যখন কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পক্ষপাতমূলক বা ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয় তাকে প্রোপাগান্ডা বলা হয়। প্রপাগান্ডার মূল লক্ষ্য থাকে মানুষকে ঐ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে টেনে না তথা তাদের সমর্থন লাভ।
প্রোপাগান্ডা ছড়াতে আর্টও ব্যবহার করা হয়। যেমন, লিফলেটে আঁকা বিভিন্ন ধরনের ছবি ও লেখা।
ছবিগুলি ভিজুয়ালি বুঝিয়ে দেয় যা বুঝাতে চাচ্ছেন প্রোপাগান্ডিস্টেরা। ছবি খুবই পাওয়ারফুল। কারণ যারা লেখা পড়তে জানেন না তারাও ছবিটি দেখে ধারণাটি বুঝতে পারেন।
বিশ শতকের ( বিশ শতক হলো ১৯০১-২০০০) প্রথম দিকে আগে প্রোপাগান্ডা অর্থ নেগেটিভ ছিল না, ছিল নিউট্রাল, কোন উদ্দেশ্য স্যামনে রেখে তথ্য পরিবেশন। পরে এই শতকেই প্রোপাগান্ডা শব্দটির নেগেটিভ অর্থায়ন হয়েছে।
প্রোপাগান্ডা লিফলেট বা কাজটি অনেক দিন পরে দেখলে প্রায়ই দেখা যায় যে, এতোদিনে ঐ প্রেক্ষাপট, রাজনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন হয়েছে। কাজটিতে কেবল বাকি থাকে শিল্পীর কল্পণাশক্তি ও কারিগরি ক্ষমতার প্রকাশ। থাকে তার গল্প নির্মানের বা বাস্তবের সাথে সম্পর্কিত করার দক্ষতা।
সময়ের পরিবর্তনে তাই শিল্পই টিকে থাকে প্রোপাগান্ডা উদ্দেশ্যটি হারিয়ে গেলেও।
প্রোপাগান্ডা পোস্টারগুলি আবার হিউম্যান সাইকোলজি ও তাকে প্রভাবিত করার কৌশল দেখার এক ভালো মাধ্যম। পারসুয়েশনের স্টাডিতে তাই প্রোপাগান্ডা লিফলেটগুলি এক অসাধারণ রিসোর্স।
নিচের ছবিগুলি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে, ১৯৪২ সালের শেষের দিকে ভারত থেকে সংগ্রহ করেছিলেন একজন ব্রিটিশ যোদ্ধা। এগুলি ছড়ানো হয়েছিল জাপানের পক্ষ থেকে। যিনি এগুলি সংগ্রহ করেছিলেন তার নাতির মাধ্যমে ছবিগুলি আমি পেয়েছি। এগুলি এয়ারক্রাফটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হতো সাইকোলজিক্যাল ওয়ারফেয়ারের অংশ হিসেবে।
প্রোপাগান্ডা লিফলেট হলেও এগুলি মূল্যবান ঐতিহাসিক দলিল।
মজার ব্যাপার দেখেন, শান্তিময় স্বর্গ লেখাটির নিচে যে শিশুটির ছবি আছে তার মাথায় টুপি, অর্থাৎ সে মুসলমান।
এই ছবিতে মসলিন তৈরীকারকদের আঙুল কাটার কথা বলা হয়েছে। পেছনে তাঁতের ছবিও আছে। মসলিনের ইতিহাস পড়তে গিয়ে আমি এমন তথ্য পেয়েছিলাম যে অনেক সময় তাঁতিদের আঙুল কাটা হতো।
কোন অঞ্চল থেকে এগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল তা জানা যায় নি। কোন লিফলেটেই হিন্দু ধর্মীয় দেবদেবী, বা এরকম কিছু দেখা যাচ্ছে না।