রাতে ঢেকে রাখছি। এই এফোর্টগুলাই তারে আমার কাছে স্পেশাল করছে।

মানব সম্পর্ক বিষয়ে একজন মহাবিজ্ঞ ছিলেন জুপেরী। তিনি ধরতে পারছেন, কোন সম্পর্ক স্পেশাল হয় এইটার পেছনে দেয়া এফোর্টের কারণে।

একটা ডার্ক রিসার্চ থেকে জানছিলাম, যেসব নবজাতক হত্যা হয় বিকলাঙ্গতার কারণে, অর্থাৎ বিকলাঙ্গ হইয়া জন্ম নিছে তাই মা বাপ মেরে ফেলেন, এসব ক্ষেত্রে সন্তান যদি কয়েক বছর রাইখা দেন, পরে আর তারা মারেন না। কেন পরে মারতে পারেন না? মায়া জন্মায়। মায়া জন্মায় কেন? পেছনে দেয়া এফোর্টের কারণে।

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

×
গুরুত্বপূর্ণ
Scroll to Top
বই মডেলিং